fbpx

ট্রাফিক বক্সে নেই টয়লেট, পানি পানে ভয় নারী ট্রাফিক পুলিশদের!

Pinterest LinkedIn Tumblr +
Advertisement

রাষ্ট্রের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ন দায়িত্ব যাদের উপর, সেই ট্রাফিক পুলিশের দায়িত্ব পালনের সময়টা হওয়া চাই নিরাপদ। সকাল সাতটা থেকে রাত ১১টা, দুই শিফটের যেকোন এক শিফটে টানা আট ঘন্টার ঠাঁয় দাঁড়িয়ে থেকে সড়ক পথে অন্যের যাত্রাকে নির্বিঘ্ন রাখতে মাথার ঘাম পায়ে ফেলছেন ট্রাফিক পুলিশ।

সময়মত নাস্তা কিংবা দুপুরের খাবার কোনটাই ঠিক থাকেনা তাদের। কাঠফাটা গরমে হাঁপিয়ে উঠলেও নারী পুলিশের পানি পানে থেকে যায় ভয়। এই বিড়ম্বনার অন্যতম কারন রাজধানীর বেশিরভাগ ট্রাফিক পুলিশ বক্সেই নেই টয়লেটের ব্যবস্থা।

ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশে কাজ করছেন ১ হাজার ৩২৫ জন নারী। এরমধ্যে রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে সার্জেন্টের কাজ করছেন ৩৫ জন নারী পুলিশ। সার্জেন্টদের পাশাপাশি ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণে দায়িত্ব পালন করছেন নারী কনস্টেবলরাও। ট্রাফিক পুলিশ বক্সে টয়লেট না থাকায়, বাধ্য হয়েই ডিউটি স্থানের আশপাশের হাসপাতাল, মার্কেট বা বিভিন্ন অফিসের ওয়াশরুম খুঁজে বের করে, জরুরি প্রয়োজনে সেখানে যেতে হয় তাদের। অনেকসময় বিব্রতকর পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে হয় নারী পুলিশ সার্জেন্টদের।

ফার্মগেটে হলিক্রস কলেজের সামনে দায়িত্ব পালন করছেন পুলিশ সার্জেন্ট মার্জিয়া সুলতানা। ৪ বছরেরও বেশি সময় ধরে এই পেশায় আছেন। বিবিএস বাংলাকে তিনি বলেন, ‘টয়লেট নিয়ে আমাদের নানা সময় নানা ঝামেলায় পড়তে হয়। যেখানে ডিউটি পরে তার আশপাশের মার্কেট, হোটেল, হাসপাতাল যেখানেই হোক আমাদের ম্যানেজ করে নিতে হয়। অনেক সময় মানুষের বাজে আচরণ দেখতে হয়। তাছাড়া অস্বস্তি তো আছেই।’

রাজধানীর তিব্বত মোড়ে গিয়ে দেখা গেলো সার্জেন্ট শিল্পী আক্তার নাস্তা খাচ্ছেন। পানি খেলেন দুই চুমুক। জিজ্ঞেস করতেই বললেন, ‘পুলিশ বক্সে টয়লেট নেই। বাথরুম চাপলে একটু দূরে তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানায় যেতে হয়। ৬ বছর ধরেই এই প্রফেশনে আছি।  প্রথম দিকে অনেকটাই অসুবিধা হতো। এখন মানিয়ে নিয়েছি। তবু যদি আমাদের বক্সেই টয়লেট থাকতো, অনেক বেশি উপকার হতো।’

মানিক মিয়া এভিনিউ পয়েন্টে গিয়ে পাওয়া গেল পুলিশ সার্জেন্ট সামিনা আক্তারকে। টয়লেটের কথা জিজ্ঞেস করতেই বললেন, ‘মাসের অন্যান্য সময়ে আমরা কোনরকমে ম্যানেজ করে নেই। কিন্তু মাসের একটা বিশেষ সময় মানে ঋতু চলাকালীন সময়ে হাসপাতাল বা অন্য কোনও টয়লেট ব্যবহার করা অস্বস্তিকর। পুলিশ বক্সে আলাদা টয়লেট থাকলে আমাদের সবার জন্যেই ভালো হতো।’

আসাদগেট ট্রাফিক সিগন্যালে কাজ করছেন সার্জেন্ট পূজা গুপ্তা। বললেন, ‘টয়লেট নিয়ে শুধু নারী পুলিশেরাই ভোগান্তি পোহাচ্ছে তা নয়, পুরুষ সহকর্মীরাও বিড়ম্বনার শিকার হচ্ছেন। কাছাকাছি টয়লেট না থাকলে দেখা গেল অনেক দূরে যেতে হচ্ছে। যেতে আসতে যে সময়টা লাগে, তাতে ফিরে এসে দেখি রাস্তায় অনেক জ্যাম পড়ে গেছে। বক্সেই যদি একটা টয়লেট থাকতো তাহলে, এই সময়টাও বেঁচে যেতো।’

ট্রাফিক বক্সে টয়লেটের সমস্যা সমাধানে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন, এরইমধ্যে নানা উদ্যোগ নেওয়ার কথা জানিয়েছে। এবিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেন, ‘পুলিশ বক্সে টয়লেট নির্মাণের বিষয়ে নানা সময় সিটির পুলিশেরা আমাদের অবহিত করেছেন। ইতিমধ্যে আমরা কাজ শুরুও করেছি। গুলশানে আধুনিক সুবিধা সম্বলিত একটি টয়লেটও নির্মাণ করেছি। পর্যায়ক্রমে আমরা আরাও টয়লেট নির্মাণ করবো। আমাদের হাতে টাকা আছে, কিন্তু সমস্যা হলো জায়গার অভাব। স্থান সংকুলানে পরিকল্পনা অনুযায়ী আমরা কাজ করতে পারছি না।’

উত্তর সিটির অভিভাবক কিছু সমস্যার কথা বলছেন, আবার উত্তরনের পথও খুঁজছেন। শুধু সিটি মেয়ের দিকে তাকিয়ে থেকে নয়, ট্রাফিক বক্সগুলোতে টয়লেট স্থাপনে সংশিষ্ট বিভাগেরও দায়িত্ব থেকে যায়, বলছে সিটি করপোরেশন।

Advertisement
Share.

Leave A Reply