fbpx

দক্ষ মানবসম্পদ উন্নয়নে সহযোগিতা বৃদ্ধি করবে ভারত : পলক

Pinterest LinkedIn Tumblr +
Advertisement

বাংলাদেশের ১২টি জেলায় হাই-টেক পার্ক স্থাপন এবং দক্ষ মানবসম্পদ সৃষ্টিতে ভারত সহযোগিতা করবে বলে জানিয়েছেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলক।

সোমবার (২৪ জানুয়ারি) বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষের সভাকক্ষে ভারতীয় হাই-কমিশনার মান্যবর শ্রী বিক্রম কুমার দোরাইস্বামী এর সাথে এক মতবিনিময় সভায় আইসিটি প্রতিমন্ত্রী একথা বলেন।

ভারতীয় হাই-কমিশনার দুই দেশের ঐতিহাসিক সম্পর্ক আরো দৃঢ়করণ এবং আইসিটি সেক্টরসহ অন্যান্য খাতে বাংলাদেশের সঙ্গে অংশীদারীত্ব বাড়ানোর বিষয়েও গুরুত্ব দিয়ে কাজ করার দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেন। তিনি অদূর ভবিষ্যতে বাংলাদেশের সাথে সম্পর্ক আরো জোরদার হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

এর আগে আজ সকালে রাজধানীর আগারগাঁওস্থ আইসিটি টাওয়ারে পৌঁছালে পলক মান্যবর ভারতীয় হাই-কমিশনারকে উষ্ণ অভ্যর্থনা জানান। মতবিনিময় অনুষ্ঠানে আইসিটি প্রতিমন্ত্রী বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে ভারতের অসামান্য অবদান কৃতজ্ঞতার সাথে স্মরণ করেন।

তিনি বলেন, বর্তমানে দুই দেশের বাণিজ্য ঘাটতি হ্রাস পেয়েছে এবং বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিশেষ করে আইসিটি সেক্টরে ভারতের বিনিয়োগ বৃদ্ধি পেয়েছে। বর্তমানে দেশের ১২টি জেলায় হাই-টেক পার্ক স্থাপন প্রকল্পে ভারত সরকার ঋণ প্রদান করছে। এর মধ্যে আটটি পার্ক স্থাপনের কাজ আগামী ফেব্রুয়ারি ২০২২ এর মধ্যে শুরু করা হবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

বাংলাদেশ-ভারত ডিজিটাল সার্ভিস এন্ড এমপ্লয়মেন্ট ট্রেনিং সেন্টার (বিডিসেট) নামীয় আরেকটি প্রকল্পের আওতায় বাংলাদেশের ৬টি সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্ক, হাই-টেক পার্ক এবং শেখ কামাল আইটি ট্রেনিং এন্ড ইনকিউবেশন সেন্টারে প্রশিক্ষণ প্রদানের জন্য বিশেষায়িত ল্যাব স্থাপন করা হবে। এখান থেকে আগামী দুই বছরে ২৪০০ জন প্রশিক্ষণ গ্রহণ করবে। ইন্টারনেট অব থিংস, মেশিন লার্নিং, রোবোটিক্স, আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স, এক্সটেনডেড রিয়ালিটিসহ অন্যান্য উচ্চতর বিষয়ে প্রশিক্ষণ প্রদান করা হবে। এছাড়াও ৩০ জনকে ৬ মাসের জন্য ভারতে আইসিটির উপর উচ্চতর প্রশিক্ষণের জন্য প্রেরণ করা হবে।

প্রতিমন্ত্রী জানান, বাংলাদেশ-ভারত ডিজিটাল এডুট্রেইনমেন্ট সেন্টার স্থাপনের লক্ষ্যে আরেকটি প্রকল্প চূড়ান্ত হওয়ার পর্যায়ে রয়েছে। প্রস্তাবিত এই প্রকল্পের আওতায় দেশের ৬৪টি স্থানে ডিজিটাল এডুট্রেইনমেন্ট সেন্টার স্থাপনের বিষয়ে উভয় দেশ একসাথে কাজ করবে যেখানে একইসাথে শিক্ষা, প্রশিক্ষণ এবং বিনোদনের ব্যবস্থা থাকবে। এছাড়া স্টার্ট-আপ এক্সচেঞ্জ প্রোগ্রামের আওতায় বাংলাদেশ ও ভারতের ৫০টি করে স্টার্ট-আপ প্রতিষ্ঠান অভিজ্ঞতা বিনিময় করবে।

বাংলাদেশ-ভারত যৌথ উদ্যোগে দেশে প্রথমবারের মতো স্থাপন করা হচ্ছে বাংলাদেশ-ভারত আইটি এক্সিলারেটর (বিআইটিএ)। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী পর্যায়ক্রমে ৬৪টি জেলায় ‘শেখ কামাল আইটি ট্রেনিং এন্ড ইনকিউবেশন সেন্টার’ স্থাপন করা হচ্ছে। একইসাথে প্রতিটি জেলায় আইটি এক্সিলারেটর’ও স্থাপন করা হবে।

বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ডা. বিকর্ণ কুমার ঘোষ বলেন, এখন পর্যন্ত হাই-টেক পার্কসমূহে ১৭৫টি প্রতিষ্ঠানকে স্পেস ও প্লট বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে এবং ১৪৮টি স্থানীয় স্টার্টআপ কোম্পানিকে বিনামূল্যে স্পেস/কো-ওয়ার্কিং স্পেস বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।

বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষ আইটি ইন্ডাস্ট্রির জনবলের চাহিদার দিক বিবেচনা করে বিভিন্ন প্রশিক্ষণের মধ্যমে আইসিটি খাতে দক্ষ জনবল তৈরি হয়েছে ৩৬০০০ জন। বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষ কর্তৃক আইসিটি খাতে প্রায় ২২০০০ জনের প্রত্যক্ষ কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে।

বিনিয়োগকারীগণকে দ্রুত ও সর্বোত্তম সেবা নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষ বদ্ধপরিকর; বিনিয়োগকারীগণকে অতি সহজে, অল্প সময়ে ও কম খরচে সেবা প্রদান করার লক্ষ্যে ওয়ান স্টপ সার্ভিসের মাধ্যমে মোট ১৪৮টি সেবা প্রদান করা হচ্ছে। এর মধ্যে ৪৩টি সেবা অনলাইনে প্রদান করা হচ্ছে।

উল্লেখ্য জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সংগ্রামী জীবন এবং মহান স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে Lightning the Fire of Art and Freedom শীর্ষক চিত্র প্রদর্শনী শীঘ্রই কোলকাতা এবং দিল্লীতে অনুষ্ঠিত হবে।

অনুষ্ঠানে জানানো হয়, বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষ কর্তৃক বাস্তবায়নাধীন জেলা পর্যায়ে আইটি/ হাই-টেক পার্ক স্থাপন (১২টি জেলায়) প্রকল্পের আওতায় ৩০ হাজার তরুণ-তরুণীকে আইটি প্রশিক্ষণ প্রদান করা হবে। প্রকল্পের আওতায় নির্মিতব্য স্থাপনাসমূহের মধ্যে রয়েছে ১২টি জেলায় ৭ তলা (১০৫,০০০ বর্গফুট) স্টিল স্ট্রাকচার মাল্টিটেনেন্ট ভবন নির্মাণ; ১২টি জেলায় ৩ তলা (২১,০০০ বর্গফুট) ক্যান্টিন ও স্টিল স্ট্রাকচার এমপি থিয়েটার ভবন; ৩টি জেলায় ৩ তলা (১৮,০০০ বর্গফুট) আর সিসি স্ট্রাকচার ডরমিটরি ভবন এবং ৬টি জেলায় আধুনিক সিনেপ্লেক্স নির্মাণ করা হবে।

মতবিনিময় অনু্ষ্ঠানে আইসিটি বিভাগ ও বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষের কর্মকর্তাগণ এবং ভারতীয় হাইকমিশনের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।

Advertisement
Share.

Leave A Reply