‘থিয়েটারের নতুন বার্তা বিধ্বস্ত পৃথিবীর জন্য’ স্লোগান নিয়ে আজ শুক্রবার (২৭ জানুয়ারি) থেকে শুরু হচ্ছে ‘আরণ্যক’ নাট্যদলের ৫০ বছর পূর্তি উদযাপন। আর এই উদযাপন হতে যাচ্ছে ৮ দিনের নাট্যোৎসব দিয়ে। উৎসব চলবে ৩ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত।
১৯৭২ সালের ১ ফেব্রুয়ারি স্বাধীন বাংলাদেশে নাট্যচর্চায় যাত্রা শুরু করে আরণ্যক। ওই বছরের ২০ ফেব্রুয়ারি শহীদ মুনীর চৌধুরীর ‘কবর’ নাটকটি দিয়ে প্রথম মঞ্চে আসে তারা। সেই নাটকটির প্রথম মঞ্চায়নে অভিনয় করেছিলেন প্রয়াত সুভাষ দত্ত, আলী যাকের ও ইনামুল হক। নির্দেশনা দিয়েছিলেন মামুনুর রশীদ।
আরণ্যকের পথচলা ‘নাটক শুধু বিনোদন নয়, শ্রেণিসংগ্রামের সুতীক্ষ্ণ হাতিয়ার’ স্লোগান নিয়ে আট দিনের উৎসবে আরণ্যকের নতুন ও পুরনো নয়টি নাটক মঞ্চস্থ হবে। আরও থাকবে সেমিনার, যন্ত্রসংগীত, আদিবাসী সংগীত, প্রকাশনা উৎসবসহ নানান আয়োজন।
একক কোনো দলের উৎসবে প্রদর্শিত নয়টি নাটকই নিজেদের প্রযোজনা, এটাও ঢাকার নাট্যচর্চায় নতুন সংযোজন। উৎসবে মঞ্চস্থ হবে ‘নানকার পালা’, ‘ওরা কদম আলী’, ‘ইবলিশ’, ‘সংক্রান্তি’, ‘ময়ূর সিংহাসন’, ‘রাজনেত্র’, ‘কবর’, ‘রাঢ়াঙ’, ‘কহে ফেসবুক’।
শুক্রবার বিকেলে শিল্পকলা একাডেমির নন্দন মঞ্চে উৎসব উদ্বোধন করবেন চাকমা পালাগানের শিল্পী দ্বীনো কুমার চাকমা।
ফজলুর রহমান বাবু, চঞ্চল চৌধুরী, আখম হাসান, শামীম জানান, জয়রাজ, তমালিকা কর্মকারসহ অনেক নাট্য ব্যক্তি, অভিনেতা-অভিনেত্রী তৈরি করেছে আরণ্যক। তারা সবাই উৎসবের বিভিন্ন নাটকে অভিনয় করবেন।
উৎসব সূচি
উদ্বোধনী দিন সন্ধ্যা ৭টায় জাতীয় নাট্যশালা মিলনায়তনে হবে মামুনুর রশীদ রচিত ও হারুন রশীদ নির্দেশিত নাটক ‘ওরা কদম আলী’।
২৮ জানুয়ারি সকাল ১১টায় হবে প্রকাশনা উৎসব। এতে তিনটি বইয়ের প্রকাশনা উৎসব হবে, সাথে থাকবে সেমিনার। বই তিনটি হলো- মামুনুর রশীদের নাটকসমগ্র ৪, হারুন রশীদের পাঁচটি নাটক এবং অপু মেহেদীর আরণ্যকের নাট্যচর্যা: সৃজনে সংগ্রামে নন্দনে।
এছাড়া সেমিনারে প্রবন্ধ পাঠ করবেন অংশুমান ভৌমিক। সেদিন সন্ধ্যা ৭টায় নাট্যশালায় মঞ্চস্থ হবে মামুনুর রশীদ রচিত ও নির্দেশিত নাটক ‘ইবলিশ’।
২৯ জানুয়ারি নাট্যশালার লবিতে থাকবে যন্ত্রসংগীত, বেহালা বাদন এবং সন্ধ্যা ৭টায় মঞ্চস্থ হবে মান্নান হীরা রচিত ও শাহ আলম দুলাল নির্দেশিত নাটক ‘ময়ূর সিংহাসন’।
৩০ জানুয়ারি নাট্যশালার লবিতে থাকবে যন্ত্রসংগীত সরোদ বাদন এবং সন্ধ্যা ৭টায় নাট্যশালায় হারুন রশীদ রচিত ও নির্দেশিত নাটক ‘রাজনেত্র’ মঞ্চস্থ হবে।
৩১ জানুয়ারি বিকেল ৫টায় লবিতে থাকবে আদিবাসী সংগীত এবং সন্ধ্যা ৭টায় নাট্যশালায় মঞ্চস্থ হবে মামুনুর রশীদ রচিত ও নির্দেশিত ‘রাঢ়াঙ’।
১ ফেব্রুয়ারি বিকাল ৫টায় লবিতে থাকবে লোকসংগীত এবং সন্ধ্যা ৭টায় নাট্যশালা মিলনায়তনে মঞ্চস্থ হবে ‘নানকার পালা’।
২ ফেব্রুয়ারি বিকেল ৫টায় লবিতে থাকবে যন্ত্রসংগীত বাঁশি এবং সন্ধ্যা ৭টায় মিলনায়তনে মঞ্চস্থ হবে মামুনুর রশীদ রচিত ও নির্দেশিত ‘কহে ফেসবুক’।
৩ ফেব্রুয়ারি সকাল ১১টায় নাট্যশালার সেমিনার কক্ষে থাকবে ‘পঞ্চাশে আরণ্যক: অভিঘাতের অভিজ্ঞান’ বিষয়ক সেমিনার। এতে প্রবন্ধ উপস্থাপন করবেন অধ্যাপক রতন সিদ্দিকী। বিকেল ৫টায় নাট্যশালায় মঞ্চস্থ হবে মুনীর চৌধুরী রচিত এবং হাশিম মাসুদের নির্দেশনায় ‘কবর’। সন্ধ্যা ৭টায় একই মিলনায়তনে মঞ্চস্থ হবে ‘মামুনুর রশীদ রচিত ও নির্দেশিত নাটক ‘সংক্রান্তি’। রাত ৯টায় হবে উৎসব সমাপনী অনুষ্ঠান।