fbpx

করোনার বিরূপ পরিস্থিতিতে টিকে থাকার উপায়

Pinterest LinkedIn Tumblr +
Advertisement

পুরো বিশ্বের পাশাপাশি বাংলাদেশও এখন করোনার থাবায় জর্জরিত। এই ভাইরাস প্রতিনিয়ত পরিবর্তন করে যাচ্ছে তার রূপ। আর তাই তো গবেষকেরা এখনও বুঝে উঠতে পারছেন না কী করে এই ভাইরাসকে দমন করা সম্ভব। করোনার এই প্রকোপকে নিয়ন্ত্রণ করার জন্য বিশ্বের বিভিন্ন দেশের পাশাপাশি বাংলাদেশেও লকডাউন চলছে বারবার। কিন্তু, লকডাউন তো আর শেষ সমাধান নয় এই পরিস্থিতিকে মোকাবেলা করার।

করোনার বিরূপ পরিস্থিতিতে টিকে থাকার উপায়

শরীরের ইমিউনিটি সিস্টেম বাড়াতে ব্যায়ামের বিকল্প নেই। ছবি: সংগৃহীত

প্রকৃতির এই বিরূপ পরিস্থিতিতে তাই আমাদের নিজেদেরকেই সে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে টিকে থাকার। এ বিষয়ে বিভিন্ন বিশেষজ্ঞ নানাভাবে নানা উপায় প্রায়ই আমাদের সামনে তুলে ধরেন। এমনই কিছু উপায় আজ বিবিএস বাংলার পাঠকদের জন্য তুলে ধরবো। আশা করছি, নিচে উল্লেখিত এই বিষয়গুলো যদি আমরা একটু সচেতনভাবে অনুসরণ করি, তাহলে হয়তো রক্ষা পেতে পারে অনেকগুলো প্রাণ।

সবার প্রথমে আমাদেরকে প্রকৃতির বিভিন্ন উপাদানের সাথে নিজেদেরকে মানিয়ে নেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। একবার যদি আমরা প্রকৃতির ঢালে নিজেদের ঢালতে পারি, তাহলে এই প্রকৃতিতে টিকে থাকাও খুব একটা কষ্টকর হবে না। তার জন্য আমাদের নিজেদের কিছু অভ্যাসে পরিবর্তন আনতে হবে।

// অভ্যাস : আমাদের অনেকের মধ্যেই কিছু বাজে অভ্যাস রয়েছে। এই যেমন, কথায় কথায় মুখে আঙুল দেওয়া, কলম বা পেন্সিল মুখে নিয়ে কামড়ানো, আঙুল জিহ্বায় বারবার লাগিয়ে টাকা গোনা বা কাগজ উল্টানো ইত্যাদি। এসব অভ্যাস ছেড়ে দিয়ে সাবান দিয়ে হাত ধোয়া ও মাস্ক পরার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে। ধুমপান থেকে যথাসম্ভব বিরত থাকতে হবে।

করোনার বিরূপ পরিস্থিতিতে টিকে থাকার উপায়

সাবান দিয়ে হাত ধোয়ার অভ্যাস গড়ে তোলা খুব জরুরি সুস্থ থাকার জন্য। ছবি: সংগৃহীত

// পরিবেশ : আমাদের সৌভাগ্যই বলতে হবে, যে পরিবেশগত দিক দিয়ে আমরা অনেক দেশের তুলনায় করোনা মোকাবেলায় অনেক বেশি শক্তিশালী। কারণ, আমাদের দেশের তাপমাত্রা ও আদ্রতা বেশি থাকায় বাতাসে ধুলাবালি কম উড়তে পারে। এতে ভাইরাস ছড়াতে পারে কম। অন্যদিকে, শীতের সময় বাতাসে আদ্রতা কম থাকায় চারদিক শুষ্ক থাকে বলে বেশি ধুলা উড়ে। তাই এই ভাইরাস সহজে হানা দিতে পারে শীতপ্রধান দেশগুলোতে। সেজন্য আমাদের বর্তমান পরিস্থিতিতে ঠান্ডা পানীয় পান ও এসি ব্যবহার দু’টো থেকেই বিরত থাকতে হবে।

// ইমিউনিটি : খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো এটি। এই ভাইরাসকে মোকাবেলা করতে হলে ইমিউনিটি বাড়ানোর কোন বিকল্প নেই। আর ইমিউনিটি বুস্ট করতে হবে ফিজিক্যালি ও মেন্টালি। তা করতে হবে নিচের বিষয়গুলো অনুসরণ করে –

# ফিজিক্যালি :

  • ইমিউন সিস্টেমের জন্য রাত জেগে থাকা খুবই খারাপ অভ্যাস। তাই নিয়ম করে ঘুমাতে হবে। প্রতিদিন কমপক্ষে ৬ থেকে ৮ ঘন্টা ঘুমাতে হবে অবশ্যই।
  • শরীরের মাসল এক্টিভিটি বাড়াতে প্রতিদিন কমপক্ষে ১৫ থেকে ৩০ মিনিট ব্যায়াম করলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে।
  • এই সময় ভিটামিন ‘ডি’ অত্যাবশ্যকীয় একটি উপাদান আমাদের শরীরের জন্য। আপনারা লক্ষ্য করলেই দেখবেন, করোনায় আক্রান্তদের চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ভিটামিন ‘ডি’ ওষুধ খেতে হয়। কিন্তু, আপনি খুব সহজেই ঘরে বসে আপনার শরীরের ভিটামিন ‘ডি’ এর ঘাটতি মেটাতে পারেন। প্রতিদিন ঘরের বারান্দায় বা ছাদে গিয়ে হাঁটাহাঁটি করুন, শরীরে রোদ লাগতে দিন। পাশাপাশি, কমপক্ষে ১০ মিনিট শ্বাস-প্রশ্বাসের ব্যায়াম করুন রোদের নীচে বসে।

# মেন্টালি :

শরীরে ইমিউন সিস্টেমকে বাড়ানোর জন্য সঠিক হরমোনাল ব্যালেন্স রাখা খুবই জরুরি। তাই মনকে শান্ত রাখতে হাসিখুশি থাকার চেষ্টা করুন। এক্ষেত্রে ধর্মীয় প্রার্থনার মাধ্যমে মনকে প্রশান্ত করতে পারবেন সহজেই। যে সংবাদ পাঠে মন অস্থির হয়ে দুঃশ্চিন্তা গ্রাস করে, সে ধরণের সংবাদ পাঠ ও দেখা থেকে বিরত থাকুন।

এ সবকিছুর পাশাপাশি আমাদেরকে গুরুত্ব দিতে হবে আমাদের খাদ্যাভাসেও। কোন কোন খাবার আমাদের শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে শক্তিশালী করবে, তাও জেনে নিতে হবে যথাযথভাবে।

করোনার বিরূপ পরিস্থিতিতে টিকে থাকার উপায়

ভিটামিন ‘সি’ যুক্ত খাবার বেশি খাওয়ার অভ্যাস করতে হবে। ছবি: সংগৃহীত

  • বেশি ভাত খেলেই যে পুষ্টি বেশি পাবেন, তা কিন্তু নয়। ভাত কম খেয়ে তরকারি এবং প্রোটিন জাতীয় খাবারই বেশি খেতে হবে।
  • প্রচুর পরিমাণে পানি পান করতে হবে।
  • ফাস্টফুড একদমই ত্যাগ করতে হবে। এমনকি চিনি বা লবন খাওয়াও কমিয়ে দিতে হবে।
  • ভিটামিন ‘সি’ বা টক জাতীয় ফল ও খাবার খেতে হবে। যেমন, কমলা, লেবুসহ সিজনাল ফল। এ সময় প্রতিদিন সকালে লেবু সেদ্ধ গরম পানি পান করুন।
  • এন্টি-অক্সিডেন্টযুক্ত খাবার খেতে হবে, যেমন শাক-সবজি বেশি খেতে হবে। আর বাজারে যেতে হলে প্রয়োজনীয় প্রটেকশন নিয়ে যেতে হবে।
  • আমাদের দেশে যেসব মশলা পাওয়া যায়, সেগুলো কিন্তু বেশ কাজের। ইমিউনিটি বুস্ট করতে লবঙ্গ, জিরা, হলুদ, দারচিনি, তেজপাতা এসব দারুণভাবে কাজ করে। এসব মশলা চা’য়ের সাথে মিশিয়ে পান করুন, দুধের সাথে হলুদ মিশিয়ে পান করুন, দেখবেন দারুণ কাজ করবে। আর যারা গ্রিন টি পছন্দ করেন, বেশি করে গ্রিন টি পান করুন। এটি এন্টি-অক্সিডেন্ট হিসেবে খুব কাজ করে।
  • কালোজিরাকে বলা হয়, এটি মৃত্যু ছাড়া যে কোনো রোগের জন্য মহৌষধ। প্রতিদিন সকালে উঠে খালি পেটে এক চামচ মধুর সাথে কালোজিরা মিশিয়ে খেলে খুবই উপকার পাবেন। পাশাপাশি, ভর্তা বা ভাজির সাথেও কালোজিরা খেতে পারেন।
করোনার বিরূপ পরিস্থিতিতে টিকে থাকার উপায়

এক চামচ মধুর সাথে কালোজিরা মিশিয়ে খেলে খুবই উপকার পাবেন। ছবি: সংগৃহীত

উপরের নিয়মগুলো মেনে চলতে পারলে আশা করা যায় আমরা করোনার এই পরিস্থিতিতে অনেকটাই সুরক্ষিত ও নিরাপদ থাকতে পারবো।

Advertisement
Share.

Leave A Reply