বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জ্যেষ্ঠ পুত্র মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব শহীদ শেখ কামালের ৭২তম জন্মবার্ষিকী আজ।
১৯৪৯ সালের ৫ আগস্ট গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় জন্মগ্রহণ করেন তিনি। ভাইবোনের মধ্যে তিনি ছিলেন দ্বিতীয়। শেখ কামাল শাহীন স্কুল থেকে এসএসসি এবং ঢাকা কলেজ থেকে এইচএসসি পাশ করেন। এছাড়া তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগ থেকে বিএ (অনার্স) পাস করেন। বাংলাদেশের শিল্প, সাহিত্য, সংস্কৃতি অঙ্গনে শিক্ষার অন্যতম উৎসবমুখ ছায়ানটের সেতারবাদন বিভাগের ছাত্রও ছিলেন শেখ কামাল।
মাত্র ২৬ বছর বয়সে শাহাদত বরণ করেন শেখ কামাল। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট কালরাতে বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারী ঘৃণ্য শত্রুদের বর্বরোচিত হত্যাযজ্ঞের শিকার হয়ে শাহাদাতবরণ করেন তিনি। রক্তাক্ত ১৫ আগস্টে শেখ কামালই প্রথম শহিদ হন।
কামালের শৈশবের স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে বঙ্গবন্ধু তাঁর ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’র ২০৯ পৃষ্ঠায় লিখেছেন ‘একদিন সকালে আমি ও রেণু বিছানায় বসে গল্প করছিলাম। হাচু (শেখ হাসিনা) ও কামাল নিচে খেলছিল। হাচু মাঝে মাঝে খেলা ফেলে আমার কাছে আসে আর ‘আব্বা’ ‘আব্বা’ বলে ডাকে। কামাল চেয়ে থাকে। একসময় কামাল হাসিনাকে বলছে, ‘হাচু আপা, হাচু আপা, তোমার আব্বাকে আমি একটু আব্বা বলি?’ আমি আর রেণু দু’জনেই শুনলাম। আস্তে আস্তে বিছানা থেকে উঠে গিয়ে ওকে কোলে নিয়ে বললাম, ‘আমি তো তোমারও আব্বা।‘
শেখ কামাল ছিলেন বাংলাদেশের আধুনিক ক্রীড়া ও সংস্কৃতি আন্দোলনের অন্যতম পথিকৃৎ। মহান মুক্তিযুদ্ধ, ছাত্ররাজনীতি, সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড, খেলার মাঠ থেকে নাটকের মঞ্চ -সর্বত্র ছিল তার উজ্জ্বল উপস্থিতি।
শেখ কামালের অকালমৃত্যুতে দেশের ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রে তো বটেই, রাজনীতিতেও এক অসামান্য ও অপূরণীয় ক্ষতি হয়েছে। আবাহনী ক্রীড়া চক্র প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে দেশে আধুনিক ফুটবলের উন্মেষ ঘটিয়েছিলেন শেখ কামাল।