পাখা না থাকলেও নাম তার উট পাখি। স্বচ্ছ কাঁচের মতো চোখ, উটের মতোই গড়ন। বিশাল দেহের অধিকারী উট পাখির চামড়া, মাংস ও পালকের চাহিদা আছে বিশ্ব বাজারে। তাই লাভজনক ব্যবসা হিসেবে বাণিজ্যিকভাবে উট পাখির খামার করে কর্মসংস্থান গড়ার প্রচুর সম্ভাবনা রয়েছে আমাদের দেশেও।
উট পাখি পূর্ণবয়স্ক হতে সময় নেয় প্রায় আড়াই বছর। পূর্ণবয়স্ক হবার পর তারা ডিম দেওয়া শুরু করে। বছরে ১০০টির মতো ডিম পাড়ে একেকটি উট পাখি। প্রতিটি ডিমের ওজন হয় এক থেকে দেড় কেজি পর্যন্ত।
উট পাখির মাংস খুবই সুস্বাদু। মুরগির মাংসের চেয়েও প্রোটিন সমৃদ্ধ এবং আয়রনে প্রায় দ্বিগুণ। আয়রনের পরিমাণ বেশি থাকায় উটপাখির মাংসে কোলেস্টেরল ও ফ্যাটের পরিমানও থাকে অনেক কম। উটপাখির বৃদ্ধিও বাড়ে ব্রয়লার মুরগির চেয়ে প্রায় তিনগুণ বেশি।
বাংলাদেশ প্রাণিসম্পদ গবেষণা ইনস্টিটিউটের পোল্ট্রি গবেষণা ও উন্নয়ন জোরদারকরণ প্রকল্পের পরিচালক ড. মো. সাজেদুল করিম সরকার বিবিএস বাংলাকে বলেন, ‘উট পাখির খাদ্য চাহিদার ৫০ শতাংশ পূরণ হয় ঘাস, সবজি ও লতাপাতা থেকে। তৃণভোজী বলে লালন পালন অপেক্ষাকৃত কম খরচে সম্ভব, তাই দেশেই উটপাখির খামার কর্মসংস্থানের নতুন এক মাত্রা তৈরির সম্ভাবনা রয়েছে। আমরা গবেষকরা আগ্রহী খামারিদের প্রশিক্ষণ ও প্রযুক্তিগত সহযোগিতা করবো।’
উটপাখি ৫০ থেকে ৭০ বছর উৎপাদনক্ষম থাকে এবং এরা ৮০ থেকে ১০০ বছর পর্যন্ত বাঁচে। এদের বৃদ্ধি ও উৎপাদন প্রক্রিয়া গরু-ছাগলের চেয়েও বেশি। পূর্ণবয়স্ক একটি উটপাখির মাংস প্রায় আড়াই মণ পর্যন্ত হয়। ফলে বাণিজ্যিকভাবে উটপাখির গরুর বিকল্প হবে বলে প্রত্যাশা বাংলাদেশ প্রাণিসম্পদ গবেষণা ইনস্টিটিউট।