করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের কারণে ব্যবসা-বাণিজ্যে বিরূপ প্রভাব পড়ায় আগামী ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত ঋণের টাকা ফেরত দিতে চান না ব্যবসায়ীরা। ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআই বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে পাঠানো এক চিঠিতে এই সুবিধা চেয়েছে।
এফবিসিসিআইয়ের বর্তমান সভাপতি জসিম উদ্দিন গত বুধবার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবিরকে দেওয়া এক চিঠিতে তিনি এ দাবি জানান।
এফবিসিসিআই বলছে, করোনায় আবারও ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় অধিকাংশ শিল্প ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ঋণের কিস্তি সময়মতো জমা দিতে পারছে না। এজন্য চলতি বছরও তারা ঋণের কিস্তি পরিশোধে ছাড় চায়। আর ঋণ পরিশোধ না করলেও ব্যাংক যাতে খেলাপি না করে, সেই সুবিধা আগামী ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত চালু রাখার অনুরোধ জানিয়েছেন এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি।
সংগঠনটির চিঠিতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের অর্থনীতিতে কোভিড-১৯–এর নেতিবাচক প্রভাব মোকাবিলায় অর্থনীতির বাস্তব সমস্যা অনুধাবন করে বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে সময়োপযোগী আর্থিক ও নীতিসহায়তা দেওয়া হয়েছে। এ কারণে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে কোভিভ-১৯–পরবর্তী ধকল সন্তোষজনকভাবে মোকাবিলা করার সুযোগের সৃষ্টি হয়েছে।
এফবিসিসিআই বর্তমান পরিস্থিতি ব্যাখ্যা করে জানিয়েছে, করোনা মহামারির দ্বিতীয় ঢেউয়ের কারণে দেশের ব্যবসা-বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক কার্যক্রমে বিরূপ প্রভাব বিদ্যমান রয়েছে। অধিকাংশ শিল্প ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান তাদের ঋণের কিস্তি সময়মতো পরিশোধ করতে পারছেন না। এ পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে দেওয়া সুবিধার মেয়াদ বৃদ্ধি করা না হলে অধিকাংশ ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান অনিচ্ছাকৃত খেলাপি গ্রাহকে পরিণত হবে। এতে ব্যাংকিং খাতসহ পুরো অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। এ জন্য দেশের শিল্প ও ব্যবসা-বাণিজ্যসংশ্লিষ্ট সব খাতের ঋণ বিরূপ, মানে শ্রেণীকরণ প্রক্রিয়া আগামী ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত স্থগিত রাখার জন্য দাবি জানিয়েছে এফবিসিসিআই।
উল্লেখ্য, করোনার কারণে ব্যবসায়ীদের ঋণ পরিশোধে ছাড় দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। ফলে আপাতত ঋণ শোধ না করলেও কেউ খেলাপি হিসেবে চিহ্নিত হচ্ছে না। তবে বর্তমানে এ গণসুবিধার ক্ষেত্রে কিছুটা পরিবর্তন এনেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। ফলে চলতি বছরের প্রথম তিন মাসেই ব্যাংকের খেলাপি ঋণের পরিমাণ প্রায় ৬ হাজার কোটি টাকা বেড়েছে। এজন্য খেলাপি ঋণ বেড়ে ৯৫ হাজার ৮৫ কোটি টাকায় দাঁড়িয়েছে, যা মোট ঋণের ৮ দশমিক শূন্য ৭ শতাংশ।