Advertisement
একটি ব্যাংকের নতুন শাখা স্থাপনে অনেক খরচ। জায়গা ভাড়া, কর্মীদের বেতন সঙ্গে আছে পরিচালন ব্যয়। তাই ইদানিং নতুন শাখা স্থাপনের চেয়ে বরং এজেন্ট ব্যাংকিংয়ে বেশি ঝুঁকছে ব্যাংকগুলো।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, গত বছরের ডিসেম্বর শেষে ব্যাংকগুলোর মোট শাখার সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১০ হাজার ৬২৮টি। আর এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের আউটলেটের সংখ্যা পৌঁছেছে ১১ হাজার ৯২৫টিতে। অর্থাৎ এখন শাখার চেয়ে এজেন্টের সংখ্যা বেশি হয়ে গেছে। শুধু গত বছর মহামারীকালে নতুন ব্যাংকিং এজেন্ট আউটলেটের সংখ্যা বেড়েছে চার হাজার ৬৯টি।
কেন্দ্রিয় ব্যাংকের তথ্যে দেখা যায়, এই এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের ৮৭ শতাংশই গ্রামীণ এলাকায়। ফলে নতুন শাখা স্থাপনের চেয়ে এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে নিজস্ব নেটওয়ার্ক বাড়াচ্ছে ব্যাংকগুলো।
বাংলাদেশ ব্যাংক জানায়, ২০২০ সালে সারাদেশে এজেন্ট ব্যাংকিং আউটলেটের সংখ্যা ১১ হাজার ৯২৫টি। ২০১৯ সালে যা ছিল ৭ হাজার ৮৫৬টি। এক বছরের ব্যবধানে এজেন্ট বৃদ্ধির হার হচ্ছে ৫২ শতাংশ। এই সময়ে আউটলেট বৃদ্ধির সংখ্যা হচ্ছে ৪ হাজার ৬৫৭টি।
জানা যায়, বাংলাদেশে প্রথম এজেন্টের মাধ্যমে ব্যাংকিং সেবা চালু হয় ব্যাংক এশিয়ার মাধ্যমে। ব্যাংকটির এ প্রস্তাবের সম্ভাব্যতা যাচাই করে বাংলাদেশ ব্যাংক। কয়েকটি দেশের মডেল বিশ্লেষণ করে ২০১৩ সালের ৯ ডিসেম্বর এ নীতিমালা জারি করা করে বাংলাদেশ ব্যাংক। এরপরই ২০১৪ সালের জানুয়ারিতে মুন্সীগঞ্জে প্রথম এজেন্ট ব্যাংকিং শুরু করে ব্যাংক এশিয়া। এ ব্যাংকিংয়ে সফলতা আসায় অন্যান্য ব্যাংকও এ সেবা চালু শুরু করে। গত সাত বছরে দেশের ব্যাংকগুলোর মধ্যে বর্তমানে ২৮টি ব্যাংক লাইসেন্স নিয়েছে এজেন্ট ব্যাংক পরিচালনায়। এ সেবা চালু করেছে ২৬টি ব্যাংক।
কেন্দ্রিয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ২০২০ সাল শেষে এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে ১৫ হাজার ৯৭৭ কোটি ২৫ লাখ টাকার আমানত জমা হয়েছে। ২০১৯ সালে যা ছিল সাত হাজার ৫১৭ কোটি ১৬ লাখ টাকা। এক বছরের ব্যবধানে দ্বিগুণের বেশি আমানত জমা হয়। প্রবৃদ্ধির হিসাবে এটি ১১২ দশমিক ৫৪ শতাংশ।
গত বছরে নতুন করে ৪৩ লাখ ৭৪ হাজার ৬৬৭টি ব্যাংক হিসাব খোলা হয় এজেন্টের মাধ্যমে। ব্যাংক হিসাব খোলার প্রবৃদ্ধি হচ্ছে ৮৩ শতাংশ। এজেন্ট ব্যাংকের মাধ্যমে খোলা ব্যাংক হিসাবের ৮৬ শতাংশই হচ্ছে গ্রামীণ এলাকায়।
সাধারণত বাণিজ্যিক এলাকা হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ ও শহুরে এলাকায় ব্যাংকের শাখা অবস্থিত। অনেক উপজেলা সদরেও বেসরকারি ব্যাংকের শাখা নেই। এখন এসব এলাকায়ও ব্যাংকিং সেবা দেয়া যাচ্ছে এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে। ফলে প্রান্তিক মানুষ হাতের কাছেই ব্যাংকিং সেবা পাচ্ছেন। নতুন কর্মসংস্থানও সৃষ্টি হচ্ছে এলাকায়।
Advertisement