চট্টগ্রাম মহানগরীতে আরও পাঁচটি পয়োঃশোধনাগার নির্মাণ করা হবে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বুধবার দুপুরে চট্টগ্রামের হোটেল রেডিসন ব্লুতে চট্টগ্রাম ওয়াসা বাস্তবায়িত ‘শেখ হাসিনা পানি শোধনাগার-২’-এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে তিনি এ কথা জানান। গণভবন থেকে তিনি এই অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যুক্ত হন।
চট্টগ্রামের পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থায় বিশেষ প্রকল্প নেয়া হয়েছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘মাস্টার প্ল্যান অনুযায়ী চট্টগ্রাম মহানগরীতে পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থা স্থাপন প্রকল্প প্রথম পর্যায় বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। পরবর্তীতে চট্টগ্রাম মহানগরীতে আরও পাঁচটি পয়োঃশোধনাগার নির্মাণ করা হবে। যাতে করে আর মানুষের সমস্যা না থাকে।’
আরেকটি পরিকল্পনার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘আর একটি পরিকল্পনা আছে আমার। মীরসরাই যেমন শিল্পনগরী হয়েছে, একেবারে চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত মেরিন ড্রাইভ নির্মাণ করা। তাহলে চট্টগ্রাম সুরক্ষিত থাকবে, আবার পর্যটনের দিক থেকে সুবিধা হবে। এই চিন্তাটাও আমাদের মাথায় আছে।’
এই প্রকল্প প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘চট্টগ্রামবাসীর পানির প্রাপ্যতা আরও সহজ হবে। মানুষ সুপেয় পানি পাবে। যেটা স্বাস্থ্য সুরক্ষার জন্য বা অন্যান্য কাজের জন্য যথেষ্ট লাভবান হবেন বলে আমি মনে করি।’
তিনি বলেন, ‘এটা আমাদের অব্যাহত রাখতে হবে। জনসংখ্যা বাড়ছে, এ কথা মাথায় রেখেই কিন্তু কাজ করতে হবে। যারাই শিল্প কলকারখানা গড়ে তুলবেন বর্জ্য ব্যবস্থাপনার দিকে অবশ্যই দৃষ্টি দিতে হবে তাদেরকে। কোনোমতেই যেন আমাদের নদীগুলো দূষিত না হয়, এলাকা দূষিত না হয়।’
এই সময় প্রধানমন্ত্রী নদী দূষণ ঠেকাতে সংশ্লিষ্ট সব প্রতিষ্ঠানকে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণে তাগিদ দিয়ে বলেন, ‘কর্ণফুলী নদী, সেখানে যেহেতু ব্যাপকভাবে শিল্পায়ন হচ্ছে, কর্ণফুলী নদী, সাঙ্গু, হালদাসহ যে কটা নদী আছে, এই নদীগুলো যেন কোনোভাবে দূষণ না হয়, এই দূষণের হাত থেকে সেগুলো রক্ষা করতে হবে। কর্ণফুলীর দিকে একটু বিশেষ দৃষ্টি দিতে হবে।’
কর্ণফুলী, সাঙ্গু, হালদাসহ চট্টগ্রামের নদী ও পার্বত্য চট্টগ্রামের শাখা নদীগুলোর বাঁচাতে সব ধরনের দূষণ বন্ধের কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণেও নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী।
ভূমিকম্প প্রবণ বাংলাদেশকে ভূকম্পন থেকে রক্ষায় ভূগর্ভস্থ পানির ওপর নির্ভরশীলতা কমিয়ে ভূ-উপরিস্থ পানির ব্যবহার বাড়াতে এবং বৃষ্টির পানি সংরক্ষণে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণে সংশ্লিষ্ট সবাইকে নির্দেশ দেন সরকারপ্রধান।
তিনি বলেন, ‘একটা কথা মনে রাখতে হবে যে, আমাদের ভূগর্ভস্থ পানির ওপর নির্ভরশীলতা কমিয়ে আনতে হবে। আমরা যে পানি শোধনাগার করছি বিভিন্ন নদী থেকে, সেটা ভূ-উপরিস্থ পানির থেকে শোধন করা হচ্ছে। তাতে ভূগর্ভস্থ পানির ওপর আমাদের নির্ভরতা কমে যাচ্ছে এবং সেটা আমাদের কমাতে হবে।’
যে কোনোভাবে বৃষ্টির পানি সংরক্ষণে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে বলে জানান তিনি। পাশাপাশি বৃষ্টির পানির সঙ্গে বর্ষাকালে নদীর পানিটাও যেভাবেই হোক সংরক্ষণ করতে হবে বলে জানান তিনি।