সারা দেশ রবিবার সকাল পর্যন্ত একদিনে সর্বোচ্চ ১০৫ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। এতে নড়েচড়ে বসেছে স্বাস্থ্য বিভাগ। এইদিনই স্বাস্থ্যমন্ত্রী ঘোষণা দেন, স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ ও মিটফোর্ড হাসপাতাল, লালকুঠি হাসপাতাল, রেলওয়ে হাসপাতাল, টঙ্গীর শহীদ আহসান উল্লাহ মাস্টার জেনারেল হাসপাতালসহ আরও কয়েকটি হাসপাতাল নির্ধারণ করা হবে ডেঙ্গু রোগীদের চিকিৎসা দেবার জন্যে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, এ বছর এখন পর্যন্ত ১ হাজার ৫৭৪ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছে এবং চিকিৎসা নিতে হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়েছে ১ হাজার ২০০ জনকে। যার মধ্যে ৩ জনের মৃত্যু হয়েছে।
রবিবার সকাল ৮ টা থেকে সোমবার সকাল ৮টা পর্যন্ত ২৪ ঘন্টায় ১২৩ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। এটিই এখন পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে একদিনে হাসপাতালে ভর্তি রোগীর সর্বোচ্চ সংখ্যা বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
রাজধানীর স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ ও মিটফোর্ড হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. মো. দাহারুল ইসলাম বিবিএস বাংলাকে বলেন, ‘প্রতিদিন ২০ থেকে ২৪ জনের মতো ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হচ্ছে। প্রাথমিকভাবে হঠাৎ তীব্র জ্বর, চোখের পেছনে ব্যাথা, গায়ে লাল লাল র্যাশ, সারা শরীরে ব্যাথা, মেরুদণ্ড এবং কোমড়ের দিকে হাড় ভেঙ্গে যাবার মত প্রচণ্ড ব্যথাসহ নানারকম উপসর্গ দেখা দিচ্ছে রোগীদের। এছাড়া যাদেরই জটিলতা দেখা দিচ্ছে তারা হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছে। এবছর নতুন করে ডায়রিয়া জনিত উপসর্গ দেখা দিচ্ছে। যেটা আগে খুব একটা দেখা যায়নি।’
একদিকে করোনার থাবা, অন্যদিকে বর্ষা মৌসুমে ডেঙ্গুর প্রকোপ। উপসর্গ প্রায় একই। জ্বর হলে করোনা এবং ডেঙ্গু, দু’টোরই পরীক্ষা করার পরামর্শ চিকিৎসকদের।
করোনা এবং ডেঙ্গু দু’টোর বিষয়ে সচেতন থাকতে পরামর্শ দিয়ে ডা. মো. দাহারুল ইসলাম বলেন, ‘জ্বর হলে আলাদা করে বোঝার উপায় নেই করোনা, না ডেঙ্গু। যেহেতু জ্বর, শরীর ব্যাথা, মুখে অরুচিসহ বেশকিছু উপসর্গ প্রায় একই, তাই জ্বর হলে দুটোরই পরীক্ষা করে নেওয়া দরকার। করোনা মহামারীর সময় সবাইকে আরও বেশি সচেতন হতে হবে যেনো ডেঙ্গু মহামারি আমাদের মোকাবিলা করতে না হয়।
জুলাই, আগস্ট, সেপ্টেম্বরে ডেঙ্গু আক্রান্তের ঝুঁকি থাকে সবচেয়ে বেশি। লকডাউনে বদ্ধ বাসাবাড়ি- অফিসে জমে থাকা পানিতে এডিসের প্রজনন বাড়বে, ফলে এবছর ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা বেশি হবার আশঙ্কা কীটতত্ত্ববিদদের।
ডেঙ্গু বাহিত এডিস মশার প্রজননক্ষেত্র ধ্বংসে নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করে দোষীদের জেল জরিমানা করছে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন। তবে সাধারণ মানুষের অংশগ্রহন ব্যতীত করোনা দুর্যোগের পাশাপাশি ডেঙ্গুর ভয়াবহতা মোকাবিলা করা সম্ভব নয়, মত জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের।