fbpx

কেন নারীকেই বিঁধছে বারবার সাইবার বুলিংয়ের কাঁটা?

Pinterest LinkedIn Tumblr +
Advertisement

সাইবার বুলিংয়ের (অনলাইনে হয়রানি) শিকার হন বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই নারী। কিন্তু এর কারণটা কি ? আর কেনই বা হচ্ছে এমনটা, কারা করছে এসব? অপরিচিত নাকি খুব পরিচিতজনেরা?

নারীর ওপর নিপীড়ন নতুন কোনো ঘটনা নয়। তারা হয়রানির শিকার হন বহু ক্ষেত্রে। কিন্তু সেটা ছিল অন্য পন্থা ! বর্তমানে কিন্তু এখন সোশ্যাল মিডিয়ায় ঘটছে নানা অপরাধমূলক ঘটনা।

রাজধানীতে বসবাসকারী কলেজ পড়ুয়া ছাত্র অরিন (ছদ্মনাম) । তার ক্লাসমেটের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কে জড়ান । বছর খানেক পরই তাদের সম্পর্কের অবনতি ঘটে। এমন কি দুজনার কথা বলা বন্ধ হয়ে যায়। এভাবে কয়েক মাস কেটে গেলে অরিন জড়িয়ে পড়েন অন্য আর একটি সম্পর্কে। তখন তার সাবেক প্রেমিক শাইফুর রহমান (ছদ্মনাম) এই সম্পর্ক না করার জন্য তাকে নানাভাবে জবরদস্তি করেন । তাতে অরিন রাজি না হলে , তাদের আগেকার কাটানো কিছু অন্তরঙ্গ মুহূর্তের ভিডিও ফুটেজ কলেজের বন্ধুদের দেখাতে শুরু করেন শাইফুর। তার ফোন নম্বর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের বিভিন্ন সাইটেও পোস্ট করেন। যার কারনে অরিন নানা ভাবে হেনস্তার হতে থাকে না পেরে, একপর্যায়ে তিনি সিআইডির সাইবার পুলিশ সেন্টারে যোগাযোগ করেন।

অপরাধী অরিনের পরিচিত হওয়ায় পুলিশ শাইফুর রহমান নামের ওই শিক্ষার্থীকে সহজে আটক করে, এবং তাকে দিয়েই আপলোড করা সবকিছু মোছা হয় ।পরে মুচলেকা দিয়ে মুক্ত হলেও এখনও শাইফুলের ওপর নজরদারি রেখেছে সিআইডি।

এক সমীক্ষায় দেখা যায়, দেশের ৬৮ শতাংশ নারী নানাভাবে সাইবার স্পেসে হয়রানির শিকার হন। এদের বেশির ভাগেরই বয়স ১৪ থেকে ২৩ বছরের মধ্যে।সাইবার বুলিংয়ের শিকার হওয়া এই সব তরুণীরা কি তাদের ভুলের কারণেই জড়িয়ে পড়ছেন সোশ্যাল মিডিয়ায় নিপীড়নে?

এক্ষেত্রে পুলিশ বলছে, বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই নারীরা তাদের খুব কাছের মানুষের মাধ্যমেই এ ধরণের হয়রানির শিকার হচ্ছেন।

সিআইডি ও পুলিশ সদর দফতরের সূত্র বলছে, সাইবার বুলিংয়ের শিকার নারীদের কাছ থেকে প্রাপ্ত অভিযোগের মধ্যে পর্নোগ্রাফি, ব্ল্যাকমেইল, ফেসবুক আইডি হ্যাক, অর্থ আদায় এবং হত্যার হুমকি উল্লেখযোগ্য।

নারীদের জন্য পুলিশ সাইবার সাপোর্ট ফর উইমেন ‘পিসিএসডব্লিউ’ ফেসবুক পেজ চালু করা হয়েছে। এতে ইতোমধ্যে ১৭ হাজার ৭০৩টি অভিযোগ জমা পড়েছে। আর ফোনে অভিযোগ করেছেন ৩৮ হাজার ৬১০ ভুক্তভোগী। এর মধ্যে হ্যারাসমেন্টের অভিযোগ ৩৬৫টি। এসব ঘটনায় মামলা হয়েছে ১৮২টি। মামলা নিষ্পত্তি হয়েছে ১১৮টি। বাকিগুলোর তদন্ত চলমান।

পুলিশ সূত্র জানিয়েছে, তাদের কাছে দিনে ২০০ থেকে ২৫০ টি করে অভিযোগ জমা পড়ছে, বেশির ভাগ অভিযোগ আসে ফেসবুকে, এছাড়াও মেইল এবং ফোনে নেয়া হয় অভিযোগ ।এরপর তদন্তের জন্য অফিসার পাঠানো হয় সত্যতা প্রমান হলে মামলা নেয়া হয় । এবং গ্রেফতার করা হয় আসামীকে। তবে পুলিশ বলছে কিছু ক্ষেত্রে অভিযোগ মিথ্যাও হয় ।

আর এ বিষয়ে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আবেগ নিয়ন্ত্রণ করতে না পারা, তুচ্ছ ঘটনায় সম্পর্ক নষ্ট করা, ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম সম্পর্কে সঠিক ধারণা না থাকায় এসব ঘটনা বারবার ঘটছে। তবে শুধু আবেগ নিয়ন্ত্রণ করতে পারলেই এ ধরণের অনেক ঘটনা কমে যাবে বলে মনে করেন তারা।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, অভিযোগের মধ্যে অধিকাংশই প্রেম বা পূর্ব সম্পর্ক কেন্দ্রিক ক্রাইম ।আর এসব ক্ষেত্রে তরুণীদের আরও সচেতন হওয়া প্রয়োজন বলে মনে করেন, সিআইডি সাইবার পুলিশের সেন্টারের অতিরিক্ত ডিআইজি কামরুল আহসান ।

সাইবার ক্রাইমের বিষয়ে পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ড.বেনজির আহমেদ বলেন, ‘এখন পর্যন্ত সাইবার অ্যাক্টে ৬ হাজার ৯৯টি মামলা হয়েছে। এই অপরাধগুলো নিয়ে কাজ করছেন ডিএমপি, ডিবি, সিআইডি এবং পিবিআই।’
সাইবার জগতে প্রবেশের ক্ষেত্রে সবাইকে সচেতন হবার আহবান জানান তিনি।

Advertisement
Share.

Leave A Reply