তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাসান মাহমুদ জানিয়েছেন, বাংলাদেশে আল-জাজিরা বন্ধের বিষয়ে হাইকোর্টের নির্দেশ অনুযায়ীই কাজ করা হবে।
শুক্রবার (১২ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় চট্টগ্রামের দেওয়ানবাজারে নিজ বাসভবনে সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময়ের সময় তিনি এসব কথা বলেন। এর আগে বৃহষ্পতিবার ভারত থেকে পাঁচদিনের সফর শেষ করে ঢাকায় ফিরে পরদিনই চট্টগ্রামে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন তথ্যমন্ত্রী।
১ ফেব্রুয়ারি রাতে আল-জাজিরায় প্রচারিত প্রতিবেদন ‘অল দ্যা প্রাইম মিনিস্টার মেন’ সম্পর্কে প্রশ্নের জবাবে হাসান মাহমুদ বলেন, সরকার চাইলে দেশে আল-জাজিরার সম্প্রচার বন্ধ রাখতে পারতো। ভারত সহ অন্যান্য অনেক দেশে এর সম্প্রচার বন্ধ করা হয়েছিল এবং ছয়-সাতটি দেশে এখনো বন্ধ রয়েছে। কিন্তু, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যেহেতু গণমাধ্যমের অবাধ স্বাধীনতায় বিশ্বাস করেন, তাই তিনি এর সম্প্রচার এখনো বন্ধ করেননি।
তিনি এ বিষয়ে আরো বলেন, তবে স্বাধীনতা মানে এই নয় যে, ভুল, মিথ্যা ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যমূলক সংবাদ পরিবেশন করা। আল-জাজিরার মিথ্যা বানোয়াট রিপোর্ট নানাভাবে ব্যক্তিগত আক্রোশের বশবর্তী হয়ে প্রকাশ করা হয়েছে।
সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে এসময় তথ্যমন্ত্রী করোনাভাইরাসের টিকা বিষয়ে বিএনপির ভূমিকাকে “গাধা জল ঘোলা করে খায়” মন্তব্য করে বলেন, বিএনপি নেতারা প্রথমে বলেছিল সরকার করোনা ভ্যাকসিন আনতে পারবে না। কিন্তু, যখন ভ্যাকসিন আসলো তখন তারা বললেন এই ভ্যাকসিন নিলে কোন কাজ হবেনা। তবে, দায়িত্বহীন অনেক কথা বললেও শেষ পর্যন্ত বিএনপির অনেক নেতাই করোনা ভ্যাকসিন নিয়েছেন বলে তাদেরকে সাধুবাদও জানান তিনি।
জিয়াউর রহমানের মুক্তিযুদ্ধের খেতাব বাতিলের বিষয়ে এসময় হাসান মাহমুদ সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের সময় জিয়াউর রহমানের ভূমিকা আসলে কি ছিল সেটি নিয়ে নানা প্রশ্ন রয়েছে। মুক্তিযোদ্ধার ছদ্মবেশে তিনি মূলত পাকিস্তানের সহযোগী হিসেবে কাজ করেছিলেন। তার খেতাব বাতিলের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ততো হয়নি এখনো। এটা নিয়ে জামুকাতে আলোচনা হয়েছে মাত্র।’
এসময় তিনি চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের নির্বাচনসহ অন্যান্য যেসব ইস্যুতে বিএনপি বিক্ষোভ সমাবেশের ডাক দিয়েছেন তা হাস্যকর বলে সাংবাদিকদের বলেন। তিনি বলেন, ‘দুঃখজনক হলেও সত্য বিএনপি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছে কিন্তু কার্যত তারা মাঠে ছিল না। ভোটের দিন তাদের কাউকে দেখা যায়নি।’ বিএনপির কাছে প্রশ্ন রেখে তিনি এসময় বলেন, ‘চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মতো একটা গুরুত্বপূর্ণ নির্বাচনে বিএনপির মহাসচিব কি চট্টগ্রাম এসেছিল? তিনি কি নির্বাচনী প্রচারণা চালিয়েছিলেন? একটাও মিটিং করেছেন? অথচ তাদেরতো প্রচারণা চালাতে কোন অসুবিধা ছিল না?’
চট্টগ্রাম শহরে বিএনপির পরাজিত হওয়ার কারণ হিসেবে তথ্যমন্ত্রী বিএনপিকেই দায়ী করে বলেন, ‘বিএনপি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছে, কিন্তু মাঠে ছিল না, এটি তাদের ব্যর্থতা এবং দলীয় দুর্বলতা। এ কারণেই এই শহরে তারা নির্বাচনে পরাজিত হয়েছে।’