fbpx

পরমাণু অস্ত্র ব্যবহার না করতে রাশিয়াকে সতর্ক করলেন বাইডেন

Pinterest LinkedIn Tumblr +
Advertisement

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ইউক্রেনের যুদ্ধে রাসায়নিক কিংবা ট্যাকটিক্যাল পরমাণু অস্ত্র ব্যবহার না করতে রাশিয়াকে সতর্ক করে দিয়েছেন।

সিবিএস নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বাইডেন বলেন, এধরনের অস্ত্র ব্যবহার করা হলে “যুদ্ধের চেহারা এমনভাবে বদলে যাবে যা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর কখনো দেখা যায়নি।”

তবে এ ধরনের অস্ত্র ব্যবহারের জবাবে যুক্তরাষ্ট্র কী ধরনের ব্যবস্থা নেবে সেবিষয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট কিছু বলেননি।

এবছরের ফেব্রুয়ারি মাসে ইউক্রেনে রুশ সামরিক অভিযান শুরু হওয়ার পর রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন তার দেশের পরমাণু শক্তিকে “বিশেষ সতর্কাবস্থায়” রাখার কথা ঘোষণা করেছিলেন।

রুশ প্রতিরক্ষা বাহিনীর প্রধানদের তিনি বলেছিলেন পশ্চিমা বিশ্বের “আগ্রাসী মনোভাবের” কারণে তিনি এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

সম্প্রতি রুশ সামরিক বাহিনীর নিয়ন্ত্রণ থেকে ইউক্রেনের কিছু এলাকা হাতছাড়া হয়ে যাওয়ার পর পশ্চিমা দেশগুলোতে আশঙ্কা তৈরি হয়েছে যে প্রেসিডেন্ট পুতিন হয়তো এখন আরো কট্টর কৌশল গ্রহণ করতে পারেন।

প্রায় ৮০ বছর ধরে বিশ্বে পরমাণু অস্ত্র রয়েছে। অনেক দেশই এই অস্ত্রকে তাদের জাতীয় নিরাপত্তার রক্ষাকবচ হিসেবে মনে করে।

ধারণা করা হয় যে রাশিয়ার কাছে ৫,৯৭৭টি নিউক্লিয়ার ওয়ারহেড বা পরমাণু অস্ত্র রয়েছে। এই হিসাব দিয়েছে মার্কিন বিজ্ঞানীদের একটি ফেডারেশন।

তারা বলছেন এর মধ্যে প্রায় দেড় হাজার ওয়ারহেডের মেয়াদ উত্তীর্ণ এবং সেগুলো বাতিল করে দেয়ার কথা।

বাকি সাড়ে চার হাজার কিংবা তার চেয়েও কিছু বেশি ওয়ারহেডের মধ্যে বেশিরভাগ কৌশলগত পারমাণবিক অস্ত্র- ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র, বা রকেট, যা দূরপাল্লার হামলা চালাতে সক্ষম।

বাকি অস্ত্রসমূহ ছোট বা কম বিধ্বংসী পারমাণবিক অস্ত্র যা স্বল্প-পাল্লা বা কম দূরত্বের- মূলত যুদ্ধক্ষেত্রে বা সাগরে ব্যবহারযোগ্য অস্ত্র।

তবে এর মানে এই না যে রাশিয়ার হাজার হাজার দূরপাল্লার পারমাণবিক অস্ত্র প্রস্তুত আছে।

বিশ্লেষকেরা মনে করেন, এই মূহুর্তে রাশিয়ার প্রায় ১৫০০ ওয়ারহেড মোতায়েনকৃত অবস্থায় আছে, যার অর্থ হচ্ছে সেগুলো ক্ষেপণাস্ত্র ও বোমারু ঘাঁটি এবং সমুদ্রে সাবমেরিনে বসানো আছে।

তবে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন ইউক্রেনের যুদ্ধে রাশিয়ার পরমাণু অস্ত্র ব্যবহারের সম্ভাবনা এখনও পর্যন্ত খুব কম।

সমরবিদরা বলছেন তুলনামূলকভাবে অল্প দূরত্বের লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে ট্যাকটিক্যাল পরমাণু অস্ত্র ব্যবহার করা হতে পারে, আর স্ট্র্যাটেজিক পরমাণু অস্ত্র ব্যবহার করা হতে পারে বহু দূরের টার্গেটে আক্রমণ করার জন্য।

স্ট্র্যাটেজিক পরমাণু অস্ত্র ব্যবহার করা হলে সেটা পরমাণু যুদ্ধে রূপ নেওয়ার আশঙ্কা তৈরি হতে পারে।

সিবিএসের ৬০ মিনিট অনুষ্ঠানের জন্য জো বাইডেন হোয়াইট হাউজে সাক্ষাৎকারটি দিয়েছেন।

এসময় তার কাছে জানতে চাওয়া হয় ইউক্রেনের যুদ্ধে প্রেসিডেন্ট পুতিন যদি গণ-বিধ্বংসী অস্ত্র ব্যবহার করার কথা বিবেচনা করে থাকেন তাহলে এবিষয়ে তিনি তাকে কী বলবেন।

“করবেন না, করবেন না, করবেন না,” এভাবেই জবাব দেন জো বাইডেন।

এর পর বাইডেনের কাছে জানতে চাওয়া হয় পুতিন যদি সেই সীমারেখা অতিক্রম করেন তাহলে তার জন্য এর পরিণতি কী হতে পারে?

“আপনি কি মনে করেন যে এটা যদি আমি সত্যি সত্যি জানি তাহলে সেটা আমি আপনাকে বলবো? আমি সেটা আপনাকে বলবো না। তবে এর পরিণতি তো আছেই,” বলেন বাইডেন।

“তারা বিশ্বের কাছ থেকে আরো বেশি বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়বে, যা তারা এর আগে কখনো হয়নি। এবং তারা কী করে তার উপরেই নির্ভর করে এর জবাবে কী ঘটবে।”

সামরিক বিশ্লেষকরা বলছেন, ক্রেমলিন যেভাবে আশা করেছিল ইউক্রেনের যুদ্ধ সেভাবে অগ্রসর হয়নি।

সম্প্রতি ইউক্রেন দাবি করেছে যে তারা রুশ বাহিনীর কাছ থেকে উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় খারকিভের ৮,০০০ বর্গকিলোমিটারের বেশি এলাকা পুনর্দখল করেছে।

তার পরেও প্রেসিডেন্ট পুতিন ইঙ্গিত দিয়েছেন যে ইউক্রেনীয় বাহিনীর পাল্টা আক্রমণের সাফল্য দেশটির পূর্বাঞ্চলে রাশিয়ার সামরিক অভিযানের পরিকল্পনাকে থামাতে পারবে না।

তথ্যসূত্র: বিবিসি

Advertisement
Share.

Leave A Reply