fbpx

কে এই ঝাও, অস্কার জিতে বিশ্বকে তাক লাগালেন (ভিডিও)

Pinterest LinkedIn Tumblr +
Advertisement

২০১০ সালেই বিশ্ব রেকর্ডটা গড়েছিলেন জেমস ক্যামেরুনের সাবেক স্ত্রী ক্যাথরিন বিগেলো। তবে তার থেকে একধাপ এগিয়ে আছেন বেইজিংয়ের মেয়ে ক্লোয়ি ঝাও। ৯৩ তম একাডেমিক অ্যাওয়ার্ডের আসরে ইতিহাস রচনা করে বিশ্বকে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন তিনি।

এই প্রথম কোনও এশিয়ান নারীর হাতে সেরা পরিচালকের অস্কার উঠল। চীনের চলচ্চিত্র ইতিহাসেও প্রথমবার যুক্ত হলো অস্কার অ্যাওয়ার্ডের নাম। যদিও চীন এই আনন্দকে শিকার করছে না বলেই প্রচার করছে আমেরিকান মিডিয়াগুলো।

তাতে কী? বিশ্ব তো মেতে আছে ৩৯ বছর বয়সী ঝাও এর বন্দনায়। অস্কারে আসার আগেই বিশ্ব চলচ্চিত্র উৎসব মাতিয়ে এসেছেন ‘নোম্যাডল্যান্ড’ দিয়ে। ‘গোল্ডেন গ্লোব’, ‘বাফটা’ তেও সেরা পরিচালকের ট্রফি গিয়েছে তাঁর বাড়িতে।

তবে ঝাওয়ের এই পথ চলা মোটেই সহজ ছিল না। অনেক কাটখোর পুড়িয়েই এতটা পথ আসতে হয়েছে। আসুন ঝাওকে খানিকটা চিনে নেওয়া যাক।

ঝাও এর বাবা উজু ছিলেন চীনের একটি বড় ইস্পাত তৈরির কোম্পানির শীর্ষ কর্তা। যদিও পরে তিনি নিজেকে রিয়েল স্টেট বিজনেসে যুক্ত করেন। আর মা হুয়াং টাও ছিলেন চীনের পিপলস লিবারেশন আর্মির একজন হাসপাতাল কর্মী। যদিও তারা বাবা মায়ের সংসার বেশিদিন টেকেনি। পরে তার বাবা একজন অভিনেত্রীকে বিয়ে করেন। মজার বিষয় হচ্ছে ঝাও যখন ইংরেজি বলতে পারতেন না, সেই ১৫ বছর বয়েসেই তাকে লন্ডনের একটি বোর্ডিং স্কুলে ভর্তি করানো হয়। ফিল্ম দিয়ে বিশ্ব জয় করলেও তিনি গ্র্যাজুয়েশন করেছেন পলিটিক্যাল সায়েন্সে।

বর্তমানে জীবনসঙ্গী জসুয়া। তিনটি মুরগি আর দুটি কুকুর নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ার ওঝাইতে ক্লোয়ি ঝাওয়ের বসবাস।

এতো গেলো ব্যক্তি জীবন, ফিল্ম জীবনটা তাহলে কেমন ছিল? এমন প্রশ্ন থাকতেই পারে? শুনুন তাহলে বলছি, বিখ্যাত চলচ্চিত্র নির্মাতা ওয়াং কর-ওয়াই এর ‘হ্যাপি টুগেদার’ মুভিটা তাকে ফিল্ম মেকার হতে উৎসাহ দিয়েছে বলে জানান এই নির্মাতা। ফিল্ম নিয়ে পড়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে। তিনি আমেরিকান ইন্ডিপেনডেন্ট পরিচালক হিসেবেই পরিচিত। মূলত ভেনিস ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে প্রথমবার ‘নোম্যাডল্যান্ড’ এর প্রদর্শনী হওয়ার পরপরই স্পটলাইটে চলে আসেন ক্লোয়ি। এটি পরিচালক হিসেবে তার তিন নম্বর ছবি। এর আগে ২০১৫ ও ২০১৭ সালে যথাক্রমে তার নির্দেশনায় মুক্তি পেয়েছিল ‘সংস মাই ব্রাদার টট মি’ এবং ‘দ্য রাইডার’। তার পরবর্তী ছবি ‘মার্ভেলস’ এর সুপারহিরোধর্মী ছবি ‘দ্য এটারনার্ল্স’।

যে সিনেমা নিয়ে এতো এতো কথা, এবার আসা যাক সেই সিনেমার গল্পে। কী এমন জাদু ছিল যে কারণে অস্কার জিতল ‘নোম্যাডল্যান্ড’। জানা যায়, সিনেমার গল্প ২০১১ সালের এক যাযাবরকে নিয়ে। হঠাৎ কোম্পানি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় কাজ হারায় ফার্ন। কী করবে, তা ভেবে না পেয়ে একটা ক্যারাভান নিয়ে বেরিয়ে পড়ে অজানার উদ্দেশে। কিছুকাল থেমে একটা চাকরিও করে। আবার এগোয়। কোথাও যেন মন বসে না। ওই ভ্যানগাড়ির ছোট্ট ঘুমানোর জায়গা ছাড়া ঘুমও আসে না। শুধু পথচলাতেই তার আনন্দ। ষাটোর্ধ্ব বিধবা নারী ফার্নের ভূমিকায় দেখা গেছে মার্কিন অভিনেত্রী ফ্রান্সিস ম্যাকডোরম্যান্ডকে। সেরা অভিনেত্রী হিসেবে তিনিও জিতে নিয়েছেন অস্কার।

ক্লোয়ি ঝাও তাঁর অস্কার উৎসর্গ করেছেন তাদের উদ্দেশে, যেসব মানুষের ভেতরে ‘উদার’ মানুষ রয়েছে, এবং যারা অন্য মানুষের ভেতরেও সেই উদারতা দেখতে পায়। আমরাও তেমনটি প্রত্যাশা করি। সিনেমার দুনিয়া হোক উদার মানুষের।

Advertisement
Share.

Leave A Reply