সালটা ১৯৯৭। হুট করেই রুপালি পর্দার ফ্রেম আউট হন শাবানা। শুধু স্পট লাইটের আড়ালেই নয়, সংবাদ শিরোনাম থেকেও নিজেকে লুকিয়ে রেখিছেলন ২৯৯ ছবির তুমুল জনপ্রিয় এই অভিনেত্রী।
প্রায় দুই যুগ অভিনয় থেকে দূরে থাকা এই অভিনেত্রীকে নিয়ে এখনো আগ্রহের কমতি নেই তার ভক্তদের। নতুন প্রজন্মের কাছে যেন এক রূপকথার নাম রত্না নামের মেয়েটি।
তারকা খ্যাতিকে অনেকটা বৃদ্ধাঙুলি দেখিয়ে ধর্মকর্ম, স্বামী সন্তান নিয়ে সুদূর যুক্তরাষ্ট্রের নিউ জার্সির বাসিন্দা হয়েছেন ২০০০ সালে।
শাবানা ও ওয়াহিদ সাদিকের সংসারে দুই মেয়ে ও এক ছেলে। বড় মেয়ে সুমী ইকবাল এমবিএ করেছেন। বিয়ে করে এখন সে পুরোদস্তুর গৃহিণী। ছোট মেয়ে ঊর্মি সাদিক হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি করেছেন। ছেলে নাহিন সাদিক রটগার্স বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মাস্টার্স করে চাকরিতে আছেন।
তবে যত দূরেই থাকেন না কেন দেশের চলচ্চিত্রের জন্য মন কাঁদে দশবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পাওয়া এই তারকার। ২০১৭ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছ থেকে আজীবন সম্মননা পুরস্কার নিতে গিয়ে এমনটাই জানান তিনি।
সময় সুযোগ পেলেই দেশে আসেন, থাকেন নিজের বারিধারার বাড়িতে।এই যেমন গত বছর জানুয়ারিতে দেশে এসেছিলেন। চলচ্চিত্রের সকর্মীদের সঙ্গে দেখা করে গিয়েছিলেন শ্বশুরবাড়ি কেশবপুর উপজেলার বড়েঙ্গা গ্রামে। স্বামী ওয়াহিদ সাদিককে এমপি বানাতে প্রচার প্রচারণায়ও অংশ নিয়েছিলেন। কিন্তু সেই ইচ্ছা আর পূরণ হয়নি। তাই আবার ফিরে যান।
১৯৫২ সালের ১৫ জুন ঢাকায় জন্ম নেওয়া এই তারকার আদি বাড়ি চট্টগ্রামের রাউজান উপজেলার ডাবুয়া গ্রামে। তার বাবার নাম ফয়েজ চৌধুরী যিনি একজন টাইপিস্ট ছিলেন এবং মা ফজিলাতুন্নেসা ছিলেন গৃহিনী।
‘নতুন সুর’ চলচ্চিত্রে শিশুশিল্পী হিসেবে তাঁর চলচ্চিত্রে হাতেখড়ি, তখন তিনি ক্লাস ফাইভের ছাত্রী। ১৯৬৭ সালে নাদিমের বিপরীতে ‘চকোরী’ চলচ্চিত্রে অভিনয়ের সময় চিত্রপরিচালক এহতেশাম তার নাম দেন ‘শাবানা’।
অভিনয়জীবনে নাদিম, রাজ্জাক, আলমগীর, ফারুক, জসীম, সোহেল রানার মতো অভিনয়শিল্পীর সঙ্গে জুটি বেঁধে অভিনয় করেন। এর মধ্যে আলমগীরের সঙ্গে জুটি হয়ে ১৩০টি ছবি করেন। চলচ্চিত্র ক্যারিয়ারে নাদিম আর আলমগীরের সঙ্গে তার প্রেমের সম্পর্ক ছিল বলেও গুঞ্জন আছে।
ছেলে-মেয়ে, নাতি-নাতনি, আত্মীয়স্বজন, সংসার আর ধর্মকর্ম নিয়ে শাবানার প্রবাস জীবন ভালোই কাটছে এ কথাটা নিসন্দেহে বলাই যায়।