fbpx

নতুন ট্রেন্ড, নতুন স্টাইল ও একজন কমলা হ্যারিস

Pinterest LinkedIn Tumblr +
Advertisement

মার্কিন নির্বাচনে ক্ষমতার পালাবদলের সঙ্গে বদলে যাচ্ছে পোশাক ট্রেন্ডেরও। এবারের নির্বাচনপূর্ব, নির্বাচনকালীন ও নির্বাচনোত্তর আলোচনায় বিষয়টি ছিল গুরুপূর্ণ। পোশাক নিয়ে নানা কথা সব সময়ই হয়েছে। কিন্তু এবারের বিষয়টি ভিন্ন। কারণ, নতুন ট্রেন্ডের, নতুন স্টাইলের জন্ম দিয়েছেন হবু ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস।

স্কার্ট আর স্টিলেট্টো বা প্যান্ট-কোটের ক্লিশে ধারাকে বদলে তিনি নতুন ধারার জন্ম দিয়েছেন। কমলা হ্যারিস তাঁর পোশাকে সচেতনভাবেই প্রতীয়মান করেছেন রাজনৈতিক মতাদর্শ ও লিঙ্গনিরপেক্ষতা; একই সঙ্গে তিনি পেয়েছেন ‘আমি তোমাদেরই লোক’ হয়ে ওঠার প্রয়াস।

নতুন ট্রেন্ড, নতুন স্টাইল ও একজন কমলা হ্যারিস

কমলা হ্যারিস। ছবি: রয়টার্স

সঠিক উপলক্ষে সঠিক রং নির্বাচনের মধ্য দিয়েও তাঁর রাজনৈতিক প্রজ্ঞা, অতীতের আন্দোলনের প্রতি শ্রদ্ধা প্রকাশিত হয়েছে। মানোলো ব্লাহনিক জুতা আর শ্যানেল হ্যান্ডব্যাগের প্রতি তাঁর অনুরাগ যেমন লুকান, তেমনি আবার চাক টেইলর অলস্টার কনভার্স প্রিয়তাকেও আড়াল করেন না। বরং এই স্নিকার তাঁর কত ধরনের আছে, লেস ছাড়া আর লেসসহ, তাও তিনি জানিয়ে দিতে কুণ্ঠা করেননি। বরং নির্বাচনী প্রচারে চাক টেইলর কনভার্স স্নিকারে তাঁর আটপৌরে, স্বাচ্ছন্দ রূপ সবাইকে মুগ্ধ করেছে।

নির্বাচন শেষে বিজয় অর্জনের পর জো বাইডেনকে ফোনে অভিনন্দন জানানোর সময় তিনি যে ওয়ার্কআউট গিয়ারে ছিলেন, সেটা সারা বিশ্বের তরুণ-তরুণীদের বিশেষ প্রিয়। আর এ বছর এই করোনা প্রকোপে আরও প্রিয় হয়ে উঠেছে। তাঁকে দেখে যেন মনে হচ্ছিল তিনি এইমাত্রই বাইরে থেকে হেঁটে এসেছেন কিংবা যাবেন। হবু ভাইস প্রেসিডেন্ট পরেছিলেন নাইকি ট্র্যাকটপ; নাইকির।

এই ব্র্যান্ড যেন আমেরিকারই সমর্থক। আর এর স্লোগান জাস্ট ডু ইট অযুত তরুণের জন্য প্রেরণাবাচক। কমলার জন্য সেটা হয়েছে আরও দ্যোতনাবহ। কারণ, তিনি ও জো বাইডেন এরই মধ্যে করে ফেলেছেন। দে হ্যাভ জাস্ট ডান ইট। কিন্তু এখানেই শেষ নয়। ভালোর জন্য কোনো কিছু করে যাওয়ার চেষ্টা যে তাঁর অব্যাহত থাকবে, সেটাও যেন এই পোশাকের মধ্য দিয়ে স্পষ্ট হয়েছে।

কামাল করে দেওয়া কমলা হ্যারিসের নামের সঙ্গে জুড়ে গেছে অনেক ‘প্রথম’। মার্কিন ইতিহাসের তিনি প্রথম নারী ভাইস প্রেসিডেন্ট, প্রথম বাদামি ত্বকের ভাইস প্রেসিডেন্ট, প্রথম দক্ষিণ এশীয় বংশোদ্ভূত আবার প্রথম অভিবাসী মা-বাবার কন্যাও। ধর্ম, বর্ণনির্বিশেষে মার্কিনরা এখন মাতোয়ারা কমলাবন্দনায়, সুদিনের প্রত্যাশায়, স্বপ্নসময়ের প্রতীক্ষায়।

এ জন্যই কমলা হ্যারিসের দিকে দৃষ্টি তাদের বেশি। ব্যক্তি কমলা যেমন, তেমনি তাঁর পোশাক-আশাক, চলন-বলন—সবকিছুতেই প্রাণিত হচ্ছে ছেলে-বুড়ো সবাই; অনুসরণ করছে, অর্থ খুঁজে নিচ্ছে। অব্যাহত রাখছে আলোচনা। এই নিবন্ধে আলো ফেলা যেতে পারে তাঁর ট্রেন্ডসেটিং স্টাইলে। অতএব, শুরু করা যাক শেষ থেকে।

৭ নভেম্বর ২০২০। অকুস্থল চেজ সেন্টার, উইলমিংটন, ডেলাওয়ার। বিজয় সম্মেলনে উপস্থিত জনতা উন্মুখ। মঞ্চে এলেন কমলা হ্যারিস। শুভ্রবেশী। সাদা প্যান্ট-স্যুট। সিল্কি, পুসিক্যাট বো ব্লাউজ, কানে সাদা মুক্তা। কিন্তু কেন এই পোশাক? কেনই-বা সাদা? এর আগেও কোনো বিশেষ অনুষ্ঠানে তাঁকে সাদা পরতে দেখা গেছে। ব্যত্যয় এবারও করেননি। বরং আরও বেশি অর্থবহ করে তুলেছেন তাঁর পরিচ্ছদের সৌন্দর্য। যেখানে ইতিহাসের সঙ্গে, নারীর অধিকার সমুন্নত রাখার আন্দোলনের সঙ্গে একাত্ম কমলা হ্যারিস সিগনেচার স্টাইলে ছড়িয়েছেন ব্যক্তিত্বের বিভা; তাই তো এই পোশাক ফ্যাশন স্টেটমেন্ট না হয়ে প্রকৃতপক্ষে স্টেটমেন্ট হয়ে উঠতে পেরেছে।

তাঁর পোশাক যেনতেন নয়, ডিজাইনারস কালেকশন। ক্যারোলিনা হেরেরার প্যান্ট-স্যুট। ডিজাইন করেন ওয়েস গর্ডন। কিন্তু কেন ক্যারোলিনা হেরেরা? ডিজাইনার ব্র্যান্ড তো আরও ছিল। কারণ, ক্যারোলিনাও ছিলেন একজন অভিবাসী। এসেছিলেন ভেনেজুয়েলা থেকে। এর আগে তিনি দুজন প্রেসিডেন্টপত্নীর পোশাকের নকশা করেছেন। মিশেল ওবামা ও লরা বুশ।

ওয়েস গর্ডনের ডিজাইন করা এই সাদা প্যান্ট-স্যুটের কাপড় মূলত উলের। ৯৩ শতাংশ উলের সঙ্গে ৪ শতাংশ ইলাস্টিন আর ৩ শতাংশ নাইলন মিশিয়ে তৈরি।

কমলা হ্যারিস নতুন ভাবমূর্তি তুলে ধরেছেন। ভেঙে দিয়েছেন চলমান ধারণা। বিশেষত পোশাকে। ফলে তাঁকে দেখা গেছে নানা সাজে। সবাই অবাক হয়েছেন। অনুপ্রাণিত হয়েছেন। বাহ্বা দিয়েছেন। পুরো প্রচারণায় তিনি কী পরেছেন, তা চমৎকারভাবে পাওয়া যায় ‘হোয়াটকমলাওর’ নামের ওয়েবসাইট অনুসরণ করলে। এর বরাত দিয়ে বিভিন্ন দেশের দৈনিক আর সাময়িকপত্রগুলো দিয়েছে নানা ব্যাখ্যা।

 

Advertisement
Share.

Leave A Reply