মোবাইল ব্যাংকিং সেবার করপোরেট কর কমানো, কালো টাকা সাদা করার বিশেষ সুযোগ, শিল্পের কাঁচামাল ক্রয়ে ক্রসচেকে লেনদেনের শর্ত শিথিল করাসহ বেশ কিছু সুবিধা রেখে সংসদে ২০২১-২২ অর্থবছরের অর্থ বিল পাস করা হয়েছে।
জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে মঙ্গলবার (২৯ জুন) কণ্ঠভোটে এ বিল পাস হয়। বিল পাসের আগে ২০২১-২২ অর্থবছরের জন্য প্রণীত বাজেটের ওপর সমাপনী বক্তব্য রাখেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। এসময় অর্থবিলের ওপর আনা কয়েকটি সংশোধনী প্রস্তাব গ্রহণ করা হয়। বাকিগুলো কণ্ঠভোটে বাতিল হয়ে যায়।
প্রস্তাবিত বাজেটে ব্যাংক, বীমা ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের মতো পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানির ক্ষেত্রে মোবাইল ব্যাংকিং সেবার করপোরেট কর ৩৭ দশমিক ৫০ শতাংশ এবং তালিকাবহির্ভূত কোম্পানির ক্ষেত্রে ৪০ শতাংশ করা হয়। তবে এখন তা কমিয়ে ৩০ শতাংশ করা হয়েছে।
দেশে বর্তমানে ১৫টি মোবাইল ব্যাংকিং সেবা চালু রয়েছে। যেগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো- বিকাশ, রকেট, এম ক্যাশ, শিওর ক্যাশ, ইউক্যাশ, মোবাইল মানি, নগদ ও উপায়। বাংলাদেশ ব্যাংক ২০১০ সালে মোবাইল ব্যাংকিং কার্যক্রম শুরু করে।
কর্মীদের বেতন পরিশোধে এবারের অর্থবিলে নতুন নিয়ম আনা হয়েছে। বিদ্যমান আয়কর অধ্যাদেশে কর্মীদের বেতনভাতা ও সম্মানীর পরিমাণ ১৫ হাজার টাকার বেশি হলে তা ক্রসচেক বা ব্যাংক ট্রান্সফারের মাধ্যমে করার বিধান রয়েছে। আর আয় হিসেবে গণ্য করলে তা করযোগ্য হয়ে যায়। সংশোধিত অর্থবিলে এই সীমা ১৫ হাজার টাকা থেকে বাড়িয়ে ২০ হাজার টাকা করা হয়েছে।
২০২১-২০২২ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে করোনার প্রেক্ষাপটে শিল্প বিনিয়োগকে চাঙা করতে নানা করছাড় দেয়া হয়। এর মধ্যে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত এবং তালিকাবহির্ভূত কোম্পানির করপোরেট কর হ্রাস, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের টার্নওভারের ওপর ন্যূনতম কর হ্রাস, এক ব্যক্তির কোম্পানির করপোরেট কর হ্রাস, আইটি ও লাইট ইঞ্জিনিয়ারিং খাতে কর অবকাশ সুবিধা এবং ভ্যাটের আগাম কর হ্রাস করাসহ অন্যান্য।
এছাড়া বিনিয়োগ সহজ এবং উৎসাহী করতে শিল্পের কাঁচামাল কেনার ক্ষেত্রে ক্রসচেকের শর্ত শিথিল করা হয়েছে। বর্তমানে ৫০ হাজার টাকার বেশি কাঁচামাল কিনলে সে ক্ষেত্রে চেকে লেনদেনের বিধান চালু আছে। আর বর্তমানে এটি বাড়িয়ে পাঁচ লাখ টাকা করা হয়েছে। এখন থেকে পাঁচ লাখ টাকার কম টাকার কাঁচামাল কিনলে চেকে লেনদেনের বাধ্যবাধকতা থাকছে না। ফলে শিল্প উদ্যোক্তারা কিছুটা হলেও স্বস্তি পাবেন।