আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলে হামিদ কারজাই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের বাইরে জোড়া বিস্ফোরণে ১২ মার্কিন সেনাসহ অন্তত ৬০ জন নিহত হয়েছেন। এ ঘটনার দায় স্বীকার করেছে আন্তর্জাতিক জঙ্গি গোষ্ঠী ইসলামিক স্টেট (আইএস)।
আইএসের খোরাসান প্রদেশ শাখা জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের সেনা ও তাদের আফগান মিত্রদের ‘লক্ষ্যবস্তু’ বানিয়ে তারা এ আত্মঘাতী হামলা চালিয়েছে।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ভয়াবহ ওই বিস্ফোরণে ৬০ জন নিহত এবং আহত হয়েছেন ১৪০ জনের বেশি। এদের মধ্যে বেশিরভাগ বেসামরিক আফগান নারী ও শিশু রয়েছে।
আইএসের বিবৃতির বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, তাদের একজন আত্মঘাতী বোমা হামলাকারী যুক্তরাষ্ট্রের সেনাবাহিনীর সঙ্গে থাকা অনুবাদক এবং সহযোগীদের লক্ষ্য করে বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে। এর আগে এই ঘটনার জন্য মার্কিন কর্তৃপক্ষও আইএসকে দায়ী করেছে। বার্তা সংস্থা এপি এবং যুক্তরাজ্যের সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ানও তাদের বরাতে খবরটি প্রচার করেছে।
এপির খবরে বলা হয়, হামলার দায় স্বীকার করে আইএস বিবৃতি দিয়েছে। সেখানে এক সন্ত্রাসীর ছবিও রয়েছে। ওই ছবিতে দেখা যায়, আইএসের কালো রঙের পতাকার সামনে বিস্ফোরক বেল্ট পরে দাঁড়িয়ে আছে সেই সন্ত্রাসী। তার মুখ কালো কাপড়ে ঢাকা। শুধু চোখই দেখা যাচ্ছিল। হামলাকারীর নাম আবদুল রহমান আল-লোগারি বলে উল্লেখ করেছে আইএস।
বিমানবন্দরের দিকে যাওয়া এক ব্যক্তি রয়টার্সকে বলেন, ‘এক মুহূর্তের জন্য আমি ভাবলাম আমার কানের পর্দা ফেটে গেছে। শ্রবণশক্তি হারিয়ে ফেলেছি। ঝড়ের মতো পলিথিনের ব্যাগগুলো উড়তে থাকে। মানুষের লাশ এবং শরীরের অংশ বাতাসে ভাসতে দেখেছি। মৃতদেহ, শরীরের অঙ্গ, বৃদ্ধ এবং আহত নারী-পুরুষ ও শিশুদের ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে থাকতে দেখেছি।’
এই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে তালেবান বলেছে, মার্কিন সামরিক বাহিনীর নিয়ন্ত্রণে থাকা স্থানে বিদেশি সেনাদের উপস্থিতিতে এই হামলা চালানো হয়েছে। বিশ্ব সম্প্রদায়েরও উচিত বেসামরিক আফগানদের লক্ষ্য করে এই হামলার নিন্দা জানানো।
যুক্তরাষ্ট্রের সেন্ট্রাল কমান্ডের প্রধান জেনারেল ম্যাককেঞ্জি বলেছেন, আফগানিস্তানে এখনও প্রায় এক হাজার মার্কিন নাগরিক রয়েছে। তাই সেখান থেকে তাদের নিরাপদে ফিরিয়ে আনার কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে এবং এ বিষয়ের ওপর তারা গুরুত্ব দিচ্ছে।
এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন হামলাকারীদের খুঁজে বের করার কথা জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র সন্ত্রাসীদের কাছে হার মানবে না। আমরা তোমাদের ক্ষমা করবো না। আমরা (এ ঘটনা) ভুলে যাবো না। আমরা তোমাদের খুঁজে বের করবোই এবং তোমাদের এর মূল্য দিতে হবে।‘