fbpx

টিপু হত্যাকাণ্ডে ১৫ লাখ টাকার চুক্তি, মাস্টারমাইন্ডসহ ৪ জন গ্রেফতার

Pinterest LinkedIn Tumblr +
Advertisement

রাজধানীর শাহজাহানপুরে বহুল আলোচিত জাহিদুল ইসলাম টিপু এবং সামিয়া আফরান প্রীতি হত্যাকাণ্ডের অন্যতম মাস্টারমাইন্ড ৪ জনকে আটক করেছে র‍্যাব।

গতকাল ১ এপ্রিল (শুক্রবার) রাতে র‍্যাব সদর দপ্তরের গোয়েন্দা শাখা ও র‍্যাব-৩ এর অভিযানে রাজধানীর মুগদা, শাহজাহানপুর ও মিরপুর এলাকা হতে ঘটনার অন্যতম পরিকল্পনাকারী ওমর ফারুক, আবু সালেহ শিকদার ওরফে (শুটার সালেহ), মোঃ নাছির উদ্দিন ওরফে (কিলার নাছির) এবং মোঃ মোরশেদুল আলমকে আটক করা হয়।

এসময় তাদের কাছ থেকে হত্যার সময় ব্যবহৃত মোটর সাইকেল এবং এই কাজে প্রদান যোগ্য ৩ লক্ষ ৩০ হাজার টাকা ও মোবাইলসহ অন্যান্য সামগ্রী উদ্ধার করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃতরা তাদের হত্যাকাণ্ডের পরিকল্পনায় সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার করেছে বলে জানায় র‍্যাব।

এর আগে গত ২৪ মার্চ (বৃহস্পতিবার) রাত সাড়ে দশটার দিকে দুস্কৃতিকারীর গুলিতে নিহত হন জাহিদুল ইসলাম টিপু। এছাড়া ঘটনাস্থলে নিহত হন কলেজ ছাত্রী প্রীতি। এ ঘটনায় নিহত জাহিদুল ইসলাম টিপুর স্ত্রী ফারহানা ইসলাম ডলি শাহজাহানপুর থানায় একটি মামলা রুজু করেন।

গ্রেফতারকৃতরা হত্যাকাণ্ডের মোটিভ বা উদ্দেশ্য সম্পর্কে র‍্যাবকে জানায়, দীর্ঘদিন যাবৎ নিহত টিপু ও হত্যার পরিকল্পনাকারীদের মধ্যে বিরোধ চলছিল। মতিঝিল এলাকার চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি, স্কুল-কলেজের ভর্তি বাণিজ্য, বাজার নিয়ন্ত্রণ, আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দ্বন্দ্ব-সংঘাত চলমান ছিল। তারই রেশ ধরে হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়।

গ্রেফতারকৃতরা আরও জানায় যে, মিল্কী হত্যাকাণ্ডের সাথে টিপুর সম্পৃক্ততা রয়েছে মর্মে গ্রেফতারকৃত ওমর ফারুক, পলাশসহ একটি পক্ষ মানববদ্ধন, আলোচনা সভা, পোস্টার লাগানো ইত্যাদি কার্যক্রম পরিচালনা করে। এছাড়া বাদীর মাধ্যমে চার্জশিটের নারাজী প্রদানের মাধ্যমে চেষ্টা চালায় এর ফলে তথাপি জাহিদুল ইসলাম টিপু মামলা হতে অব্যাহতি পায়।

পরবর্তীতে গ্রেফতারকৃত ওমর ফারুক ও অন্যান্য সহযোগীরা স্বার্থগত দ্বন্দের কারণে টিপুর অন্যতম সহযোগী রিজভী হাসানকে ২০১৬ সালে হত্যা করে। বর্তমানে রিজভী হাসান হত্যাকাণ্ডটি দ্রুত বিচার ট্রাইবুনালের মাধ্যমে বিচার কার্য শুরু হয়।

তারা জানায়, তাদের ধারণা প্রতিপক্ষ টিপুর কারণেই রিজভী হাসান হত্যাকাণ্ডটি দ্রুত বিচার ট্রাইবুনালে স্থানান্তরিত হয়েছে। ইতোমধ্যে মামলার বাদী রিজভী হাসান বাবুর পিতা আবুল কালামের সাথে গ্রেফতারকৃত ওমর ফারুক ও তার সহযোগীরা ৫০ লক্ষ টাকায় দফারফা করার চেষ্টা করে। তথাপিও জাহিদুল ইসলাম টিপুর কারণে কালাম মিমাংসায় আসেনি বলে জানায় গ্রেফতারকৃতরা।

এদিকে জাহিদুল ইসলাম টিপু কালামকে নিয়ে সার্বক্ষণিক চলাচল করতে থাকে। তারা এক পর্যায়ে কালামকে হত্যা করার পরিকল্পনা করে, কিন্তু জাহিদুল ইসলাম টিপুর সাথে চলাচল করার কারণে তা সম্ভব হয়নি। অতঃপর তারা যখন দেখল কালামের সাক্ষ্য গ্রহন শেষ হয়ে যায় তখন তারা জাহিদুল ইসলাম টিপুকে হত্যার পরিকল্পনা করে যাতে মামলা পরিচালনা ধীরগতি করা যায়। তাদের ধারণা বাদী কালাম একা মামলাটি সঠিকভাবে পরিচালনা করতে সক্ষম হবে না। এরই প্রেক্ষিতে প্রায় ৩ মাস আগে সাক্ষ্য শেষে আদালত চত্ত্বর এলাকায় হত্যাকাণ্ডের সংগঠনের প্রাথমিক আলোচনা করে।

টিপু দেশে খুন হলেও এর নিয়ন্ত্রণ করা হয় দুবাই থেকে। দেশ হতে নাছির উদ্দিন  (কিলার নাছির), মোরশেদুল আলম  কাইল্লা পলাশসহ আরোও কয়েকজন জাহিদুল ইসলাম টিপুর অবস্থান সম্পর্কে বেশ কয়েকদিন যাবত মুসার কাছে তথ্য প্রেরণ করত। ঘটনার দিন সন্ধ্যার পর গ্রেফতারকৃত মোঃ নাছির উদ্দিন (কিলার নাছির) আনুমানিক চারবার জাহিদুল ইসলাম টিপুর অবস্থান সম্পর্কে মুসাকে অবহিত করে। পরবর্তীতে জাহিদুল ইসলাম টিপুর গ্রান্ড সুলতান রেস্টুরেন্ট হতে বের হওয়ার সময় মোঃ মোরশেদুল আলম (কাইল্লা পলাশ) তাকে নজরদারিতে রাখে এবং তার অবস্থান সম্পর্কে সে ফ্রিডম মানিককে অবহিত করে। বর্ণিত অবস্থান সম্পর্কে জানানোর প্রেক্ষিতে আনুমানিক রাত ২২ টা ৩০ ঘটিকায় আন্ডার ওয়ার্ল্ড এর তত্ত্বাবধানে কিলার কর্তৃক হত্যাকাণ্ডটি সংগঠিত হয় বলে জানায় তারা।

টিপু হত্যাকাণ্ডের জন্য ১৫ লক্ষ টাকার চুক্তি করা হয়।

Advertisement
Share.

Leave A Reply