fbpx

ঈদের পর ‘চন্দ্রাবতী কথা’

Pinterest LinkedIn Tumblr +
Advertisement

বাংলাদেশের প্রথম নারী কবি-চন্দ্রাবতীর জীবনের কাহিনী নিয়ে ময়মনসিংহ গীতিকা অবলম্বনে নির্মিত এন রাশেদ চৌধুরী পরিচালিত পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র ‘চন্দ্রাবতী কথা’ সেন্সর বোর্ডের ছাড়পত্র পেয়েছে।

সেন্সর সনদের জন্য আবেদনের দীর্ঘ একবছর পর চলচ্চিত্রটি সেন্সর ছাড়পত্র লাভ করল ২৮ ফেব্রুয়ারি।

নির্মাতা জানান, বাংলাদেশ সরকারের জাতীয় চলচ্চিত্র অনুদানে নির্মিত ছবিটি নির্মাণের পরপরই ২০১৭ সালের শেষে তথ্য মন্ত্রণালয়ের অনুদান কমিটির চূড়ান্ত অনুমোদন লাভ করে।

২০১৫ সালে জাতীয় চলচ্চিত্র অনুদান প্রাপ্ত ছবিটির নির্মাণ শেষ হয় ২০১৯ এর অক্টোবর মাসে। একই বছর চলচ্চিত্রটির ওয়ার্ল্ড প্রিমিয়ার (বিশ্ব প্রিমিয়ার প্রদর্শনী) অনুষ্ঠিত হয় ৮ থেকে ১৩ নভেম্বর, ২০১৯ এ অনুষ্ঠিত ২৫ তম কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব (25th Kolkata International Film Festival -KIFF) এর রৌপ্য জয়ন্তী অধিবেশনে। উৎসবের ‘এশিয়ান সিলেক্ট’-নেটপ্যাক পুরস্কার (Asian Select-NETPAC AWARD) শীর্ষক প্রতিযোগীতা বিভাগে অংশ নেয় ছবিটি।

এছাড়াও ছবিটি ১৯ থেকে ২৩ নভেম্বর, ২০১৯-ইন্দোনেশিয়ার জাকার্তা শহরে অনুষ্ঠিত-১৪ তম জগজা-নেটপ্যাক এশিয়ান ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল (14th Jogja-NETPAC Asian Film Festival -JAFF) এ-বাংলা সিনেমার শতবর্ষ উপলক্ষ্যে আয়োজিত-ফোকাস অন হান্ড্রেড ইয়ার্স অব বেঙ্গলি সিনেমা শাখায় বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করে। এছাড়াও ছবিটি রাশিয়া ও ভারতের আরো দু’টো আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে আমন্ত্রিত ও প্রদর্শিত হয়।

ঈদের পর ‘চন্দ্রাবতী কথা’

ছবিটির একটি দৃশ্য। ছবি : নির্মাতা

বর্তমানে সিনেমাটি অস্ট্রেলিয়ার ব্রিসবেনে অনুষ্ঠিতব্য- এশিয়া প্যাসিফিক স্ক্রিন এওয়ার্ড-২০২০ এর-প্রতিযোগিতা বিভাগে বাংলাদেশের একমাত্র কাহিনীচিত্র হিসেবে পুরস্কারে অংশ নেবার জন্য নির্বাচিত হয়েছে। এশিয়া প্যাসিফিক অঞ্চলের সর্ববৃহৎ এ পুরস্কার আয়োজনে-প্রতিযোগীতা বিভাগে অংশ নিচ্ছে ৭০ টি দেশের দুইশতাধিক চলচ্চিত্রের মাঝ থেকে বাছাইকৃত নির্বাচিত স্বল্পদৈর্ঘ্য, প্রামাণ্যচিত্র, পূর্ণদৈর্ঘ্য কাহিনীচিত্র ও এনিমেশন চলচ্চিত্র।

বাংলা সাহিত্যের প্রথম নারীবাদী কবি চন্দ্রাবতীর লেখক হয়ে ওঠার বেদনা বিধূঁর কাহিনী অবলম্বণে চলচ্চিত্রটি নির্মাণ হয়েছে। ষোড়শ শতকের প্রেক্ষাপটে, ময়মনসিংহ গীতিকার কাহিনী অবলম্বনে নির্মিত চলচ্চিত্রটির চিত্রনাট্যও রচনা করেন রাশেদ চৌধুরী। এটি তাঁর প্রথম পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র।

২০১৬ থেকে ২০১৮-প্রায় দু-বছর সময়ে নানা ঋতুতে ময়মনসিংহ, কিশোরগঞ্জ, নেত্রকোণা, এগারো সিন্দুর জেলার বিভিন্ন লোকেশনে সিনেমাটির শুটিং অনুষ্ঠিত হয়। শুটিং শেষে বাংলাদেশ ও ভারতে ছবিটির নানা পর্বের পোস্ট প্রোডাকশন কাজ সম্পন্ন হয়।

সরকারি অনুদান ছাড়াও চলচ্চিত্রটি প্রযোজনায় এগিয়ে আসে বেঙ্গল ফাউন্ডেশনের সহযোগী সংস্থা বেঙ্গল ক্রিয়েশন্স।

ছবিটি পরিবেশনার সাথে যুক্ত হয়েছে বসুন্ধরা এলপি গ্যাস লিমিটেড।

আসন্ন ঈদ-উল ফিতর এর পরপরই ছবিটি সর্বসাধারণের জন্য প্রদর্শণে-প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি দিতে চান নির্মাতা।

ঈদের পর ‘চন্দ্রাবতী কথা’

ছবিটির একটি দৃশ্যে বর্ষণ। ছবি : নির্মাতা

‘চন্দ্রাবতী কথা’ চলচ্চিত্রের কেন্দ্রীয় চরিত্রে অভিনয় করেছেন দিলরুবা হোসেন দোয়েল। এছাড়াও এর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে অভিনয় করেছেন জয়ন্ত চট্টোপাধ্যায়, মিতা রহমান, কাজী নওশাবা আহমেদ, গাজী রাকায়েত, আরমান পারভেজ মুরাদ, জয়িতা মহলানবিশ, বর্ষণ, বলরাম কর্মকার সহ স্থানীয় থিয়েটারের অভিনয় শিল্পীবৃন্দ।

চন্দ্রাবতী কথা’ চলচ্চিত্রে স্থানীয় গ্রামবাসীদের সাথে অভিনয় ও গানে অংশ নেন পালাগান ও জারীগানের প্রথিতযশা শিল্পী-খোকন বয়াতী, হামিদ বয়াতী, লালমিয়া বয়াতী প্রমুখ।

ছবিটিতে একটি বিচ্ছেদী ভাটিয়ালী গানে কণ্ঠ দিয়েছেন তরুণ কণ্ঠশিল্পী-শংকর। এর চিত্রগ্রহণ করেছেন সাইয়ীদ কাশেফ শাহবাজী। শিল্প নির্দেশনায় ছিলেন তরুণ ঘোষ। ভারতীয় সম্পাদক শংখ ও সাউন্ড ডিজাইনার সুকান্ত মজুমদার ছবিটির সম্পাদনা ও শব্দ সংযোজনের কাজ করেন। পশ্চিমবঙ্গের প্রখ্যাত লোকসঙ্গীত শিল্পী, সুরকার সাত্যকি বন্দোপাধ্যায় ছবিটির সঙ্গীতায়োজনের কাজ করেন

ঈদের পর ‘চন্দ্রাবতী কথা’

নির্মাতা এন রাশেদ চৌধুরী। ছবি : ফেসবুক

বাংলাদেশ শর্ট ফিল্ম ফোরামের নির্বাহী সদস্য ও প্রাক্তন সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক-এন রাশেদ চৌধুরী- ২০০০ সালে ভাস্কর নভেরা আহমেদের জীবন ও কর্মের ওপর নির্মাণ করেন তার প্রথম প্রামাণ্য চলচ্চিত্র-‘ন-হন্যতে’। ২০০৩ সালে নির্মিত তার স্বল্পদৈর্ঘ্যের কাহিনীচিত্র-‘বিষ্মরণের নদী’ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে অংশ নেয়। এছাড়াও ২০০৬ থেকে ২০১০ অব্দি তিনি স্পেন প্রবাসী, খ্যাতনামা বাংলাদেশী চিত্রশিল্পি শহীদ কবিরের জীবন ও কর্মের ওপর নির্মাণ করেন তার আরেকটি প্রামান্য চলচ্চিত্র- নের যাত্রী’। রাশেদ ২০১৩ থেকে ২০১৮ পর্যন্ত বেঙ্গল ক্রিয়েশন্স এর নির্বাহী প্রযোজক হিসেবে-৭টি পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্রের নির্মাণে কাজ করেন। বর্তমানে রাশেদ জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের-চলচ্চিত্র ও টেলিভিশন বিভাগে -শিক্ষক হিসেবে কাজ করছেন।

Advertisement
Share.

Leave A Reply