জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক এবং নাট্যব্যক্তিত্ব ড. আফসার আহমেদ মারা গেছেন। শনিবার (৯ অক্টোবর) দুপুর একটায় জাতীয় হৃদরোগ হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়।
বর্তমানে তার মরদেহ আল-মারকাজুল ইসলামীতে আছে। সেখানে গোসল করিয়ে তার মরদেহ নেয়া হবে কর্মস্থল জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে। সেখানেই এশার নামাজের পর জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। আগামীকাল মানিকগঞ্জের সিংগাইর উপজেলার জামসায় তাকে দাফন করা হবে।
জাবির সাবেক শিক্ষার্থী কমলেশ রায়ের বিয়ে উপলক্ষে বৃহস্পতিবার রাতে তিনি খুলনায় গিয়েছিলেন। শুক্রবার কমলেশের বিয়ের আশীর্বাদে অংশ নেন এই অধ্যাপক।
তার এক সাবেক শিক্ষার্থী জানান, শনিবার সকালে খুলনা থেকে যশোর গিয়ে সাড়ে ১০টার ফ্লাইটে ঢাকার উদ্দেশে রওনা হন তিনি। কিন্ত বিমানেই তার হার্ট অ্যাটাক হয়। ঢাকায় আনার পর তাকে জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউটে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানকার কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
মৃত্যুর সময় তার বয়স হয়েছিল ৬২ বছর। তিনি মানিকগঞ্জের সিঙ্গাইর উপজেলার উত্তর জামশা গ্রামে ১৯৫৯ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর জন্মগ্রহণ করেন।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা ভাষা ও সাহিত্য বিভাগ থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পরীক্ষায় প্রথম শ্রেণিতে প্রথম স্থান অধিকার করেন আফসার। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ‘মধ্যযুগের বাংলা আখ্যান কাব্যের আলোকে বাংলাদেশের নৃগোষ্ঠী নাট্য’ শীর্ষক অভিসন্দর্ভের জন্য তাকে পিএইচডি ডিগ্রি দেয়া হয়।
কর্মজীবনের শুরুতে তিনি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগে প্রভাষক হিসেবে শিক্ষকতা শুরু করেন। পরবর্তীতে তিনি ১৯৮৬-৮৭ শিক্ষাবর্ষে নাট্যকার ড. সেলিম আল দীনের সঙ্গে যুক্ত হয়ে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলাদেশের প্রথম পূর্ণাঙ্গ ‘নাটক ও নাট্যতত্ত্ব’ বিভাগ প্রতিষ্ঠা করেন।
প্রতিষ্ঠাকাল থেকে তিনি নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগের শিক্ষক ছিলেন। তিনি বিভাগের সভাপতি, বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা ও মানবিক অনুষদের ডিন, প্রক্টর, সিনেট-সিন্ডিকেটের নির্বাচিত সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
একাধারে এই অধ্যাপক কবি, নাট্যকার, অনুবাদক, গবেষক ও সাহিত্য সমালোচক ছিলেন।