গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে আরও ৩৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে ঢাকাতেই মারা গেছেন ২৯ জন। এ নিয়ে দেশে ৬ হাজার ৫২৪ জন এ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা গেলেন। একই সময়ে আরো নতুন করে ২ হাজার ২৯২ জনের শরীরে নতুন করে ভাইরাসটি শনাক্ত করা গেছে। এ নিয়ে দেশে মোট ৪ লাখ ৫৬ হাজার ৪৩৮ জন ভাইরাসটিতে সংক্রমিত হলেন।
২৬ নভেম্বর বিকেলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
দেশের সবচেয়ে বড় ও জনবহুল শহর ঢাকায় শুরু থেকেই করোনার প্রভাব বেশি। দ্বিতীয় ধাক্কাতেও তেমনটাই লক্ষ্য করা যাচ্ছে। সংক্রমণের পাশাপাশি মৃতের সংখ্যাও ঢাকাতেই বেশি। টানা কয়েকদিন থেকেই সারাদেশে যতজন রোগী মারা যাচ্ছেন তার মধ্যে অর্ধেকের বেশি ঢাকায়। আর বিভাগওয়ারি হিসাবে এখন পর্যন্ত মৃত ৬ হাজার ৫২৪ জনের মধ্যে ৩ হাজার ৪৭৭ জনই ঢাকার বাসিন্দা, যা শতাংশের হিসাবে প্রায় ৫৩ দশমিক ৩০ শতাংশ। আর দ্বিতীয় সর্বোচ্চ মারা গেছেন চট্টগ্রাম বিভাগে। বিভাগটিতে এখন পর্যন্ত মারা গেছেন ১ হাজার ২৫০ জন, শতাংশের হিসাবে ১৯ দশমিক ১৬ শতাংশ।
অন্যদিকে সবচেয়ে কম মারা গেছেন ময়মনসিংহে, বিভাগটিতে এখন পর্যন্ত ১৩২ জন, শতাংশের হিসাবে ২ দশমিক ০২ শতাংশ। এছাড়াও অন্যান্য বিভাগের মধ্যে রাজশাহীতে মারা গেছেন ৪০০ জন (৬ দশমিক ১৩ শতাংশ), খুলনায় ৪৯০ জন (৭ দশমিক ৫১ শতাংশ), বরিশালে ২১৫ জন (৩ দশমিক ৩০ শতাংশ), সিলেটে ২৬৪ জন (৪ দশমিক ০৫ শতাংশ) এবং রংপুরে মারা গেছেন ২৯৬ জন (৪ দশমিক ৫৪ শতাংশ)।
গেল ২৪ ঘণ্টায় ঢাকা ছাড়া চট্টগ্রামে ও রাজশাহীতে মারা গেছেন তিনজন করে এবং রংপুরে মারা গেছেন দুজন। এদের মধ্যে প্রত্যেকেই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের বিজ্ঞপ্তিতে আজ দেশের ১১৮টি পরীক্ষাগারের তথ্য তুলে ধরে বলা হয়, গেল ২৪ ঘণ্টায় দেশে ১৬ হাজার ৪৯৪টি নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। আর আগের কিছু নমুনাসহ পরীক্ষা করা হয়েছে ১৭ হাজার ৫২টি। এ পর্যন্ত দেশে নমুনা পরীক্ষার সংখ্যা দাঁড়ালো ২৭ লাখ ১৩ হাজার ২০২টি।
দেশে একদিনে সুস্থ হয়ে উঠেছেন আরো ২ হাজার ২৭৪ জন রোগী। এ নিয়ে মোট ৩ লাখ ৭১ হাজার ৪৫৩ জন করোনারোগী সুস্থ হয়েছেন।
গত ২৪ ঘণ্টায় নমুনা পরীক্ষা বিবেচনায় শনাক্তের হার ১৩ দশমিক ৪৪ শতাংশ। আর এখন পর্যন্ত শনাক্তের হার ১৬ দশমিক ৮২ শতাংশ। শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৮১ দশমিক ৩৮ শতাংশ, আর শনাক্ত বিবেচনায় মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৪৩ শতাংশ।
গত ২৪ ঘণ্টায় মৃত ৩৭ জনের মধ্যে পুরুষ ২৫ জন এবং নারী ১২ জন। এ পর্যন্ত মৃত ৬ হাজার ৫২৪ জনের মধ্যে পুরুষ ৫ হাজার ৭ জন; যা শতাংশের হিসাবে ৭৬ দশমিক ৭৫ শতাংশ এবং নারী মারা গেছেন ১ হাজার ৫১৭ জন; যা শতাংশের হিসাবে ২৩ দশমিক ২৫ শতাংশ।
মৃতদের বয়স বিভাজনে বলা হয়েছে, গেল ২৪ ঘণ্টায় মৃতদের মধ্যে একজনের বয়স ২০ এর নিচে। এছাড়া ৩১ থেকে ৪০ বছর বয়স সীমার রয়েছেন একজন, ৪১ থেকে ৫০ বছরের দুজন, ৫১ থেকে ৬০ বছরের আটজন এবং ষাটোর্ধ্ব বয়সের মারা গেছেন ২৫ জন।
গত ডিসেম্বরে চীনের উহান শহরে প্রথম আক্রান্ত শনাক্তের পর দ্রুত সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে নভেল করোনাভাইরাস। মৃত্যুপুরীতে পরিণত হয় বিশ্বের অধিকাংশ এলাকা। বাংলাদেশে করোনাভাইরাস প্রথম শনাক্ত হয় গত ৮ মার্চ। প্রথম মৃত্যুর খবর জানানো হয় ১৮ মার্চ।