জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক একটি আলোকচিত্র প্রতিযোগিতার আয়োজন করেছে ব্রিটিশ কাউন্সিল, ব্রিটিশ হাইকমিশন বাংলাদেশ ও ইতালির দূতাবাস। ফটোগ্রাফি প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের নাম মঙ্গলবার একটি ভার্চুয়াল অনুষ্ঠানের মাধ্যমে ঘোষণা করা হয়েছে। যেখানে সহযোগী হিসেবে ছিল দৃক পিকচার লাইব্রেরি বাংলাদেশ, পিকচার পিপল ইউকে ও ইতালির ফন্ডাজিওনি ইউনিভার্ডে।
প্রতিযোগিতায় বিজয়ীরা হলেন- গ্র্যান্ড প্রাইজ বিজয়ী মো. আমদাদ হোসেন, মাই বিউটিফুল প্ল্যানেট ক্যাটাগরিতে বিজয়ী মো. রুবায়েদ ও রানার আপ রাকিবুল আলম খান, প্ল্যানেট ইন ক্রাইসিস ক্যাটাগরিতে বিজয়ী জিয়াউল হক ও রানার আপ জাবেদ হাসনাইন চৌধুরী এবং হোপ ফর দ্য প্ল্যানেট ক্যাটাগরিতে জান্নাতুল মাওয়া (অনারেবল মেনশন)।
‘এ বেটার টুমরো’ প্রতিপাদ্যে আয়োজিত এ প্রতিযোগিতায় আগস্ট মাসে আলোকচিত্র জমা দেওয়ার জন্য উন্মুক্ত ছিল। মাই বিউটিফুল প্ল্যানেট (আমার সুন্দর পৃথিবী), প্ল্যানেট ইন ক্রাইসিস (সঙ্কটে পৃথিবী) ও হোপ ফর দ্য প্ল্যানেট (পৃথিবীর জন্য আশা)- এ তিনটি ক্যাটাগরিতে সারাদেশ থেকে ৪৩৩ জন তরুণ প্রায় ২১০০’টি ছবি জমা দেয়। বাংলাদেশ, যুক্তরাজ্য ও ইতালির আন্তর্জাতিকভাবে সম্মানিত বিচারকদের একটি প্যানেল এর থেকে ৩০ জন ফাইনালিস্টকে বাছাই করেন এবং সবশেষে তা থেকে থেকে চূড়ান্ত বিজয়ীদের নাম ঘোষণা করেন।
ভার্চুয়ালি আয়োজিত অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশে নিযুক্ত ব্রিটিশ হাইকমিশনার এইচ ই রবার্ট চ্যাটারটন ডিকসন, বাংলাদেশে নিযুক্ত ইতালির রাষ্ট্রদূত এইচ ই এনরিকো নুনজিয়াতা, ব্রিটিশ কাউন্সিল বাংলাদেশের পরিচালক টম মিশশা, দৃক পিকচার লাইব্রেরি লিমিটেড বাংলাদেশের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শহিদুল আলম ও ইতালির ফন্ডেজিয়ন ইউনিভার্ডের পরিচালক জিউসেপে দি ডিউকা।
বাংলাদেশে নিযুক্ত ব্রিটিশ হাইকমিশনার এইচ ই রবার্ট চ্যাটারটন ডিকসন বলেন, ‘জলবায়ু পরিবর্তনের ভয়াবহতা এখন আমাদের চারপাশে বিদ্যমান এবং গ্লাসগোতে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া কপ২৬ র্শীষ সম্মলেনই বিশ্বব্যাপী তাপমাত্রা বৃদ্ধি ১.৫ ডিগ্রি রাখতে সারা বিশ্বের নেতৃবৃন্দের একত্রিত হবার শেষ সুযোগ। ব্রিটিশ কাউন্সিল, ব্রিটিশ হাইকমিশন বাংলাদেশ ও ইতালির দূতাবাসের উদ্যোগে আয়োজিত এই আলোকচিত্র প্রতিযোগিতা বাংলাদেশের তরুণদের জলবায়ু ও পরিবেশ বিষয়ক সঙ্কট মোকাবিলায় তাদের চিন্তাভাবনা ও দৃষ্টিভঙ্গি ফুটিয়ে তোলার সুযোগ করে দিয়েছে। তরুণদের তোলা ছবিগুলো সত্যিই আকর্ষণীয় ও তাৎপর্যপূর্ণ। বৃহত্তর যুক্তরাজ্য-ইতালি জলবায়ু অংশীদারিত্বের অংশ হিসেবে আয়োজিত হওয়া এ প্রদর্শনীকে সমর্থন করতে পেরে আমি আনন্দিত।’
বাংলাদেশে নিযুক্ত ইতালির রাষ্ট্রদূত এইচ ই এনরিকো নুনজিয়াতা বলেন, ‘বাংলাদেশে পরিচালিত হওয়া এ প্রতিযোগিতার ম‚ল লক্ষ্য হল গ্লাসগোতে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া সম্মেলনের প্রতিনিধিদের কাছে নির্বাচিত ছবিগুলো তুলে ধরে, বৈশ্বিক জরুরি অবস্থা হিসেবে জলবায়ু পরিবর্তন সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি করা। ২৮ সেপ্টেম্বর থেকে ২ অক্টোবর পর্যন্ত মিলানের মিট ডিজিটাল কালচার সেন্টারে ৩০ জন ফাইনালিস্টের একটি ডিজিটাল প্রদর্শনী আয়োজন করা হয়েছে। এটি প্রাক-কপ ইয়ুথ-ফর-ক্লাইমেট সম্মেলনের সাথে একত্রে আয়োজিত হবে এবং বিশ্বের প্রায় ৪০০ তরুণ প্রতিনিধি এ প্রদর্শনীতে অংশগ্রহণ করবে।’
এ বিষয়ে ব্রিটিশ কাউন্সিল বাংলাদেশের পরিচালক টম মিশশা বলেন, ‘এ আয়োজনে আমরা যে পরিমাণ সাড়া ও মানসম্মত আলোকচিত্র পেয়েছি, এর মাধ্যমেই অনুধাবন করা যায় যে, জলবায়ু পরিবর্তনের মতো বৈশ্বিক সম্মিলিত চ্যালেঞ্জ সম্পর্কে সচেতনতা তৈরির ক্ষেত্র শিল্প একটি গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম। এটি অত্যন্ত আনন্দের বিষয় যে, বাংলাদেশের বহু তরুণ এ উদ্যোগে অংশগ্রহণ করেছে। মূলত, তরুণ প্রজন্মই জলবায়ু পরিবর্তনের সমস্যা সমাধানে নেতৃত্ব দিবে, যা আমাদের সবাইকে উপকৃত করবে।’
নভেম্বর মাসে ব্রিটিশ কাউন্সিল ও এর অংশীদারদের বিজয়ীদের জন্য পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠান আয়োজন করার পরিকল্পনা রয়েছে বলে জানা গেছে।