fbpx

কানাডা থেকে বাংলাদেশে বাবা-মাকে খুঁজছেন হাসিনা

Pinterest LinkedIn Tumblr +
Advertisement

বাংলাদেশি বংশদ্ভূত কানেডিয়ো নারী হাসিনা। ১৯৮০ সালে ঢাকার ‘ফ্যামিলিজ ফর চিলড্রেন’ নামের একটি অনাথ আশ্রম থেকে তাকে দত্তক নেন এক কানেডিয়ো দম্পতি। তখন তার বয়স ছিল মাত্র তিন বছর।

দূর প্রবাসে নতুন বাবা-মায়ের সাথে শুরুর দিকে আদর-যত্নেই বেড়ে ওঠেন হাসিনা। কিন্তু আট পেরুতেই বুঝতে পারেন যারা অভিভাবকের দায়িত্ব পালন করছেন তারা বায়োলজিকাল বাবা-মা নন। সন্দেহটা প্রকট হয়েছিল, কারণ তারা ছিলেন শ্বেতাঙ্গ আর হাসিনা কৃষ্ণাঙ্গ। বাবা-মা ও প্রতিবেশীদের কানাঘুষুতেও বিষয়টি আঁচ করেছিলেন তিনি। কিশোর বয়সেই নিশ্চিত হন, বাংলাদেশ থেকে দত্তক নেয়া হয়েছিল তাকে। একসময় সম্পর্কে ঘুন ধরে পালক বাবা মায়ের সাথেও। মাত্র ১৪ বছর বয়সে ঘর ছাড়েন হাসিনা।

কানাডা থেকে বাংলাদেশে বাবা-মাকে খুঁজছেন হাসিনা

হাসিনার ছোট বেলার ছবি।

এরপরই হন্যে হয়ে শেকড়ের সন্ধান করতে থাকেন হাসিনা। সময় পেড়িয়ে নিজেও এখন এক মেয়ের মা হয়েছেন। তবু থেমে নেই চেষ্টা। খুঁজে বের করেন ‘‘ফ্যামিলিজ ফর চিলড্রেন’ আশ্রম। সেখানের নথিতেও হাসিনার বাবা-মায়ের পরিচয় মেলেনি।

বিবিএস বাংলাকে হাসিনা বলেন, ‘ আমি চেষ্টা করছি আমার বায়োলজিকাল বাবা মাকে খুঁজে বের করতে। আমার জন্ম ঢাকায়, বাংলাদেশে ১৯৭৭ সালে। তিন বছর বয়সে একটি এতিমখানা থেকে আমাকে দত্তক নেয়া হয়। ১৯৮০ সালে আমি তাদের সাথে কানাডায় চলে আসি। নিজের সম্পর্কে আর কিছুই জানি না। জানি না আমার আসল বাবা-মা কারা। কোনো ভাইবোন আছে কিনা, তাও জানি না। এমনকি জানিনা, তাদের ছেড়ে কিভাবে আমি এতিমখানায় এসেছিলাম। মহামারি গেলে তাদের খুঁজতে অবশ্যই বাংলাদেশে যাবো।’

কানাডা থেকে বাংলাদেশে বাবা-মাকে খুঁজছেন হাসিনা

হাসিনা। ছবি: সংগৃহীত

দূর দেশ থেকে হাসিনার চেষ্টা অনেকটাই কঠিন হয়ে দাঁড়ায়। ছোটবেলার অনেক ছবি থাকায় তা দিয়েই স্বজনদের খুঁজে পাওয়ার আশায় বুক বাধেন তিনি। হয়তো একদিন এই ছবি দেখেই তাকে চিনি নিবেন স্বজনরা। হাসিনা বলেন, ‘ আমি সত্যি চেষ্টা করছি, এবং মন থেকে আশা করছি তাদের খুঁজে পাবো। বাংলাদেশের কিছু মানুষও আমাকে সাহায্য করছেন। ৪০ বছর ধরে পরিবার থেকে দূরে আছি। জানি না বাবা-মা বেঁচে আছেন কিনা। ‘

সম্প্রতি  ‘বাংলাদেশের দুষ্প্রাপ্য ছবি সমগ্র’ নামের একটি ফেসবুক গ্রুপ হাসিনার বাবা মাকে খোঁজার জন্য সাহায্য করছে। হাসিনার পরিবারের খোঁজ পেতে খোলা হয়েছে ‘ফাইন্ডিং রুটস ফর হাসিনা’ (Finding Roots For Hasina) নামের একটি পেইজ। গ্রুপটির প্রতিষ্ঠাতা গিরিধর দে জানান, ‘ হাসিনা যে অরফানটিতে ছিলেন, সেখানে যোগাযোগ করেছি।  সেখানকার সাবেক কর্মকর্তাদের সাথেও যোগাযোগ করেছি। তবে দূর্ভাগ্যবশত তারা হাসিনাকে স্মরণ করতে পারছেন না। সেখান থেকে কোনো তথ্য মেলেনি’

23andme নামের একটি প্রতিষ্ঠানের ডিএনএ রিপোর্ট অনুযায়ী, ২ জনের সাথে হাসিনার ডিএনএ কিছুটা ম্যাচ করছে। তাদের এক জনের সাথে ডিএনএ’র মিল রয়েছে ০ দশমিক ৫৫ শতাংশ আর অন্যজনের সাথে ০ দশমিক ১৯ শতাংশ। যাদের সাথে হাসিনার দূর সম্পর্ক রয়েছে, তৃতীয় ও পঞ্চম কাজিন হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। কাছের সম্পর্কের মেলেনি কেউ।

এই পরিচয়ের লড়াইয়ে আর কতটা পথ হাঁটতে হবে হাসিনার জানা নেই। বাংলার  এই মেয়ে জানান, লক্ষ্যে না পৌঁছে কিছুতেই হাল ছাড়বেন না তিনি।

Advertisement
Share.

Leave A Reply