fbpx

চ্যাম্পিয়ন্স লিগ চ্যাম্পিয়ন চেলসি

Pinterest LinkedIn Tumblr +
Advertisement

‘অপেক্ষার ফল সুমিষ্ট হয়’ -বাংলা প্রবাদ আর যাই হোক, অন্তত খাটে না ম্যানচেস্টার সিটির ক্ষেত্রে। কেনোই বা খাটবে? দীর্ঘ ৫১ বছরের অপেক্ষার পালা শেষ করার সুযোগ, প্রথমবারের মতো উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগের (ইউসিএল) ফাইনালে উঠে সুযোগ ছিল শিরোপা উঁচিয়ে দেখার। সিটি সব সুযোগ হারিয়েছে কাই হাভের্টজের কাছে, এই জার্মান মিডফিল্ডারের গোলে ১-০ ব্যবধানে জয় চেলসির।

ম্যাচের ৩৯ মিনিটের সময় ব্যাথায় কুঁকড়ে, আঁধার ঘেরা মুখে যখন মাঠ ছাড়লেন চেলসির ব্রাজিলিয়ান ডিফেন্ডার থিয়াগো সিলভা, কে ভেবেছিল মিনিট দুয়েক পরে সেই সিলভার মুখেই হাসি ফুটবে? হয়তো সিলভা নিজেও ভাবেননি। থিয়াগো সিলভার টানা দ্বিতীয় ইউসিএল ফাইনাল, হয়তো লিখতে হতো পরপর দুইবার ফাইনাল হারের বেদনার গল্প। তবে হয়নি, দশ বছরের অপেক্ষার অবসান ঘটিয়ে চ্যাম্পিয়ন চেলসি।

চ্যাম্পিয়ন্স লিগ চ্যাম্পিয়ন চেলসি

ছবি: অলরাউন্ডার

ইউরোপ শ্রেষ্ঠত্বের লড়াইয়ে গার্দিওলার আস্থা ৪-৩-৩ ফর্মেশনে, উইংনির্ভর ফুটবলে বিশ্বাসী থমাস তুখেলের পছন্দ ৩-৪-২-১। অল ইংলিশ ক্লাস কিংবা তারুণ্যের গতিময় ফুটবল ছাপিয়ে লড়াইটা ছিল দু’দলের দুই মাস্টার মাইন্ডের। সে লড়াইয়ের শেষ হাসিটা হেসেছেন চেলসির জার্মান কোচ থমাস তুখেল। গত মৌসুমেও ফরাসি ক্লাব পিএসজিকে তুলেছিলেন ফাইনালে, তবে সেবার হাসিটা চওড়া হয়নি।

একটামাত্র জয় সামনে, একটা ট্রফি আর কুড়ি হাজার দর্শক। কিকঅফের বাঁশি বাজার সময়ে সমীকরণটি এমনই ছিল। প্রথমার্ধের প্রায় পুরোটা সময় ছিল ডিফেন্ডারদের। রিয়াদ মাহরেজ-কেভিন ডি ব্রুইনা যদি খাবি খান চিলওয়েল- রোডেগারদের সামনে, মাউন্ট-হাভের্টজদের আক্রমণ ধুলিস্মাৎ করে দিয়েছেন দিয়াস, স্টোনসরা। ডিফেন্ডাররা যতটা আলো ছড়িয়েছেন, স্ট্রাইকাররা ছিলেন ততোটাই নিস্প্রভ। আক্রমণ-প্রতি আক্রমণে দু’দলই নজর কেড়েছে, তবে কাজের কাজটা করেছে চেলসি। প্রথমার্ধের বাকি তখন মিনিট তিনেক, ম্যাসন মাউন্টের অসাধারণ থ্রু বল, ঠান্ডা মাথার ফিনিশে জালের দেখা পান কাই হাভের্টজ। বিরতির বাঁশি যখন বাজালেন স্প্যানিশ রেফারি, বিষন্ন হৃদয়ে হনহন করে ড্রেসিংরুমের দিকে হাঁটলেন পিছিয়ে থাকা তারই স্বদেশী সিটি কোচ পেপ গার্দিওলা।

চ্যাম্পিয়ন্স লিগ চ্যাম্পিয়ন চেলসি

ছবি: অলরাউন্ডার

ম্যাচের তখন ৫৮তম মিনিট বিমূর্ষ চেহারায় মাঠ ছাড়ছেন সিটির সবচেয়ে বড় তারকা বেলজিয়ান মিডফিল্ডার কেভিন ডি ব্রুইনা। ব্রুইনা মাঠ ছাড়লেন,তবে রেখে গেলেন শিরোপা জয়ের স্বপ্ন। সময় যত বেড়েছে ম্যাচের উত্তেজনার পারদ ততো আকাশে চড়েছে। আক্রমণ-প্রতি আক্রমণের পাশাপাশি ফাউলটাও হয়েছে পাল্লা দিয়ে। ৭৩ মিনিটে চেলসির নাম্বার টেন পুলিসিকের একেবারে সহজ সুযোগ নষ্টে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন চেলসি কোচ তুখেল। যেন শিরোপায় চুম্বন আঁকার সুযোগ হাতছাড়া করলেন নিজ হাতে। মিনিট তিনেক পরে পোর্তোর সবুজ গালিচায় সিটির হয়ে শেষবারের মতো তুলির আঁচড় কাটতে প্রবেশ করেন নাম্বার টেন সার্জিও আগুয়েরো। শেষের কবিতা রংধনুর মতো রাঙানোর সুযোগ ছিল আর্জেন্টাইন স্ট্রাইকারের সামনে, নির্ধারিত সময়ের মিনিট পাঁচেক আগে তার ক্রস পায়নি ঠিকঠাক দিশা।

শেষ বাঁশি বাজার যত কাছে এসেছে, সিটির আক্রমণের ধারও ততো বেড়েছে। বড্ড দেরিতে ঘুম ভাঙায় সিটিজেনদের তাই তুলনা করাই যায় কুম্ভকর্ণের সাথে। শেষবাঁশি বাজার মিনিটখানেক আগে রিয়াদ মাহরেজের শট বারের হালকা উপর দিয়ে গেলে নিস্তব্ধতা ভর করে পুরো সিটি গ্যালারিতে। নিস্তব্ধতা, বিষণ্ণতা ভর করেছিল আগুয়েরোর চোখেমুখেও। বেদনার রঙ নাকি নীল হয়, সিটির বেদনার রঙও কি তাহলে নীল?

Advertisement
Share.

Leave A Reply