fbpx

পদ্মার সমার্থক মীনের কয়েক পদ

Pinterest LinkedIn Tumblr +
Advertisement

ইলিশ আর পদ্মাকে বলা চলে সমার্থক। খুব ডিমান্ডিং এই পদ্মার ইলিশ। মায়েস্ত্রো হুমায়ূন আহমেদ একবার লিখেছিলেন, হার্ডিঞ্জ ব্রিজের পিলারে গোত্তা খাওয়া নাক বোঁচা ইলিশই নাকি খাঁটি পদ্মার ইলিশ। সীমানা পেরোনো ‘দাদা’দের সঙ্গে খুব বসচা চলে এ নিয়ে। ভারতকে ইলিশ উপহার দিলে তা সংবাদ ভাষ্যে আসে ‘ইলিশ কূটনীতি’ নামে। আর কোন নদীর আর কোন মাছ পৌছেছে এমন কুলীন কাতারে!

পদ্মা সেতু আজ থেকে পুরোটাই দৃশ্যমান। আগামী বছর এটি উন্মুক্ত হয়ে দক্ষিণ বাংলায় যাওয়ার পথ সুগম ও সুলভ করবে। আশা করা যায় ইলিশের বাজারে এর প্রভাব থাকবে। সর্বজনের পাতে উঠবে মোহময় ইলিশ। যদিও এখন মৌসুম নয় তবু ইলিশ রান্নার কিছু কায়দা থাকলো আগামী সুবর্ণক্ষণের জন্য।

ভাপে সরিষায় ইলিশ 

উপকরণ :১. ইলিশ মাছ (পেটি ও গাদাসহ) ৬ টুকরা,। সরিষা বাটা ১ টেবিল চামচ, পোস্ত দানা বাটা ১ টেবিল চামচ, লাল কাঁচা মরিচ বাটা ২ চা-চামচ, হলুদগুঁড়া ১ চা-চামচ, পেঁয়াজকুচি আধা কাপ,কাঁচা মরিচ ফালি ৫-৬টি, লবণ পরিমাণমতো, সরিষার তেল ৪ টেবিল চামচ।

প্রণালি : মাছ সমস্ত উপকরণ দিয়ে মাখিয়ে ১ ঘণ্টা রাখতে হবে। বাটিতে অথবা সসপ্যানে মসলাসহ মাছ সাজিয়ে আধা কাপ পানি দিয়ে ভালো করে ঢেকে দিতে হবে। প্রেশার কুকারে অথবা প্যানে অল্প পানি দিয়ে পানির ওপর মাছের পাত্র রেখে ঢাকনা দিয়ে ভালো করে ঢেকে অল্প আঁচে ৩৫-৪০ মিনিট রান্না করুন।

পদ্মার সমার্থক মীনের কয়েক পদ

সরিষা ভুনায় ইলিশ

উপকরণ: ইলিশের মাথা ২টি, লেজ ২টি, সরিষা বাটা আধা কাপ, চাল কুমড়া বাটা দুই কাপ, কাঁচা মরিচ ৭-৮টা, সয়াবিন তেল আধা কাপ, . তেজপাতা ২টি, আস্ত জিরা আধা চা-চামচ, পেঁয়াজ কুচি আধা কাপ, আদা বাটা ১ চা-চামচ, রসুন বাটা ১ চা-চামচ, হলুদ গুঁড়া ১ চা-চামচ, চিনি ১ চা-চামচ, লবণ পরিমাণমতো।

প্রণালি: বিচিসহ লাউয়ের বুক অথবা কুমড়ার বুকসেদ্ধ করে বেটে অথবা ব্লেন্ড করে নিতে হবে। ইলিশ মাছের মাথা ও লেজ ছোট টুকরা করে ধুয়ে সামান্য হলুদ ও লবণ মাখিয়ে রাখুন। প্যানে তেল যখন গরম হয়ে আসবে, তখন জিরা ও তেজপাতার ফোড়ন দিয়ে পেঁয়াজ দিয়ে দিন। পেঁয়াজ যখন চকচকে হবে তখন মাছের মাথা দিয়ে নেড়ে সব বাটা ও গুঁড়া মসলা দিয়ে কষাতে হবে। ১ কাপ পানি দিয়ে ভালোভাবে কষানো হলে চালকুমড়া ও সরিষা বাটা দিয়ে নাড়তে হবে। নাড়তে নাড়তে যখন গোল হয়ে আসবে, তখন ২-৩ টেবিল চামচ সরিষার তেল দিয়ে আবার নাড়ুন। গোল হয়ে এলে নামিয়ে পরিবেশন করুন।

 

পদ্মার সমার্থক মীনের কয়েক পদ

ইলিশের মালাইকারি

উপকরণ: ইলিশ মাছ মাঝারি আকারের ১টি, টকদই সিকি কাপ, নারকেলের দুধ ২ কাপ, আদা বাটা ১ চা-চামচ, জিরা বাটা আধা চা-চামচ, পেঁয়াজ বাটা ১ টেবিল চামচ, কাঠবাদাম বাটা ১ টেবিল চামচ, কিশমিশ বাটা ১ টেবিল চামচ, হলুদগুঁড়া আধা চা-চামচ, মরিচগুঁড়া ১ চা-চামচ, কাঁচা মরিচ ফালি ৪-৫টি, পেঁয়াজকুচি ১ কাপ, পেঁয়াজ বেরেস্তা সিকি কাপ, লবণ পরিমাণমতো, চিনি ২ চা-চামচ, তেল পৌনে এক কাপ।

প্রণালি: তেল গরম করে পেঁয়াজ ভাজতে হবে। পেঁয়াজ নরম হলে সমস্ত বাটা মসলা, গুঁড়া মসলা কষিয়ে মাছ টক দই ও লবণ দিয়ে কিছুক্ষণ ভুনে নারকেলের দুধ দিয়ে দিন। ঝোল কমে এলে চিনি, কাঁচা মরিচ দিয়ে কিছুক্ষণ চুলায় রেখে বেরেস্তা দিয়ে নামাতে হবে ইলিশ মাছের মালাইকারি।

দই ইলিশ

উপকরণ: ইলিশ মাছ এক কেজি ওজনের (মাথা ও লেজ বাদ দিয়ে ছয় টুকরা করে কাটা), সরষের তেল আধা কাপ, পেঁয়াজ (স্লাইস করা) দুটি, ধনিয়াগুঁড়া এক টেবিল চামচ, শুকনা মরিচগুঁড়া আধা টেবিল চামচ, সরিষা বাটা এক টেবিল চামচ, কাঁচা মরিচ পাঁচ-ছয়টি, টকদই এক কাপ, লবণ স্বাদমতো।

প্রণালি: মাছ ধুয়ে লবণ মাখিয়ে রাখুন। সরষের তেলে পেঁয়াজ ভেজে নিন। লবণ, শুকনা মরিচগুঁড়া ও ধনিয়াগুঁড়া দিয়ে দিন। তেল ভেসে ওঠা পর্যন্ত নাড়তে হবে। এরপর মাছ আর সরষে বাটা দিন। কিছুক্ষণ পর কাঁচা মরিচ ও টকদই দিয়ে ৮-১০ মিনিট পর নামিয়ে ফেলুন।

পদ্মার সমার্থক মীনের কয়েক পদ

ইলিশ রোস্ট

উপকরণ : গোটা ইলিশ মাছ একটি, মরিচগুঁড়া এক চা-চামচ, ময়দা এক টেবিল চামচ, কর্নফ্লাওয়ার এক টেবিল চামচ, লেবুর রস একটেবিল চামচ, তেল ভাজার জন্য, লবণ স্বাদমতো।

উপকরণ ২: টমেটোকুচি আধা কাপ, পেঁয়াজকুচি আধা কাপ, পেঁয়াজ বাটা সিকি কাপ, টমেটো সস সিকি কাপ, আদা বাটা এক চা-চামচ, টকদই এক টেবিল চামচ, মরিচগুঁড়া এক চা-চামচ, তেল আধা কাপ, সামান্য হলুদগুঁড়া, কাঁচা মরিচ পাঁচটি, লবণ স্বাদমতো।

প্রণালি-১: প্রথমে পুরো ইলিশ মাছের মাঝ বরাবর কেঁচে নিন, যাতে এর ভেতরে মসলা ঢুকতে পারে। এরপর লবণ, মরিচগুঁড়া ও লেবুর রস মাখিয়ে রাখুন এক ঘণ্টা। পাত্রে তেল গরম করুন। শুকনো ময়দার সঙ্গে কর্নফ্লাওয়ার মিশিয়ে নিন। আগে থেকে ম্যারিনেট করে রাখা মাছের দুদিকেই ময়দার মিশ্রণ লাগিয়ে নিন। এবার মাছটিকে গরম তেলে ডিপ ফ্রাই করুন। ধূসর রং হয়ে এলে নামিয়ে রাখুন।

প্রণালি-২: পাত্রে তেল গরম করুন। হালকা করে পেঁয়াজকুচি ভেজে নিন। এরপর সব মসলা দিয়ে সামান্য ভেজে নিন। টমেটোর কুচি দিন। কিছুক্ষণ পর রান্না হয়ে এলে কাঁচা মরিচ ও টমেটো সস দিন। মাখা মাখা হয়ে এলে ভেজে রাখা ইলিশ মাছের ওপর ছড়িয়ে পরিবেশন করুন।

পদ্মার সমার্থক মীনের কয়েক পদ

ইলিশ মাছের ডিমে মিষ্টি কুমড়া

উপকরণ : কাঁচা মিষ্টিকুমড়া ৫০০ গ্রাম, মাছের ডিম ২টা, পেঁয়াজ ২টা, লবণ স্বাদমতো, তেজপাতা ১টা, লাল কাঁচা মরিচ স্বাদমতো।

প্রণালি: মিষ্টিকুমড়া টুকরো (কিউব) করে কেটে নেওয়া। পেঁয়াজ হালকা ভাজা। তাতে মিষ্টিকুমড়া দিয়ে, লবণ দিতে হবে পরিমাণমতো। এতে আলাদা কোনো বাটা/গুঁড়া মসলা দিতে হবে না। শুধু পেঁয়াজই যথেষ্ট। ১টি তেজপাতা দিতে হবে। এই রান্না করার সময় হাঁড়ি ঢাকতে হবে না। ঢেকে দিলে মিষ্টিকুমড়ার রঙ নষ্ট হয়ে যাবে। কুমড়া সেদ্ধ হয়ে এলে মাছের ডিম দেওয়া হবে তাতে। ডিমের রং যেন ভালো দেখায় এ জন্য হলুদ দিতে হবে আধা চা-চামচ পরিমাণ। ধীরে ধীরে নাড়তে হবে। ডিম আধা সেদ্ধ হয়ে এলে তাতে কাঁচা মরিচ দিয়ে চুলায় আরও ৫ মিনিট রেখে দিন।

কুমড়া পাতায় নোনা ইলিশ

উপকরণ: নোনা ইলিশ ১ কাপ, পেঁয়াজ কুচি ১ কাপ, কাঁচা মরিচ ১০-১২টা, সরিষার তেল আধা কাপ, রসুন কুচি ২ টেবিল চামচ, কুমড়া পাতা প্রয়োজনমতো, নারকেল বাটা আধা কাপ, সরিষা বাটা সিকি কাপ, তিল বাটা সিকি কাপ, হলুদগুঁড়া আধা চা-চামচ, মরিচগুঁড়া আধা চা-চামচ, ধনিয়াগুঁড়া আধা চা-চামচ, জিরাগুঁড়া ১ চা-চামচ, লবণ স্বাদমতো।

প্রণালি: নোনা ইলিশ ছোট টুকরা করে ভালোভাবে ধুয়ে নিতে হবে। যেন লবণ না থাকে ধোয়ার পর। পাত্রে তেল গরম করে পেঁয়াজ ও রসুন কুচি একটু ভেজে সব গুঁড়া ও বাটা মসলা দিয়ে আধাকাপ পানি দিয়ে ভালোভাবে কষাতে হবে। এবার ইলিশের টুকরাগুলো দিয়ে ভুনা ভুনা করে নামিয়ে নিন। এবার কুমড়া পাতা বিছিয়ে তার মধ্যে ২ টেবিল চামচ করে ভুনা লোনা ইলিশ দিয়ে পরোটার মতো করে নিতে হবে। এভাবে ৭/৮ টুকরা নোনা ইলিশ দিয়ে পাতা ভাঁজ করে নিতে হবে। এবার একটি ফ্রাইপ্যানে সামান্য তেল ছড়িয়ে ২টি করে কুমড়া পাতা বিছিয়ে তার ওপর ভাঁজ করা ইলিশের বড়াগুলো সাজিয়ে তার ওপর কয়েকটি কাঁচা মরিচ ও পেঁয়াজ কুচি দিয়ে ঢেকে দিন। পাতাগুলো যখন সেদ্ধ হয়ে যাবে, তখন নোনা বড়াগুলো পোড়া করে বা বাদামি রং হলে নামিয়ে নিন। এবার গরম গরম পরিবেশন করুন।

 

Advertisement
Share.

Leave A Reply