নওগাঁ জেলায় মাঘের শীত জেঁকে বসতে শুরু করেছে। টানা দুদিন মাঝারি শৈত্যপ্রবাহের পর বৃহস্পতিবার (১৯ জানুয়ারি) সকাল ৯টায় জেলায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে। যা আজ সারাদেশের মধ্যে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
শস্যভাণ্ডার-খ্যাত উত্তরের এ জেলায় তীব্র শৈত্যপ্রবাহে জনজীবনে স্থবিরতা নেমে এসেছে। কুয়াশার পরিমাণ কম থাকলেও বাতাসে শীতের তীব্রতা বেড়েছে।
সকাল থেকেই জেলার সড়কগুলোতে হেডলাইট জ্বালিয়ে যানবাহন চলাচল করতে দেখা গেছে। গত এক সপ্তাহ যাবত সকাল সাড়ে ৯টার পর সূর্যের দেখা মিললেও আজ বেলা সাড়ে ১১টার পরও দেখা মেলেনি কাঙ্ক্ষিত সূর্যের।
তীব্র শীতে সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছে সাধারণ ও নিম্ন আয়ের মানুষ। বোরো চাষীদের ধান রোপনেও পিছিয়ে পড়তে হচ্ছে। সেই সঙ্গে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বীজতলা।
শহরের লাটাপাড়া মহল্লার রিকশাচালক এনামুল হক বলেন, যতই ঠান্ডা পড়ুক রিকশা নিয়ে বের না হলে পেটে ভাত জুটবে না। তাই কনকনে শীতের মধ্যেও ভোর ৫টায় রিকশা নিয়ে বের হয়েছি। কুয়াশার চেয়ে ঠান্ডা বাতাস বেশি হচ্ছে। দুপুরে কিছুক্ষণ রোদের তাপ থাকছে। তবে খুব বেশি সময় রোদ থাকে না। বিগত বছরের চেয়ে এবার মনে হচ্ছে শীত অনেকটাই বেশি।
সদর উপজেলার চন্ডিপুর ইউনিয়নের চুনিয়াগাড়ী গ্রামের কৃষক রুবেল হোসেন বলেন, বোরো ধানের চারা রোপনের জন্য ভোরে এসে মাঠে নেমেছি। ঠান্ডা পানির মধ্যে পা রেখে মনে হচ্ছে বরফের ওপর দাঁড়িয়ে কাজ করছি। এমনিতেই দুদিন যাবত ঠান্ডা আরও বেড়েছে। এরমধ্যে শীতের কারণে যদি ধান রোপনে আরো দেরি করি তাহলে পরবর্তীতে সমস্যার মধ্যে পড়তে হবে।
নওগাঁর বদলগাছী কৃষি আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের পর্যবেক্ষক নজরুল ইসলাম বলেন, গত কয়েক দিন যাবত নওগাঁর ওপর দিয়ে মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছিল। এরপর বৃহস্পতিবার প্রথম তীব্র শৈত্যপ্রবাহ হিসেবে ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়। এটাই এ মৌসুমে নওগাঁর সর্বনিম্ন তাপমাত্রা। বর্তমানে প্রতিদিন সকাল ৬টা ও ৯টায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ও দুপুর ৩টা ও সন্ধা ৬টায় সর্ব্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়। গত তিনদিন যাবত এ সময়ের মধ্যে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে বিরাজ করছে।
আগামী ২২ জানুয়ারির মধ্যে তাপমাত্রা আরও কমতে পারে বলে জানান তিনি।
জেলা ত্রাণ ও পুর্নবাসন কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, এ পর্যন্ত সাড়ে ৫০ হাজার কম্বল বিতরণ করা হয়েছে। কিছু সামাজিক-সেচ্ছাসেবী সংগঠনও শীতবস্ত্র বিতরণ করেছে।