যুক্তরাজ্যে নিযুক্ত রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত আন্দ্রেই কেলিন বলেছেন, তিনি বিশ্বাস করেন, তাঁর দেশ ইউক্রেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধে সুনির্দিষ্ট কৌশলগত (ট্যাকটিক্যাল) পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহার করবে না। বিবিসিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি আরও বলেন, রাশিয়ার সামরিক বিধি অনুযায়ী, ইউক্রেনের মতো সংঘাতের ক্ষেত্রে এসব অস্ত্র ব্যবহার করা হয় না। রাষ্ট্রের অস্তিত্ব হুমকির মুখে পড়লেই কেবল তা ব্যবহার করা হয়।
কৌশলগত (স্ট্র্যাটেজিক) পারমাণবিক অস্ত্রের তুলনায় সুনির্দিষ্ট কৌশলগত (ট্যাকটিক্যাল) পারমাণবিক অস্ত্র স্বল্প দূরত্বে ব্যবহার করা হয়। স্ট্র্যাটেজিক পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহার করা হয় অপেক্ষাকৃত দীর্ঘ দূরত্বে। সুনির্দিষ্ট কৌশলগত পারমাণবিক অস্ত্র মূলত সর্বাত্মক পারমাণবিক যুদ্ধ শুরু হওয়ার আশঙ্কা তৈরি করে। যুদ্ধক্ষেত্রে ব্যবহৃত ক্ষেপণাস্ত্র, ছোট বোমাসহ বিভিন্ন অস্ত্র সুনির্দিষ্ট কৌশলগত পারমাণবিক অস্ত্রের ধরনের মধ্যে পড়ে। রাশিয়ার কাছে প্রায় ২০০ সুনির্দিষ্ট কৌশলগত পারমাণবিক অস্ত্র আছে বলে ধারণা করা হয়ে থাকে।
চলতি বছরের ফেব্রুয়ারির শেষ দিকে ইউক্রেনে সামরিক অভিযান শুরুর পরপরই পারমাণবিক বাহিনীকে উচ্চ সতর্কতায় রেখেছিলেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। তার এ পদক্ষেপকে তখন হুমকি হিসেবে দেখা হচ্ছিল। এজন্য পশ্চিমা বিশ্ব ও ন্যাটোকে দায়ী করেছিলেন পুতিন।
সাক্ষাৎকারে রুশ রাষ্ট্রদূত আন্দ্রেই কেলিনের কাছে জানতে চাওয়া হয়, রাশিয়া কেন এভাবে যুদ্ধ করছে, যুদ্ধাপরাধ করছে? জবাবে তিনি বলেন, ‘বুচা শহরের মেয়র প্রাথমিক বিবৃতিতে নিশ্চিত করেছেন, রুশ সেনারা সরে গেছেন। সবকিছু শান্ত। শহরটি পরিষ্কার ও স্বাভাবিক অবস্থায় আছে। কিছুই ঘটছে না, কেউ সড়কে নেই।’
বিবিসির উপস্থাপক ক্লিভ মাইরি আবার প্রশ্ন করেন, তাহলে এগুলো সব বানোয়াট ছিল? সব মিথ্যা? সব আলামত সাজানো ছিল?
জবাবে রুশ রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘বুচা শহরে যুদ্ধাপরাধের যে অভিযোগ তোলা হয়েছে, তা বানোয়াট। আমাদের দৃষ্টিতে এটি সাজানো। আলোচনা ব্যাহত করার লক্ষ্যে এমন অভিযোগ তোলা হয়েছে।’
এর আগেও রাশিয়া একই ধরনের কথা বলেছিল। রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ বলেছিলেন, বুচা শহর থেকে রুশ বাহিনী সরে যাওয়ার পর মৃতদেহ উদ্ধারের যে ফুটেজ প্রকাশ করা হয়েছে, তা সাজানো।