fbpx

তাঁর সাহিত্য প্রতিভাও আমাকে মুগ্ধ করে

Pinterest LinkedIn Tumblr +
Advertisement

অপূর্ব শর্মাকে আমার আন্তরিক অভিনন্দন। দৈনিক যুগভেরীর ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক পদে উন্নীত হওয়া তাঁর জীবনে এক পরম গৌরব বহন করে এনেছে।

দৈনিক যুগভেরী যদিও সিলেট থেকে প্রকাশিত হয়, কিন্তু পত্রিকাটির রয়েছে জাতীয় দৈনিকের মর্যাদা। দৈনিক হওয়ার আগে যুগভেরী যখন সাপ্তাহিক পত্রিকা ছিলো, তখনও তার ছিলো একটি জাতীয় সাপ্তাহিকের অবস্থান। সারা অভিভক্ত বাংলায় তার প্রচার ছিল। আমার কৈশরে আমি যখন বরিশাল জেলায় আমাদের গ্রামের স্কুলে পড়ি, আগে দেখেছি সিলেট থেকে যুগভেরী (সাপ্তাহিক) ডাকযোগে আমাদের গ্রামে আসে। একটু বয়স হওয়ার পর আমি যখন কলাম লেখা শুরু করি তখন এই সাপ্তাহিক যুগভেরীতে কলাম লিখেছি। কয়েকবছর আমি ছিলাম যুগভেরীর কলাম লেখক ও পাঠক।

তারপর সাপ্তাহিক যুগভেরী থেকে যুগভেরী দৈনিক হয়েছে। জাতীয় দৈনিকের মর্যাদা পেয়েছে। তাওতো বহুদিনের কথা। এই পত্রিকার মালিকরাও একটি ঐতিহ্যবাহী পরিবার। যুগভেরীর সাবেক সম্পাদক আমিনূর রশীদ চৌধূরী এবং তাঁর ভাই হুমায়ূন রশীদ চৌধুরী তারা দুজনেই সারা বাংলার সাংবাদিকতা ও রাজনীতির দুই নক্ষত্র ছিলেন। দৈনিক যুগভেরী এই পরিবারের এবং দেশের সাংবাদিক ঐতিহ্যের গৌরবহনকারী একটি নিরপেক্ষ দৈনিক। মুক্তিযুদ্ধে পত্রিকাটির যেমন ভূমিকা ছিলো, তেমনি রয়েছে দেশের উন্নয়নমূলক গঠন কর্মে।

অপূর্ব শর্মা এই পত্রিকার সঙ্গে দীর্ঘ কুড়ি বছর যাবত জড়িত। এই তরুণ শুধু সাংবাদিক নন, একজন কবি এবং কথাশিল্পীও। অসাধারণ তাঁর প্রতিভা। সারা বাংলা জুড়েই তাঁর পরিচিতি। দেশের একাধিক পত্রিকার সঙ্গে তিনি জড়িত ছিলেন, এখনো আছেন। নিজের প্রতিভার গুণে, এই তরুণ বয়সেই দেশের রুচিশীল এবং প্রগতিশীল জনসমাজে আসন লাভ করেছেন। সাংবাদিকতায় অপূর্ব শর্মার অভিজ্ঞতা ও খ্যাতি দীর্ঘদিনের। ২০১০ সালের এইচএসবিসি কালি ও কলম পুরস্কার পান এবং ২০১৩ সালে পান মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সাংবাদিকতায় শ্রেষ্ঠ সাংবাদিক হিসেবে বজলুর রহমান স্মৃতি পদক।

তাকে বলা চলে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক একজন শ্রেষ্ঠ গবেষক। তাঁর গবেষণা নিয়ে ২০১৬ সালে শাহজালাল বিজ্ঞাপন ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়। তাঁর লেখা ‘বীরাঙ্গনা কথা’ বইটি সম্ভবত বীরাঙ্গনাদের সম্পর্কিত শ্রেষ্ঠ বই। অনুরূপ বই চা-বাগানে গণহত্যা ১৯৭১। ২০১৯ সালের নভেম্বর মাসে লন্ডনে টাওয়ার হেমলেটস কাউন্সিলের সীজন অব বাংলা ড্রামাতে ছান্দসিকের উদ্যোগে এই গণহত্যা বইটি নিয়ে একটি অনুষ্ঠান হয়। বিলাতের বাংলাদেশীরা অপূর্ব শর্মাকে আরো ভালো করে চিনতে ও জানতে পারেন।

অপূর্ব শর্মার সঙ্গে আমার পরিচয় ২০১০ সালে। ছান্দসিকের অনুষ্ঠানে তিনি লন্ডনে এসেছিলেন। তাঁর বীরাঙ্গনা কথা বইটি পাঠ করে আমি মুগ্ধ হই। শুধু তাঁর গবেষণার মেধা নয়, তাঁর সাহিত্য প্রতিভাও আমামে মুগ্ধ করে। তার লেখা ১৪টি গ্রন্থ এবং তার সম্পাদিত ২১ টি গ্রন্থের সবক’টি আমি পড়িনি, কিন্তু যেকটি আমি পড়েছি তাতে তাকে বহুমুখি প্রতিভার অধিকারী একজন তরুণ বলে আমার মনে হয়েছে। কবিতায়, গল্পে, প্রবন্ধে যেমন তেমনই গবেষণা ও সাংবাদিকতাতেও তিনি কৃতিত্বের স্বাক্ষর রেখেছেন। করোনার এই দুঃসময়ে তাঁর জাগরণী গান ও কবিতা দেশের মানুষের মনে আশা ও উৎসাহ সৃষ্টি করেছে। আমি তাঁর দীর্ঘ জীবন কামনা করি এবং আমাদের সাহিত্য ও সাংবাদিকতা তাঁর প্রতিভার ছটায় আরো আলোকিত হোক এই কামনাও করি।

Advertisement
Share.

Leave A Reply