দরজায় কড়া নাড়ছে মুসলিমদের প্রধান ধর্মীয় অনুষ্ঠান ঈদুল ফিতর। দীর্ঘ এক মাস রোজার রাখার পর এই উৎসবকে সামনে রেখে মানুষ রাজধানীর কাঁচাবাজারে ভিড় জমাচ্ছে। তাদের প্রয়োজনীয় বাজারসদাই সেরে নিচ্ছে। তবে ব্যবসায়ীরা এর সুযোগও লুফে নিচ্ছে।
শুক্রবার (৭ মে) রাজধানীর কাঁচাবাজারগুলো ঘুরে এমন চিত্রই দেখা গেছে।
প্রতিবারের ন্যায় এবারও মসলার বাড়তি দাম হাঁকাচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। এলাচি, জিরা, দারুচিনি ও লবঙ্গের দাম বেড়েছে মানভেদে কেজিপ্রতি সর্বনিম্ন ৫০ থেকে সর্বোচ্চ ৩০০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে বলেও জানান তারা।
বাজারে প্রতি কেজি এলাচি ২ হাজার ৫০০ থেকে ৩ হাজার ৫০০ টাকা, জিরা ৩৪০ থেকে ৩৬০ টাকা, দারুচিনি ৪০০-৪৫০ টাকা, লবঙ্গ ৯০০ থেকে ১ হাজার ১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
এছাড়া আলুবোখারা ৪৪০ থেকে ৬০০ টাকা, জয়ত্রী ২ হাজার ৪২০ থেকে ৩ হাজার ২০০ টাকা এবং জায়ফল বিক্রি হচ্ছে ৭০০ থেকে ১ হাজার ৫০০ টাকায়।
ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, রোজার আগেও প্রতি কেজি আলুবোখারার দাম যেখানে ২৫০ থেকে ২৮০ টাকা ছিল, এখন তা ৪৪০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া জয়ত্রী ৩ হাজার ২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। কিছুদিন আগেও এই মসলার প্রতি কেজি দর আড়াই হাজার টাকা ছিল।
অন্যদিকে ঈদে বিশেষ চাহিদা থাকে সেমাইয়ের। এটি না হলে ঈদ যেনো অপূর্ণ হয়ে যায়। বিভিন্ন ধরনের সেমাইয়ের দামও গত বছরের চেয়ে এবার কেজিতে ২০-৩০ টাকা বেশি।
বাজারে প্রতি কেজি খোলা লাচ্ছা সেমাই ১৪০ থেকে ১৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, আর লম্বা সেমাইয়ের (বাংলা সেমাই) দাম ৬০ থেকে ৭০ টাকা কেজি। এছাড়া বিভিন্ন কোম্পানির ২০০ গ্রামের লাচ্ছা সেমাই বিক্রি হচ্ছে ৩০ টাকায়।
গতবারের চেয়ে এবার বেশি দামে সেমাই কিনছেন বলে অভিযোগ ক্রেতাদের। সব পণ্যের দাম এভাবে বাড়তে থাকায় তাদের মতো মানুষ খুব চাপে আছেন বলে জানান তারা।
অন্যদিকে বেড়েছে ব্রয়লার মুরগির দামও। গেল সপ্তাহে যেখানে ১৩০ টাকা কেজিতে মুরগি বিক্রি হচ্ছিল, শুক্তবার বাজারে তা ১৫০ থেকে ১৬০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। পাশাপাশি দেশি মুরগি ও সোনালিকার (কক) দামও বেড়েছে।
বাজারে এখন সোনালিকা মুরগি ২৮০ থেকে ৩০০ টাকা এবং দেশি মুরগি ৫৮০-৬০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, ঈদের আগে চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় মুরগির দাম বাড়ছে। একইভাবে মুরগি ও মাংস রান্নার প্রয়োজনীয় উপাদান মসলারও দাম বেড়েছে।
অন্যদিকে বাজারে খোলা চিনির দামও কেজিতে দুই টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৭০ টাকায়।
এবারের রমজানে সিটি করপোরেশন গরুর মাংসের দাম নির্ধারণ করে দেয়নি। ইচ্ছেমতো দাম হাকাচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। দোকানে রোজার শুরুতে প্রতি কেজি গরুর মাংস ৫৮০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। এখন তার দাম বেড়ে ৬০০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। ঈদের আগে দাম আরও বাড়বে বলেও মাংস ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে।