fbpx

ধামাকার লেনদেনের ৭৫০ কোটি টাকা উধাও

Pinterest LinkedIn Tumblr +
Advertisement

বর্তমানে দেশে ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রতারণা নিয়ে বেশ নড়েচড়ে বসেছে কয়েকটি মন্ত্রণালয়। সম্প্রতি প্রতারণার দায়ে গ্রেফতার হন  ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ইভ্যালী ও ই-অরেঞ্জের কর্নধারেরা। এরইমধ্যে ধামাকা শপিং ডট কম নামে আর একটি প্রতিষ্ঠানের নামে উঠে এসেছে প্রতারণার অভিযোগ।

এরা বিভিন্ন পণ্য ডিসকাউন্ট দিয়ে শুরু করেন তাদের ব্যবসা। কিন্তু তাদের ব্যবসার লক্ষ্যই ছিল প্রতারণা ও অর্থ আত্মসাৎ। কোনো ধরনের অনুমোদন ও লাইসেন্স ছাড়া ব্যবসা শুরু করার ৬ মাসের মধ্যেই তিন লাখ গ্রাহক তৈরি করে ধামাকা শপিং নামের এই প্রতিষ্ঠানটি।

এই প্রতিষ্ঠানটি এ পর্যন্ত সর্বমোট ৭৫০ কোটি টাকার লেনদেন করেছে বলে জানা যায়। তবে বর্তমানে এদের অ্যাকাউন্টে রয়েছে এক লাখ টাকারও কম। আর প্রতিষ্ঠানটির কাছে বর্তমানে সেলারদের বকেয়া রয়েছে প্রায় ২০০ কোটি টাকা, ক্রেতাদের বকেয়া ১৫০ কোটি টাকা ও গ্রাহকদের রিফান্ড চেক বকেয়া রয়েছে প্রায় ৩০-৪০ কোটি টাকা।

২৯ সেপ্টেম্বর (বুধবার) রাজধানীর তেজগাঁও এলাকায় অভিযান চালিয়ে ধামাকা শপিংয়ের চিফ অপারেশন অফিসার (সিওও) সহ তিনজনকে গ্রেফতার করেছে র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‍্যাব-২)।

এ বিষয়ে কারওয়ান বাজারে এক সংবাদ সম্মেলনে র‍্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন জানান, টঙ্গী পশ্চিম থানায় একজন ভুক্তভোগীর দায়ের কৃত মামলা ও আরও কয়েকজন ভুক্তভোগীর অভিযোগের ভিত্তিতে ধামাকা শপিংয়ের (সিওও)সহ তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়।

ধামাকার লেনদেনের ৭৫০ কোটি টাকা উধাও

ছবি: র‍্যাব মিডিয়া

২০১৮ সালে ‘ধামাকা ডিজিটাল’ যাত্রা শুরু করলেও ২০২০ সাল থেকে ‘ধামাকা শপিং ডট কম’ নামে কার্যক্রম শুরু করে। ২০২০ সালের অক্টোবর থেকে প্রতিষ্ঠানটি নেতিবাচক অ্যাগ্রেসিভ স্ট্র্যাটিজি নিয়ে মাঠে নামে।

খন্দকার আল মঈন আরও জানান, ধামাকা শপিংয়ের কোনো প্রকার অনুমোদন ও লাইসেন্স নেই, ব্যবসায়িক অ্যাকাউন্টও নেই। ইনভেরিয়েন্ট টেলিকম বাংলাদেশ লিমিটেড নামক প্রতিষ্ঠানের অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে ব্যবসায়িক লেনদেন করা হয়েছে। গ্রাহকদের সঙ্গে এ পর্যন্ত প্রায় ৭৫০ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে। অথচ বর্তমানে অ্যাকাউন্টে এক লাখ টাকারও কম রয়েছে। প্রতিষ্ঠানটির কাছে বর্তমানে সেলারদের বকেয়া রয়েছে প্রায় ২০০ কোটি টাকা, ক্রেতাদের বকেয়া ১৫০ কোটি টাকা এবং ক্রেতাদের রিফান্ড চেক বকেয়া ৩৫-৪০ কোটি টাকা।

গ্রেফতাকৃতরা প্রথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানায়, আর্থিক সংকটের কারণে কয়েক মাস ধরে প্রতিষ্ঠানের অফিস এবং ডিপো ভাড়া বকেয়া রয়েছে। জুন থেকে কর্মচারীদের বেতনও বকেয়া। চলতি বছরের এপ্রিল থেকে ‘ধামাকা শপিং ডট কম’ টাকা অন্যত্র সরিয়ে ফেলার কাজ শুরু করে, যার ফলে বর্তমানে ধামাকার প্রায় সব কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে বলেও জানায় র‍্যাব।

জানা যায়, ধামাকার পরিচালনা পর্ষদের ইনভেরিয়েন্ট টেলিকম বাংলাদেশ লিমিটেড, মাইক্রোট্রেড ফুড এবং বেভারেজ লিমিটেড এবং মাইক্রোট্রেড আইসিক্স লিমিটেডসহ বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান রয়েছে। গ্রাহক চেইন বা নেটওয়ার্ক থেকে বিপুল অর্থ হাতিয়ে নেওয়াই ছিল ধামাকার কৌশল। এছাড়া, ‘হোল্ড মানি প্রসেস প্লান’ অর্থ্যাৎ গ্রাহক ও সরবরাহকারীর টাকা আটকে রেখে অর্থ সরিয়ে ফেলা ছিল অন্যতম উদ্দেশ্য।

র‍্যাব জানায়, ধামাকার গ্রাহক সংখ্যা তিন লাখের বেশি। প্রতিষ্ঠানটি এপ্রিল পর্যন্ত মাত্র ২০ শতাংশ পণ্য সরবরাহ করে অর্থ সরিয়ে গ্রাহকদের চেক প্রদান করা হয়। বর্তমানে প্রায় ৫০ হাজার গ্রাহকের বকেয়া রয়েছে।

ধামাকা খুব অল্প সময়েই তাদের অ্যাকাউন্ট থেকে প্রচুর টাকা সরিয়ে ফেলে। বাংলাদেশ ব্যাংক তাদের ১৪টি অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ করেছে। সিআইডির তদন্তেও ১১৬ কোটি টাকা অস্বচ্ছতার বিষয়টি উঠে এসেছে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে জানানোর পর আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী কাজ শুরু করেছে। যাদের বিরুদ্ধেই মামলা হচ্ছে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

Advertisement
Share.

Leave A Reply