fbpx

করোনাকালীন গ্রীষ্মের দাবদাহ থেকে স্বস্তি মিলবে যেভাবে

Pinterest LinkedIn Tumblr +
Advertisement

গ্রীষ্মের দাবদাহে নাজেহাল জনজীবন। সূর্যের তীব্রতা যেন বেড়েই চলছে। বৃষ্টিরও দেখা নেই। তবে এবার একটা বিষয় নিশ্চয়ই খেয়াল করেছেন, অনেক গরম পড়লেও খুব একটা ঘামছে না আপনার শরীর। কারণ বাতাসে জলীয়বাষ্পের পরিমাণ কম। তবে শরীর না ঘামলেও এই গরমে সবাই অস্থির হয়ে পড়ছে।

অন্যদিকে গোটা বিশ্ব করোনার থাবায় জর্জরিত। দিন দিন আক্রান্তের পাশাপাশি মৃত্যুহার বেড়েই চলছে। আমাদের দেশেও তার ব্যাতিক্রম নয়। যেহেতু করোনার সময়ে বাড়তি যত্ন নিতে হচ্ছে নিজেকে, তাই মনে হচ্ছে গরম আরো দ্বিগুণ হয়ে গেছে। তাই নিজেকে গরম থেকে বাঁচানোর পাশাপাশি করোনাকালীন এ সময়ে কীভাবে সুস্থ থাকা যায় তা জানা জরুরি।

গরমের এ সময়ে দৈনন্দিন রুটিনের দিকে যেমন নজর দেয়া প্রয়োজন তেমনি খাবারের তালিকায় খাবার নির্বাচন, পোশাকের ক্ষেত্রে কাপড় নির্বাচন ইত্যাদি বিষয়ে নজরদারি প্রয়োজন। আজ বিবিএস বাংলার পাঠকদের জন্য থাকছে করোনাকালীন গরমে স্বস্তিতে থাকার কিছু টিপস।

১। গরমে যেহেতু ঘামের পরিমাণ বেশি থাকে তাই এ সময়ে জর্জেট বা সিল্কজাতীয় কাপড়ের পরিবর্তে সুতি কাপড় হতে পারে আপনার গরমের সঙ্গী। এক্ষেত্রে কালো কিংবা বেগুনি, নীল এ ধরনের রঙ বেছে না নিয়ে সাদা, ধূসর, সবুজ জাতীয় হালকা রঙের পোশাক নির্বাচন করুন।

২। পোশাকের বেলায় কিছুটা ঢিলেঢালা পোশাক বেছে নেয়া ভালো। মেয়েদের ক্ষেত্রে তাই সালোয়ার কামিজ, টপস, শার্ট হতে পারে এ গরমে স্বস্তির পোশাক। অন্যদিকে ছেলেদের ক্ষেত্রে টি-শার্ট, শার্ট বেছে নিতে পারেন। বাসায় থাকার সময় ঢোলা হাফ হাতার সালোয়ার কামিজ, টি-শার্ট হতে পারে এ গরমে স্বস্তিদায়ক পোশাক।

৩। গরমে স্বস্তি পেতে খাবার নির্বাচন খুবই গুরুত্বপূর্ণ। খাবারের তালিকায় এ সময়ে লেবু, কমলা, মালটার মত ভিটামিন সি জাতীয় ফল রাখা উচিত। তৈলাক্ত কিংবা ভাজাপোড়া খাবার না খাওয়াই ভালো। এতে গ্যাস্টিকের সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে। তাই এ সময়ে ডাবের পানি, শসা, লেবু পানি পান করতে পারেন। এতে করে আপনার শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা যেমন বৃদ্ধি পাবে তেমনি আপনি গরমে পাবেন স্বস্তি।

৪। গরমের এ সময়ে ঘরে পর্যাপ্ত আলো বাতাস আছে কিনা সে দিকে খেয়াল করুন। ঘরে ব্যবহার করা পর্দাগুলো বদলে হালকা রঙের পর্দা ব্যবহার করতে পারেন। বিছানার চাদরের ক্ষেত্রেও বেছে নিতে পারেন সাদা, ধূসর জাতীয় যে কোনো রঙ। এতে কিছুটা হলে গরমে আরাম পাবেন।

৫। যেহেতু এখন মাস্ক ব্যবহার করতে হচ্ছে নিয়মিত, তাই মাস্কের ক্ষেত্রেও আপনাকে সচেতন হতে হবে। গরমের সময়ে সুতি কাপড়ের মাস্ক ব্যবহার করলে আরাম পাবেন। আর, একদিন অন্তত অন্তর অবশ্যই মাস্ক ডিটার্জেন্ট দিয়ে ধুয়ে রোদে শুকিয়ে নিবেন। নিয়মিত মাস্ক না ধুলে একদিকে যেমন আপনি করোনা থেকে রক্ষা পাবেন না, তেমনি ময়লা মাস্ক ব্যবহার করার ফলে এই গরমে আপনার ত্বকে র‍্যাশ উঠতে পারে। তাই,পরিষ্কার সুতি মাস্ক পরা নিশ্চিত করুন। এতে করে, গরমে আরামও পাবেন, সেই সাথে করোনা থেকে আপনি পাবেন সুরক্ষা।

৬। করোনার সময়ে এমনিতেই বাড়তি যত্ন প্রয়োজন। ঘরবাড়ি পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখলে রোগ জীবানু বাসা বাঁধে কম। আবার, ঘরবাড়ি পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকলে গরমও খানিকটা কম লাগবে, বাতাস চলাচল সহজ হবে। এছাড়া রান্নাঘরে একটা লম্বা সময় পার করতে হয়। তাই রান্নাঘর পরিষ্কার আছে কিনা, এডজাস্টার ফ্যানে কোনো ধরনের ময়লা জমে আছে কিনা, জানালা পরিষ্কার আছে কিনা এ বিষয়েও খেয়াল রাখতে হবে।

৭। করোনাকালীন এ সময়ে সুস্থতার ক্ষেত্রেও রাখতে হবে বাড়তি নজরদারি। এছাড়া বাড়িতে এ সময়ে কাজে সাহায্য করা মানুষ না থাকায় বাড়তি কাজগুলোও করতে হচ্ছে একা হাতে। তাই গরমে স্বস্তিতে কাজ করা বেশি প্রয়োজন।

৮। গরমের এ সময় যতটা সম্ভব কম চা বা কফি পান করা উচিত। চা, কফির পরিবর্তে  ঘরে তৈরি কাঁচা আমের জুস, লাচ্ছি, লেবুর শরবত খাওয়ার অভ্যাস করতে পারেন। অতিরিক্ত গরমে অনেকেই একটু পর পর ঠাণ্ডা পানি খেয়ে থাকেন। এটা একদমই ঠিক নয়। দৈনিক আট থেকে দশ গ্লাস নরমাল পানি পান নিশ্চিত করুন। গরমে শরীর দ্রুত ডিহাইড্রেড হয়ে পড়ে তাই পর্যাপ্ত পানি শরীরকে যেমন সুস্থ রাখতে সহায়তা করে তেমনি পানি শূন্যতা থেকেও বাঁচায়।

গরমের স্বস্তিতে থাকতে আশপাশের পরিবেশ কেমন তা গুরুত্বপূর্ণ। পর্যাপ্ত আলো-বাতাস আর পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা গরম থেকে যেমন আপনাকে আরাম দেবে, তেমনি আপনি সুস্থ জীবন যাপন করতে পারবেন।

Advertisement
Share.

Leave A Reply