fbpx

এলএসডি মাদক কী? এটা সেবনে সবার কী হ্যালুসিনেট হয়?

Pinterest LinkedIn Tumblr +
Advertisement

সম্প্রতি বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো পুলিশ উদ্ধার করে এলএসডি বা লাইসার্জিক অ্যাসিড ডায়েথিলামাইড। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীর মৃত্যুর ঘটনার তদন্ত করতে গিয়ে খোঁজ মেলে এই মাদকের। ওই শিক্ষার্থী এই মাদক সেবনের পর ডাব বিক্রেতার দা দিয়ে নিজের গলায় নিজেই আঘাত করেন। পরে হাসপাতালে নিলে মৃত্যু হয় তাঁর।

এরপরই ভয়ানক এই মাদক নিয়ে তদন্তে নামে পুলিশ। এরইমধ্যে এই মাদক ব্যবসার সাথে জড়িত বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের আরও ৫ জন শিক্ষার্থীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গ্রেপ্তারকৃতদের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয় বিপুল পরিমাণ এলএসডি এবং আইস। তাদের দেয়া তথ্য অনুযায়ী ১৩ থেকে ১৪টি চক্র গত এক বছর ধরে এই ব্যবসা চালিয়ে আসছে। এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন ডিএমপির মতিঝিল বিভাগ।

মাদক সেবীদের সাথে কথা বলে পুলিশ জানান, এলএসডি এতটাই ভয়ানক এক মাদক যে, এর পরিমাপ করা হয় মাইক্রোগ্রামে। এই মাদক সেবনের ফলে যে কেউ বোধশক্তি হারিয়ে ভয়ানক কিছু করে বসতে পারে।

এদিকে মাদক বিষয়ে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এলএসডি গ্রহণ করে ভুল রাস্তা দেখে দুর্ঘটনার শিকার হওয়া, বাড়ির জানালা দিয়ে লাফিয়ে পড়া বা অহেতুক আতঙ্কিত হয়ে দুর্ঘটনার শিকার হওয়ার বেশ কিছু ঘটনা নথিবদ্ধ রয়েছে।

মাদক এলএসডি ও শিক্ষার্থীদের গ্রেফতার বিষয়ে আজ বিফিং করেন ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার এ কে এম হাফিজ আক্তার। তিনি জানান, মাদকটি মূলত ছোট একটা বিষয়। এটি ঠোঁটের নিচে দিয়ে সেবন করে। যারা ব্যবহার করে, তাদের কাছেই রাখা হয়। তারা এগুলো বহন করে বিভিন্ন জায়গায় সরবরাহ করে।

এসময় তিনি বলেন, যারা এগুলোর সঙ্গে জড়িয়ে পড়বে, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এই ঘটনায় আগে গ্রেপ্তার তিন শিক্ষার্থীকে পাঁচদিন করে রিমান্ডে নিয়েছে পুলিশ।

এল এসডি মাদক কী ?

যুক্তরাষ্ট্রের স্বাস্থ্য বিভাগের অধীনস্থ মাদক বিষয়ক গবেষণা সংস্থা ন্যাশনাল ইন্সটিটিউট অব ড্রাগ অ্যাবিউজের তথ্য অনুযায়ী, ডি-লাইসার্জিক অ্যাসিড ডায়েথিলামাইড বা এলএসডি রাসায়নিক সংশ্লেষণের মাধ্যমে তৈরি একটি পদার্থ যা রাই এবং বিভিন্ন ধরনের শস্যের গায়ে জন্মানো এক বিশেষ ধরনের ছত্রাকের শরীরের লাইসার্জিক অ্যাসিড থেকে তৈরি করা হয়।

এটি স্বচ্ছ, গন্ধহীন একটি পদার্থ। যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল লাইব্রেরি অব মেডিসিনের মতে এটি পাউডার, তরল, ট্যাবলেট বা ক্যাপসুলের আকারে পাওয়া যায়।

সংস্থাটির মতে, এটি মানুষের মস্তিষ্কের সেরোটোনিন নামক রাসায়নিকের কার্যক্রম প্রভাবিত করে ব্যবহার, অনুভূতি এবং পারিপার্শ্বিকতা সম্পর্কে ধারণা পরিবর্তন করে।

এলএসডি নেয়ার পর সাধারণত মানুষ ‘হ্যালুসিনেট’ করে বা এমন দৃশ্য দেখে যা বাস্তবে নেই। অনেক সময় অলীক দৃশ্য দেখার কারণে দুর্ঘটনার শিকার হয়ে থাকে মানুষ। তথ্য সুত্র বিবিসি।

জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইন্সটিটিউটের সহযোগী অধ্যাপক ডা. মেখলা সরকার বলেন, বিবিসিকে জানান, ইয়াবা-হেরোইনের মতো মাদক দ্রব্যের তুলনায় এলএসডি-তে আসক্তিকর উপাদান (অ্যাডিক্টিভ প্রোপার্টি) কম থাকে। তবে তার মানে এই না যে, এতে আসক্তি তৈরি হয় না। একাধিকবার বা দীর্ঘসময় ধরে ব্যবহার করতে থাকলে এলএসডির প্রতিও আসক্তি তৈরি হয়।

এলএসডি নেয়ার পর সাধারণত মানুষ ‘হ্যালুসিনেট’ করে বা এমন দৃশ্য দেখে যা বাস্তবে নেই।

এলএসডি নেয়ার পর সাধারণত মানুষ ‘হ্যালুসিনেট’ করে বা এমন দৃশ্য দেখে যা বাস্তবে নেই।

তবে ব্যক্তিভেদে এই আসক্তির মাত্রা বা এলএসডির প্রতিক্রিয়া আলাদা হয়।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এলএসডি ব্যবহারকারীদের মধ্যে নানা ধরনের হ্যালুসিনেশন হয়ে থাকে। তার হয়তো মনে হয় যে সে এমন কোন রঙ বা ঘটনা দেখছেন যা আসলে বাস্তবে নেই। এছাড়া নানা ধরণের শব্দও শুনতে পান বলে জানান বিশেষজ্ঞরা।

এই মাদক গ্রহনকারীদের নানা ধরনের বৈশিষ্ট্য দেখা দিতে পারে যেমন, অস্বাভাবিক আচরণ, ক্ষুধামন্দা, ঘুমের সমস্যা, শারীরিক পরিবর্তন, জীবনযাত্রায় পরিবর্তন ইত্যাদি।

Advertisement
Share.

Leave A Reply