fbpx

গবেষণা প্রবন্ধ সামিয়া রহমান লিখেননি, এমনকি জমাও দেননি!

Pinterest LinkedIn Tumblr +
Advertisement

গবেষণায় নকল করার শাস্তি হিসেবে পদাবনতি সিদ্ধান্তকে ষড়যন্ত্রমূলক দাবি করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সামিয়া রহমান বলেন, তিনি গবেষণায় কোন নকল করেননি। এই অভিযোগ ভিত্তিহীন। তাকে পদাবনতির সিদ্ধান্তের পর চাকরি ছাড়ার হুমকিও দেওয়া হয় বলে জানান তিনি।

আজ সোমবার (১ মার্চ) রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে (ডিআরইউ) এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে এসব কথা বলেন তিনি। এসময় সামিয়া রহমানের সাথে সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, আইনজীবী তুরিন আফরোজ ও বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নাজমুল আহসান কলিমুল্লাহ।

সামিয়া রহমান বলেন, তাকে ষড়যন্ত্র করে অন্যায়ভাবে ফাঁসানো হয়েছে। তিনি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে সুষ্ঠু বিচার পাননি। তাই রাষ্ট্রপতি ও বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্যকে অনুরোধ করেছেন, যেন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে কঠোর নির্দেশ দেওয়া হয় এ বিষয়ে প্রকৃত সত্য উদঘাটন করতে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের এই শিক্ষক বলেন, যে নকলের অভিযোগ তার বিরুদ্ধে দেওয়া হয়েছে, তা তিনি লিখেননি, এমনকি জমাও দেননি। এ বিষয়ে তার কাছে প্রমাণও আছে। তিনি এই ষড়যন্ত্রের পেছনে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কয়েকজন ও বেশকিছু শিক্ষক জড়িত আছেন বলেও ইঙ্গিত দেন। এ বিষয়ে অনুসন্ধান করে তিনি প্রকৃত অপরাধীকে বের করার অনুরোধ জানান সাংবাদিকদের।

উল্লেখ্য, গবেষণায় নকলের অভিযোগে সম্প্রতি শিক্ষক সামিয়া রহমানকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ সহযোগী অধ্যাপক থেকে সহকারী অধ্যাপক পদে পদাবনতি দিয়েছে। শাস্তিস্বরূপ আগামী দুই বছর তিনি পদোন্নতির জন্য আবেদন করতে পারবেন না। তার সাথে শাস্তি পাওয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের আরো এক শিক্ষক প্রভাষক সৈয়দ মাহফুজুল হক মারজান শিক্ষা ছুটি নিয়ে বর্তমানে দেশের বাইরে আছেন। দেশে ফেরার পর তার পদোন্নতি হওয়ার কথা থাকলেও সিন্ডিকেটের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী তার পদোন্নতি না হয়ে আরো দুই বছর প্রভাষক পদে তাকে চাকরি করতে হবে।

তথ্য অনুযায়ী, ২০১৬ সালের ডিসেম্বরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের নিজস্ব জার্নাল সোশ্যাল সায়েন্স রিভিউয়ে সামিয়া ও মারজান দু’জনের লেখা ‘আ নিউ ডাইমেনশন অব কলোনিয়ালিজম অ্যান্ড পপ কালচার : আ কেস স্টাডি অব দ্য কালচারাল ইমপেরিয়ালিজম’ শীর্ষক আট পৃষ্ঠার একটি নিবন্ধ প্রকাশ করা হয়। সে সময় নিবন্ধটির বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠে, ১৯৮২ সালে প্রকাশিত ফরাসি দার্শনিক মিশেল ফুকোর ‘দ্য সাবজেক্ট অ্যান্ড পাওয়ার’ নিবন্ধ থেকে পাঁচ পৃষ্ঠার মতো হুবহু নকল করা হয়েছে। পরবর্তীতে এই গ্রন্থের প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান ইউনিভার্সিটি অব শিকাগো প্রেস ২০১৭ সালের সেপ্টেম্বরে লিখিতভাবে বিষয়টি জানায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে। এমনকি অভিযোগে বলা হয়েছে, ফুকো ছাড়াও নিবন্ধটিতে মার্কিন চিন্তক এডওয়ার্ড সাঈদের ‘কালচার অ্যান্ড ইমপেরিয়ালিজম’ বইয়ের বেশ কিছু পৃষ্ঠাও হুবহু তুলে দেয়া হয়েছে।

এই অভিযোগের ভিত্তিতে ২০১৭ সালের সেপ্টেম্বরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে এ বিষয়ে তদন্তের জন্য একটি কমিটি গঠন করা হয়। কমিটি ২০১৯ সালে তাদের প্রতিবেদনে নকলের অভিযোগের সত্যতা প্রমাণ করে। তবে, কমিটি সে সময় কোন শাস্তির সুপারিশ করেনি। পরবর্তীতে গত বছরের অক্টোবরে সামিয়া-মারজানের শাস্তি নির্ধারণের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সভায় তিন সদস্যের একটি ট্রাইব্যুনাল গঠন করা হয়। ট্রাইব্যুনালে দু’জনের একটি করে ইনক্রিমেন্ট বাতিলের শাস্তি প্রস্তাব করা হলেও বিভিন্ন দিক বিবেচনা করে সিন্ডিকেট সেই প্রস্তাব নাকচ করে দিয়ে তাদের পদাবনতি দিয়েছে।

 

Advertisement
Share.

Leave A Reply