দেশের বাজারে আবারও বাড়লো ডলারের দাম। ফলে টাকার মান কমলো আরও এক দফা। মঙ্গলবার (২১ জুন) প্রতি ডলার ৯২ টাকা ৯০ পয়সা দরে বিক্রি করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। সোমবার ডলারের দর ছিল ৯২ টাকা ৮০ পয়সা। সে হিসেবে টাকার মান কমলো ১০ পয়সা।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক বলছে, গত দুই মাসের ব্যবধানে ডলারের দাম বেড়েছে ১০ বার। আর টাকার মান কমেছে ৬ টাকা ৭০ পয়সা। আন্তব্যাংক মুদ্রাবাজারে এখন প্রতি ডলার কিনতে খরচ করতে হবে ৯২ টাকা ৯০ পয়সা।
গত মাসে ডলারের দাম বেড়ে খোলাবাজারে সেঞ্চুরি হাঁকিয়েছিল। পরে কিছুটা কমে এখন খোলবাজারে ৯৭ থেকে ৯৯ টাকায় ডলার বেচাকেনা হচ্ছে।
বাংলাদেশ ব্যাংক বলছে, ২০২০ সালের জুলাই থেকে গত বছরের আগস্ট পর্যন্ত আন্তব্যাংক মুদ্রাবাজারে ডলারের দাম ৮৪ টাকা ৮০ পয়সায় স্থিতিশীল ছিল। কিন্তু এরপর থেকে বড় ধরনের আমদানি ব্যয় পরিশোধ করতে গিয়ে ডলারের সংকট শুরু হয়।
চলতি বছরের ৬ জানুয়ারি পর্যন্ত আন্তব্যাংক মুদ্রাবাজারে প্রতি ডলার কেনাবেচা হয়েছিল ৮৫ টাকা ৮০ পয়সা। ৯ জানুয়ারি যা বেড়ে দাঁড়ায় ৮৬ টাকায়।
এরপর গত ২৩ মার্চ তা বেড়ে ৮৬ টাকা ২০ পয়সায় গিয়ে ঠেকে। পরে গত ২৭ এপ্রিল ডলার প্রতি ২৫ পয়সা বেড়ে হয় ৮৬ টাকা ৪৫ পয়সা। ১০ মে ডলার প্রতি আরও ২৫ পয়সা বেড়ে ৮৬ টাকা ৭০ পয়সায় ডলার কেনাবেচা হয়। এরপর ১৬ মে ডলারের দাম ৮৭ টাকা ৫০ পয়সা নির্ধারণ করে দেয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক। কিন্ত ২৩ মে আবারও ৪০ পয়সা বাড়িয়ে ডলারের দাম ৮৭ টাকা ৯০ পয়সা নির্ধারণ করা হয়।
পরে ২৯ মে বাংলাদেশ ব্যাংক আন্তব্যাংক মুদ্রাবাজারে ডলারের দাম ৮৯ টাকা বেঁধে দেয়। তবে ২ জুন আরও ৯০ পয়সা বাড়িয়ে ডলারের দাম ৮৯ টাকা ৯০ পয়সা নির্ধারণ করা হয়। ১৫ জুন ডলারের দাম ছিল ৯২ টাকা ৮০ পয়সা। আর মঙ্গলবার (২১ জুন) দাম আরো বেড়ে ১ মার্কিন ডলার বিক্রি হয়েছে ৯২ টাকা ৯০ পয়সায়।
টাকার মান যত কমবে, আমদানি ব্যয় তত বাড়বে। ফলে লাভ হবে রপ্তানিকারকদের। মূলত রপ্তানিকারকদের সুবিধা দিতে স্থানীয় মুদ্রার অবমূল্যায়ন করা হয়। দীর্ঘদিন ধরে রপ্তানিকারকরা ডলারের বিপরীতে টাকার মান অবমূল্যায়নের দাবি জানিয়ে আসছিল।
তবে এভাবে যদি টাকার মান কমতে থাকে, এর ভয়ঙ্কর প্রভাব পড়বে আমদানি খাতে। এরই মধ্যে আমদানি পণ্যের দাম ও জাহাজভাড়া বেড়ে যাওয়ায় আমদানি ব্যয় বেড়েছে প্রায় ৪৪ শতাংশ। রপ্তানি ও প্রবাসী আয় দিয়ে সে খরচ মেটানো যাচ্ছে না। ফলে বাজারে ডলার সংকট দেখা গেছে। এমন পরিস্থিতিতে রিজার্ভ থেকে ডলার বিক্রি করছে বাংলাদেশ ব্যাংক।