fbpx

ভোজ্যতেলের দাম কমানোর আহ্বান ক্যাবের

Pinterest LinkedIn Tumblr +
Advertisement

আন্তর্জাতিক বাজারে ভোজ্যতেলের দাম ক্রমাগত কমার কথা উল্লেখ করে দেশেও এর দাম সমন্বয়ের আহ্বান জানিয়েছে কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব)।

শনিবার (১৬ জুলাই) এক বিবৃতিতে সংগঠনটি এ আহ্বান জানিয়েছে।

বিবৃতিতে বলা হয়, দেশে ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন দাম বাড়াতে যতটুকু আগ্রহী, দাম কমলে কমাতে তেমন আগ্রহী না হওয়ার কারণে ভোজ্যতেলের বাজারে নৈরাজ্যকর পরিস্থিতি। যেখানে আন্তর্জাতিক বাজারে দাম বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে দেশীয় বাজারে ভোজ্যতেলের দাম বাড়িয়ে দেন আমদানিকারকরা। কিন্তু আন্তর্জাতিক বাজারে দাম কমলে দীর্ঘদিনেও দেশীয় বাজারে পণ্যটির দাম সমন্বয় হয় না।

আবার আন্তর্জাতিক বাজারে দাম বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে দেশীয় বাজারে দাম বাড়ে। কিন্তু, দাম কমলে ব্যবসায়ীদের উল্টো সুর বেশি দামে কেনা বা বুকিং রেট বেশিসহ নানা অজুহাত। আন্তর্জাতিক বাজারে ক্রমাগতভাবে দাম কমার পরও দেশে ভোজ্যতেলের দাম সমন্বয়ের বিষয়ে বাণিজ্যমন্ত্রী একাধিকবার আশ্বাস দিলেও সে আশ্বাসের বাস্তবায়ন হয়নি। একইসঙ্গে ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন কি শুধুমাত্র ব্যবসায়ীদের স্বার্থে কাজ করছে? এই কমিশনের একপক্ষীয় কাজ করলে তা আইনের বরখেলাপ এবং বিষয়টি দেশের ভোক্তা স্বার্থের জন্য মারাত্মক প্রতিবন্ধক।

বিবৃতিতে ক্যাবের সহ-সভাপতি নাজের হোসাইন বলেন, ‘যখন বিশ্ববাজারে ভোজ্যতেলের দাম বাড়তি ছিল, তখন পণ্যটি আমদানিতে সরকারের পক্ষ থেকে ভ্যাট প্রত্যাহার ছাড়াও ভোজ্যতেল আমদানিতে ভ্যাট ছাড়, এলসি কমিশন ও এলসি মার্জিন প্রত্যাহারসহ বিভিন্ন উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। আর ওই সুবিধা নিয়ে আমদানিকারকরা তেল দেশের বাজারে আসলে দাম কমার কথা ছিল। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে তার বিপরীত ঘটেছে এবং ভোক্তারা তার কোনো সুফল পায়নি। বিশ্ববাজারে তেলের দাম কমেছে, দেশে তার বিপরীতে বাড়ানো হচ্ছে? আবার ভোজ্যতেল ব্যবসায়ীদের উল্টো সুর, ভোজ্যতেলের এফওবি দাম কমলেও বৈশ্বিক জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধি, দেশে বিদ্যুতের দাম বেড়ে যাওয়া এবং ডলারের উচ্চমূল্যসহ নানা ভৌতিক কারণে দাম আগের অবস্থানে ফিরছে না বলে দাবি করেন। যা ব্যবসায় সুশাসন, ব্যবসায়িক নীতি নৈতিকতাকেও প্রশ্নের মুখে ফেলে দিচ্ছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘দাম বাড়ানোর বিষয়টি পর্যালোচনা করে দেখা যায়, গত বছরের অক্টোবর থেকে চলতি বছরের জুন পর্যন্ত ভোজ্যতেলের দাম পাঁচ বার ওঠানামা করেছে। এর মধ্যে তিন দফায় দাম বাড়ানো হয়েছে। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, আন্তর্জাতিক বাজারে দামবৃদ্ধিসহ বিভিন্ন কারসাজিতে অক্টোবরের শেষ দিক থেকে বেসামাল হয় ভোজ্যতেলের বাজার। ফলে অক্টোবরে খোলা সয়াবিন প্রতি লিটার ১৩৬ টাকা, বোতলজাত সয়াবিন লিটার ১৬০ টাকা বেঁধে দেওয়া হয়। কিন্তু ফেব্রুয়ারিতে প্রতি লিটার ২১০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হয়। পরে সরকারের পক্ষ থেকে ৭ ফেব্রুয়ারি লিটারে ৮ টাকা বাড়িয়ে নতুন মূল্য নির্ধারণ করা হয়। সে সময় প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিন ১৬৮ টাকা নির্ধারণ করা হয়। পাশাপাশি খোলা সয়াবিন ১৪৩ টাকা নির্ধারণ করা হয়।’

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, গত ৫ মে দেশে ভোজ্যতেলের দাম সরকার পুনরায় নির্ধারণ করেছিল। ওই সময়ে সয়াবিনের দাম লিটারপ্রতি রেকর্ড ৩৮ টাকা বাড়ানো হয়েছিল। এরপর ৯ জুন কোনো কারণ ছাড়াই মিল পর্যায়ে ভোজ্যতেলের নতুন দাম নির্ধারণ করা হয়। এর মধ্যে এক লিটার খোলা সয়াবিন তেলের দাম মিলগেটে ১৮০ টাকা, পরিবেশক পর্যায়ে ১৮২ টাকা ও সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য ১৮৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়। এ ছাড়া এক লিটারের বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম মিলগেটে ১৯৫ টাকা, পরিবেশক পর্যায়ে ১৯৯ ও সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য ২০৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়।

এক লিটারের খোলা পাম অয়েলের (সুপার) দাম মিলগেটে ১৫৩ টাকা, পরিবেশক পর্যায়ে ১৫৫ ও সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য ১৫৮ টাকা করা হয়। এক্ষেত্রে সয়াবিনের দাম বাড়ানো হয়েছে লিটারপ্রতি ৫-৭ টাকা। আন্তর্জাতিক বাজারে তিন মাসের ব্যবধানে বিশ্ববাজারে প্রতি টন সয়াবিন তেলের দাম ২০০-৪৯০ ডলার কমলেও দেশে তার বিপরীতে ব্যবসায়ীরা বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে বৈঠক করে এক মাসে দুদফায় প্রতি লিটার সয়াবিনে দাম বাড়িয়েছেন ৫১ টাকা।

Advertisement
Share.

Leave A Reply