সম্প্রতি বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়ার পোস্ট এবং মার্কিন সংবিধানের ২৩০ ধারা নিয়ে বেশ আলাপ আলোচনা চলছে। কেননা মার্কিনীদের জন্য ২৩০ অনুচ্ছেদ বেশ গুরুত্বপূর্ণ। এই ধারায় অনলাইন প্ল্যাটফর্ম ব্যবহারকারীর অবৈধ পোস্টের জন্য কাকে দায়ী করা হবে- তার নির্দেশনা দেয়া আছে।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের ডেমোক্রেটিক পার্টির তিন সিনেটর নতুন করে ২৩০ অনুচ্ছেদে পরিবর্তনের প্রস্তাব করেছেন। পরিবর্তন যে প্রয়োজন, তাতে মোটামুটি সবাই একমত। তবে প্রস্তাবিত পরিবর্তন নিয়ে দ্বিমতও আছে।
মার্কিন সংবিধানের কমিউনিকেশনস ডিসেন্সি আইনের ২৩০ অনুচ্ছেদ বলছে, অনলাইনে অবৈধ কিছু পোস্ট করলে দায়ভার পোস্টদাতাকেই নিতে হবে। এক্ষেত্রে সেই ওয়েবসাইটের মালিকের কোনো দায়ভার থাকবে না। তবে এই আইনের আওতায় বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ওয়েবসাইট বা ওই প্ল্যাটফর্মের মালিককে বেশ সুরক্ষা দেয়া হচ্ছে।
আইনটি ১৯৯৬ সালে পাস হয়। যা ফেসবুক বা টুইটারের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হলেও অনেক ওয়েবসাইট এর আওতায় পড়ছে না। উদাহরণ হিসেবে সংবাদমাধ্যমের মতামত বিভাগের কথা বলা যায়।
ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং অস্ট্রেলিয়াতেও একই ধরনের আইন চালু আছে। তবে সময়ের সাথে সাথে এই আইন নিয়ে বিতর্ক তৈরি হচ্ছে। আবার ভুল ব্যাখ্যা ও দেয়া হচ্ছে অনেক ক্ষেত্রে। সমালোচকরা দাবি করছে, এই আইনিটি বড় প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলোকে ব্যবহারকারীর ক্ষতি করে পার পেয়ে যাওয়ার সুযোগ করে দিয়েছে।
অনেক দিন ধরেই ২৩০ অনুচ্ছেদে পরিবর্তনের প্রস্তাব আসছে। তবে সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এক পোস্ট দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের ক্যাপিটল হিলে উগ্রপন্থীদের হামলার পর থেকে বিষয়টি নতুন করে আলোচনায় আসে।কেননা পোস্টদাতা এর দায়ভার এড়াতে পারে না। আর যে মাধ্যমের মাধ্যমে এটি ছড়িয়ে পড়েছে, তাঁকেও দায় নিতে হবে বলে মনে করছেন সিনেটররা। ডেমোক্র্যাটদের পাশাপাশি রিপাবলিকান নেতারাও আইনটির বিপক্ষে সোচ্চার হয়েছেন।
এদিকে গুগল, টুইটার ও ফেসবুকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তারা মনে করেন, আইনের ২৩০ অনুচ্ছেদটি ইন্টারনেটে বাক্স্বাধীনতা রক্ষায় অপরিহার্য। বিশেষ করে বাক্স্বাধীনতা রক্ষা এবং বিষয়বস্তু বাছাইয়ের (কনটেন্ট মডারেশন) মধ্যে ভারসাম্য আনতে ২৩০ অনুচ্ছেদ তাঁদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। তবে এখানে সবার কথা বলার সুযোগ রাখা উচিত।
আলোচনার মাধ্যমে বড় প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলোকে আইনের নিয়ন্ত্রণে নেওয়া উচিত বলে মনে করেন ফেসবুকের সিইও মার্ক জাকারবার্গ।
তবে এই ২৩০ অনুচ্ছেদে যে পরিবর্তনগুলো প্রস্তাব করা হয়েছে, তাতে বাক্স্বাধীনতা ক্ষুণ্ণ হতে পারে বলে মনে করছেন অনেকে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলো তখন সংবেদনশীল আচরণ করতে পারে বলে অনেকেই মত প্রকাশ করেছেন।
সূত্র: রয়টার্স, দ্য ভার্জ, টেকক্রাঞ্চ