জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী এবং স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর আয়োজনকে ঘিরে ঢাকা দক্ষিণ এশিয়ার মিলনমেলায় পরিণত হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পাশাপাশি শান্তিপূর্ণ ও সমৃদ্ধ দক্ষিণ এশিয়া গড়ে তুলতে দক্ষিণ এশিয়ার রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দকে এক হওয়ার আহ্বান জানান।
বুধবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) জাতীয় প্যারেড গ্রাউন্ডের অনুষ্ঠানে তিনি এ আহ্বান জানান।
জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী এবং স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপনে দশ দিনের আয়োজনের অষ্টম দিনে এই অনুষ্ঠানে সম্মানিত অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন ভুটানের প্রধানমন্ত্রী লোটে শেরিং।
অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ইতিমধ্যে মালদ্বীপ এবং নেপালের মহামান্য রাষ্ট্রপতিদ্বয় এবং শ্রীলঙ্কার মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এই অনুষ্ঠানে যোগদান করেছেন। আজকের অনুষ্ঠানে ভুটানের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ডা. লোটে শেরিং আমাদের মাঝে সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত রয়েছেন। তার উপস্থিতি এই অনুষ্ঠানকে মহিমান্বিত করেছে এবং আমরা নিজেকে সম্মানিত বোধ করছি।‘
তিনি বলেন,’আজকে আমাদের সম্মানিত অতিথি ডা. লোটে শেরিং ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হতে চিকিৎসাবিদ্যায় গ্র্যাজুয়েশন করেছেন। কাজেই তিনি শুধু ভুটানের না তিনি বাংলাদেশেরও। আমরা তাঁকে সেভাবেই দেখি এবং এজন্য আমরা অত্যন্ত গর্বিত।‘
বাংলাদেশ এবং ভুটানের মধ্যে ব্যবসা-বাণিজ্য, যোগাযোগ, পর্যটন, শিক্ষা ইত্যাদি খাতে সহযোগিতা ক্রমাগত বৃদ্ধি পাচ্ছে। উল্লেখযোগ্য সংখ্যক ভুটানি ছাত্রছাত্রী বাংলাদেশে চিকিৎসাশাস্ত্রসহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করছে বলেও উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী এবং স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপনের এই শুভ মুহূর্তে আমি দক্ষিণ এশিয়ার রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ এবং নীতিনির্ধারকদের প্রতি একটি শান্তিপূর্ণ সমৃদ্ধ দক্ষিণ এশিয়া গড়ে তুলতে একযোগে কাজ করার আহ্বান জানাচ্ছি।‘
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘এ অঞ্চলে যেমন সমস্যা রয়েছে, তেমনি রয়েছে প্রচুর সম্ভাবনা। আমাদের এ অঞ্চলের মানুষের রয়েছে অসম্ভব প্রাণশক্তি, উদ্ভাবন ক্ষমতা এবং প্রাকৃতিক বিপর্যয়কে জয় করে টিকে থাকার দক্ষতা। পারস্পরিক সহযোগিতার ভিত্তিতে প্রাপ্ত সম্পদকে কাজে লাগিয়ে আমরা সহজেই দক্ষিণ এশিয়ার মানুষের ভাগ্যোন্নয়ন ঘটাতে পারি।’
তিনি বলেন, ‘আমরা যদি আমাদের জনগণের ভাগ্যোন্নয়নের জন্য সম্মিলিতভাবে কাজ করি, তাহলে অবশ্যই দক্ষিণ এশিয়া বিশ্বের মধ্যে অন্যতম সমৃদ্ধ অঞ্চল হিসেবে প্রতিষ্ঠা লাভ করবে।’
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শুধু বাংলাদেশের মানুষের রাজনৈতিক এবং অর্থনৈতিক মুক্তির জন্যই লড়াই করেননি। তিনি বিশ্বের সকল নিপীড়িত-বঞ্চিত মানুষের মুক্তির স্বপ্ন দেখতেন। পারস্পরিক সহযোগিতার মাধ্যমে যে কোনো সমস্যার সমাধান করা সম্ভব বলেও তিনি বিশ্বাস করতেন বলেও উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘ইতিমধ্যে বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হয়েছে। ২০৩১ সালের মধ্যে উচ্চ মধ্যম আয়ের এবং ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত-সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে বাংলাদেশ বিশ্বের বুকে মাথা উঁচু করে দাঁড়াবে ইনশা আল্লাহ।‘