আফ্রিকার দেশ সুদানের প্রধানমন্ত্রী আবদাল্লাহ হামদক পদত্যাগ করেছেন। সেনাবাহিনীর সাথে বিতর্কিত চুক্তিতে পুনর্বহাল হওয়ার কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই এমন ঘোষণা দিলেন তিনি।
স্থানীয় সময় রবিবার (২ ডিসেম্বর) সামরিক শাসনবিরোধী বিক্ষোভে হতাহতের পর রাতে এক টেলিভিশন ভাষণে পদত্যাগের ঘোষণা দেন আবদাল্লাহ হামদক। সংবাদমাধ্যম বিবিসি’র এক প্রতিবেদনে এ তথ্য দেওয়া হয়েছে।
বিবিসির প্রতিবেদনে আবদাল্লাহ হামদকের পদত্যাগের বিষয়ে বলা হয়েছে, গত অক্টোবরের ২৫ তারিখ সুদানের শীর্ষ রাজনৈতিক নেতাদের বন্দি করে ক্ষমতা দখল করেন দেশটির সেনাপ্রধান জেনারেল ফাত্তাহ আল-বুরহান। সে সময় দেশটির সেনাবাহিনী প্রধানমন্ত্রী আবদাল্লাহ হামদককে গৃহবন্দী করে তার সরকারের কয়েকজন মন্ত্রীকে গ্রেপ্তার করে। পাশাপাশি, দেশব্যাপী জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেন দেশটির সেনাপ্রধান।
পরবর্তীতে, সেনা অভ্যুত্থানের নেতৃত্ব দেওয়াদের সাথে ক্ষমতা ভাগাভাগির চুক্তির পর তাকে পুনর্বহাল করা হয়। তার এই সিদ্ধান্ত মেনে নিতে পারেনি অনেকেই। এরপর দেশজুড়ে বিক্ষোভ, সহিংসতা শুরু হয়।
সহিংসতা ও বিক্ষোভের মুখেই পদত্যাগের ঘোষণা দিলেন প্রধানমন্ত্রী আবদাল্লাহ হামদক। টেলিভিশনে দেওয়া ভাষণে তিনি বলেন, “সুদানের পরিস্থিতি ‘বিপজ্জনক’ দিকে মোড় নিচ্ছে, যা দেশের সমগ্র অস্তিত্বকে হুমকির মুখে ফেলেছে। এ দেশের গণতন্ত্রে উত্তরণের জন্য একটি নতুন চুক্তির প্রয়োজন ছিল, যা আমরা করেছিলাম। তবে চুক্তি অনুযায়ী প্রাপ্ত দায়িত্ব আমি ফিরিয়ে দিচ্ছি। আমি প্রধানমন্ত্রী পদ থেকে পদত্যাগ করছি।’
এদিকে, গতকাল রবিবার দেশটির রাজধানী খার্তুম ও পার্শ্ববর্তী শহর ওমদুরমানে এ হতাহতের ঘটনা ঘটেছে। দেশটির চিকিৎসকদের সংগঠন ‘দ্য সেন্ট্রাল কমিটি অব সুদানিজ ডক্টরস-সিসিএসডি’ এ তথ্য জানিয়েছে।
কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরা সিসিএসডির বরাত দিয়ে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, হাজার হাজার মানুষ সেনাশাসনবিরোধী বিক্ষোভ শুরু করে রাস্তায় নেমে আসে। বিক্ষোভকারীরা ‘জনগণের কাছে শক্তি’ স্লোগান দেয় এবং সামরিক বাহিনীকে রাজনীতি ছেড়ে দেওয়ার আহ্বান জানায়। এ সময় নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা বিক্ষোভকারীদের উপর প্রথমে টিয়ার গ্যাস এবং পরে অতর্কিত গুলি চালায়।
গণতন্ত্রপন্থী সুদান সেন্ট্রাল ডক্টরস কমিটির দেওয়া তথ্যমতে, গতকাল এ সংঘর্ষে অন্তত দুজন বিক্ষোভকারী নিহত হয়েছেন।
উল্লেখ্য, অভ্যুত্থানের পর থেকে এ পর্যন্ত বিক্ষোভে অংশ নেওয়া ৫০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন।