fbpx

ঢাকার ৮৪% ট্রাফিক পুলিশ ভুগছেন শ্বাসতন্ত্রের সমস্যায়

Pinterest LinkedIn Tumblr +
Advertisement

ঢাকার বিভিন্ন এলাকার দয়িত্ব পালনরত ট্রাফিক পুলিশ সদস্যদের ৮৪ শতাংশ শ্বাসতন্ত্রের বিভিন্ন সমস্যায় ভুগছেন। জার্নাল অব মেডিকেল সায়েন্স অ্যান্ড ক্লিনিক্যাল রিসার্চে প্রকা‌শিত এক গবেষণাপত্রে এ তথ্য উ‌ঠে এসেছে।

সম্প্রতি ট্রাফিক এয়ার পলিউশন অ্যান্ড রেসপিরেটরি হেলথ (অ্যা ক্রস) -সেকশনাল স্টাডি অ্যামং ট্রাফিক পুলিশ ইন ঢাকা সিটি (বাংলাদেশ) শীর্ষক এক গবেষণায় এমন তথ্য উঠে এসেছে বলে জানানো হয়।

তাদের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, একটি গবেষক দল রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে দায়িত্বে থাকা ৩৮৪ জন ট্রাফিক পুলিশ সদস্যের শ্বাসতন্ত্রের সমস্যা-সংক্রান্ত বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহ করে। সংগৃহীত তথ্যের বিশ্লেষণে দেখা যায়, ট্রাফিক পুলিশের সদস্যদের মধ্যে ৮৪ শতাংশই শ্বাসপ্রশ্বাসজনিত নানা সমস্যায় ভুগছেন।

গবেষক দলের অন্যতম  সদস্য হিসেবে ছিলেন রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইডিসিআর) রিসার্চ ফিজিশিয়ান ডা. সাকিলা ইয়াসমিন। তিনি জানান, গবেষণার জন্য নগরীর বিভিন্ন পয়েন্টের ট্রাফিক পুলিশের সদস্যদের কাছ থেকে নমুনা সংগ্রহ করা হয়। তার মধ্যে মহাখালী থেকে উত্তরা পর্যন্ত সড়কের বিভিন্ন মোড়ে দায়িত্বরত ট্রাফিক পুলিশের সাক্ষাত্কার গ্রহণ করা হয়। কিন্তু এদের শ্বাসতন্ত্রের সমস্যা বিষয়ে জানার জন্য তাদের কাছ থেকে কাশি, কফ, নাক দিয়ে পানি পড়া, গলা বন্ধ থাকা ও শ্বাসতন্ত্রের বিভিন্ন ধরনের তথ্য সংগ্রহ করা হয়। পরবর্তী সময়ে এসব তথ্য পর্যালোচনায় দেখা যায়, গবেষণায় অংশ নেয়া অধিকাংশ পুলিশ সদস্যই শ্বাসতন্ত্রের সমস্যায় ভুগছেন।

এসময় গবেষক দল নমুনা সংগ্রহের পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট সড়কের মোড়গুলোয় বাতাসে পিএম ২.৫ ও পিএম ১০-এর মাত্রা পরিমাপ করে। দেখা গেছে যেসব এলাকায় পিএম ২.৫ ও পিএম ১০-এর মাত্রা বেশি, সেসব এলাকার ট্রাফিক পুলিশের মধ্যে শ্বাসতন্ত্রের সমস্যায় ভোগার হারও বেশি। পরে গড় করে স্থানগুলোর বাতাসের মান নির্ণয় করা হয়। এ তথ্য থেকে নিশ্চিত হওয়া গেছে, উচ্চমাত্রার পিএম ২.৫ ও পিএম ১০ রয়েছে এমন স্থানে দায়িত্ব পালন করা পুলিশ সদস্যদের শ্বাসপ্রশ্বাস-সংক্রান্ত সমস্যার হারও অনেক বেশি।

এছাড়া শ্বাসতন্ত্রের সমস্যায় ভোগা ট্রাফিক পুলিশ সদস্যদের মধ্যে ধূমপান-সংক্রান্ত তথ্যও সংগ্রহ করেছে গবেষক দল। বায়ুদূষণের কারণে তৈরি হওয়া শ্বাসতন্ত্রের সমস্যা ধূমপায়ী ও অধূমপায়ী পুলিশ সদস্যদের মধ্যে প্রায় একই। ধূমপায়ী ট্রাফিক পুলিশ সদস্যদের মধ্যে শ্বাসতন্ত্রের সমস্যায় ভোগার হার ৮৫ দশমিক ৫ শতাংশ। আর অধূমপায়ীদের মধ্যে এ হার ৮৩ দশমিক ২ শতাংশ।

কিন্তু সাক্ষাত্কার দেওয়া অনেক পুলিশ সদস্যই বলছেন, রাজধানীতে আসার আগে শ্বাসতন্ত্রের সমস্যা ছিল না। তারা আরও বলেন চাকরিতে যোগদানের আগেও শ্বাসজনিত কোনো সমস্যা ছিল না। এখন প্রায় সময় শ্বাস নিতে সমস্যা অনুভূত হচ্ছে।

দিনের দীর্ঘ একটি সময় ধরে রাস্তায় দায়িত্ব পালন করতে হয় ট্রাফিক পুলিশ সদস্যদের। একদিকে রোদ-বৃষ্টি, অন্যদিকে বাতাসের দূষণ। এমন পরিবেশে কাজ করতে গিয়ে শ্বাসতন্ত্রের নানা সমস্যায় ভুগতে হয় তাদের। শুধু তা-ই নয়, শব্দদূষণের কারণে শ্রবণ সমস্যায়ও পড়তে হচ্ছে অনেককে। ট্রাফিক পুলিশের একজন সদস্যকে যদি নাগরিক হিসেবে চিন্তা করেন, তাহলে তার নগর সুবিধাটা কোথায়? এ বিষয়গুলো আলোচনায় আনা প্রয়োজন বলে মনে করেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) ট্রাফিক বিভাগের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মো. মুনিবুর রহমান।

Advertisement
Share.

Leave A Reply