fbpx

কর দেয় না, এমন ৮০ হাজার কোম্পানির খোঁজ পেয়েছে এনবিআর

Pinterest LinkedIn Tumblr +
Advertisement

বছরের পর বছর কর ফাঁকি দিয়ে গেছেন, এমন প্রায় ৮০ হাজার নতুন কোম্পানির খোঁজ পেয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। গত এক বছর এনবিআর করপোরেট কমপ্লায়েন্স নিয়ে গঠিত টাস্কফোর্স এসব লুকিয়ে থাকা কোম্পানির খোঁজ পেয়েছে বলে জানিয়েছে।

সেখান থেকে জানা গেছে, এনবিআরের খাতায় এতোদিন এসব কোম্পানির নাম ও কোনো হদিস ছিল না। এসব কোম্পানির মালিকেরা কর শনাক্তকরণ নম্বর (টিআইএন) নেননি। তারা বছর শেষে লাভ-লোকসানের কোনো তথ্যও দেয়নি। ফলে এসব কোম্পানির মালিকেরা দীর্ঘদিন ধরে করের বাইরে আছেন। অথচ টিআইএন নিয়ে এসব কোম্পানির কর দেওয়া বাধ্যতামূলক।

এনবিআর সূত্রে জানা গেছে, গত বছরের আগস্টে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সেলের (সিআইসি) পরিচালক শব্বির আহমেদের নেতৃত্বে টাস্কফোর্স গঠিত হয়। বর্তমানে ওই টাস্কফোর্স কোম্পানির ঠিকানা অনুযায়ী সংশ্লিষ্ট কর কমিশনারেটের মাধ্যমে টিআইএন ইস্যু করছে।

সেই প্রাথমিক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, টিআইএনবিহীন কোম্পানি খুঁজে বের করতে গিয়ে টাস্কফোর্স খুঁজে পেয়েছে দুর্নীতিতে নিমজ্জিত দেশের এক করুণ চিত্র। এতো কোম্পানির কর না দেওয়া সম্পর্কে টাস্কফোর্স বলেছে, এই পরিসংখ্যান চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে দেশের আর্থিক খাতের সুশাসনের ঘাটতি।

নিবন্ধিত হলেও কোন কোন কোম্পানি কর দেয় না, তা খুঁজে বের করতে গত বছরের আগস্ট মাসে কাজে নামেন টাস্কফোর্সের সদস্যরা। প্রায় এক বছর ধরে যৌথ মূলধনী কোম্পানি ও ফার্মসমূহের পরিদপ্তর (আরজেএসসি) ও এনবিআরের মাঠ পর্যায়ের কর সার্কেল থেকে তথ্য সংগ্রহ করেন কর গোয়েন্দারা।

আরজেএসসির হিসাবমতে, বর্তমানে বাংলাদেশে নিবন্ধিত কোম্পানির সংখ্যা ১ লাখ ৭৬ হাজার ৪০০ টি। ২০২০ সালের আগস্ট মাসে কোম্পানি এনবিআরের টাস্কফোর্স যখন কাজ শুরু করে, তখন মাত্র ৭৮ হাজার ১০৫টি কোম্পানি এনবিআরের বিভিন্ন কর অঞ্চলে করদাতা হিসেবে নিবন্ধিত ছিল।

সে হিসেবে প্রায় এক লাখ কোম্পানি করের আওতামুক্ত ছিল। রিটার্ন জমা বাধ্যতামূলক এবং লাভ-লোকসান নির্বিশেষে ন্যূনতম কর দেওয়ার কথা থাকলেও করের খাতায় এসব কোম্পানি ছিল নিখোঁজ।

গত বছরের আগস্ট মাসে টাস্কফোর্সের দলটি আরজেএসসি থেকে নিবন্ধিত কোম্পানিগুলোর নাম, ঠিকানা, পরিচালকদের তথ্য সংগ্রহ শুরু করে। এভাবে গত এক বছরে হাজার হাজার নিখোঁজ কোম্পানির সন্ধান পান কর্মকর্তারা।

এনবিআরের তথ্য অনুযায়ী, দেশে এখন টিআইএনধারী কোম্পানির সংখ্যা ১ লাখ ৫৮ হাজার।

টাস্কফোর্সের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ৭৮ হাজার কোম্পানির টিআইএন ছিল। এর মধ্যে ৫০ হাজারের বেশি কোম্পানি রিটার্ন দেয় না। মাত্র ২৮ হাজার কোম্পানি রিটার্ন দেয়।

সনদপ্রাপ্ত হিসাববিদদের সংগঠন দি ইনস্টিটিউট অব চার্টার্ড অ্যাকাউনট্যান্টস অব বাংলাদেশের (আইসিএবি) সূত্রে জানা গেছে, আইসিএবির হিসাববিদেরা বছরে মাত্র ১৫ থেকে ১৬ হাজার নিরীক্ষা প্রতিবেদনে সই করেন। এনবিআরে রিটার্নের সঙ্গে জমা দেওয়া বাকি নিরীক্ষা প্রতিবেদন ভুয়া।

অন্যদিকে কোম্পানিগুলোর কাছ থেকে সঠিকভাবে করপোরেট কর আদায় করতে নিরীক্ষা প্রতিবেদন যাচাই-বাছাই করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। সনদপ্রাপ্ত হিসাববিদদের সংগঠন আইসিএবি নিজেদের ওয়েবসাইটে ডকুমেন্ট ভেরিফিকেশন সিস্টেমে (ডিভিএস) তাদের সদস্যরা যেসব কোম্পানির নিরীক্ষা করবেন, সেগুলো আপলোড করে দেবেন। কর কর্মকর্তারা সেখানে তা যাচাই-বাছাই করবেন। যেখানে ভুয়া নিরীক্ষা প্রতিবেদন জমার প্রবণতা কমে যাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

Advertisement
Share.

Leave A Reply