বান্দরবানের থানচি উপজেলার নাইতং পাহাড়ে পাঁচ তারকা হোটেল নির্মাণ হচ্ছে। স্থানীয় নৃ-গোষ্ঠী ম্রো সম্প্রদায়ের অধিবাসীরা এতে বিক্ষুব্ধ হয়েছেন। এর প্রতিবাদে চিম্বুক পাহাড় থেকে তারা লংমার্চ কর্মসূচি পালন করছেন রবিবার।
বান্দরবানের স্থানীয় সংবাদাতা সৈকত দাশ জানান, এই প্রকল্পকে ম্রো সম্প্রদায়ের অধিবাসীরা বলছেন ‘প্রাণ-প্রকৃতি-জীবন-জীবিকা বিরোধী প্রকল্প’। তারা পর্যটনের নামে পাঁচ তারকা হোটেল নির্মাণের বিরুদ্ধে গত বছর থেকেই প্রতিবাদ করছেন। এই প্রেক্ষিতেই রবিবারের লংমার্চ।
চিম্বুক থেকে ৭ ফেব্রুয়ারি সকালে বান্দরবান জেলা সদরের দিকে যাত্রা শুরু করে এই লং মার্চ। লংমার্চে বিভিন্ন প্রতিবাদী প্ল্যাকার্ড বহন করা হয়। এসব প্ল্যাকার্ডে লেখা ছিল- ‘পর্যটন নয়, শিক্ষা চাই’, ‘মুনাফার জন্য পাহাড় বিকৃতি চলবে না, চলবে না’, ‘আমার ভূমি আমার মা’ ‘তোমাদের পর্যটন ব্যবসা, আমাদের মরণ দশা’, ‘পাহাড় পাহাড়ের, কংক্রিটের দেয়াল নয়।’
লংমার্চে অংশগ্রহনকারীরা জানান, এ পর্যটন প্রকল্পে ম্রোদের চারটি পাড়া এবং পরোক্ষভাবে ৭০-১১৬টি পাড়া ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
তারা বলছেন, ‘এই মাটি, এই পাহাড়ে আমরা শত বছর ধরে বাস করছি। কারোর বিনোদনের জন্য আমাদের ভিটে ছাড়ব কেন? এই বন-পাহাড় ছাড়া আমরা কিভাবে বাঁচবো? আমরা আমৃত্যু এই মাটি আগলে রাখব।’
এ বিষয়ে থানচির উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আতাউল গণি ওসমানী বলেন, ‘নাইতং পাহাড়টি মূলত দূর্গম লামা উপজেলায় অবস্থিত। এ বিষয়ে আমি কিছু জানি না।’
লামার উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মোস্তফা জামাল এ সম্পর্কে বলেন, ‘এই জনপদটি খুবই দূর্গম এলাকায়। এটি লামার উপজেলায় অবস্থিত। তবে লামা থেকে সেখানে যাওয়া কোনো সরাসরি সড়ক নেই। সেখানে যেতে হয় বান্দরবান সদর থেকে। এই প্রকল্প যারা করছেন তারা আমাদের সঙ্গে কোনো ধরনের যোগাযোগ করেনি। আমিও চাই না সেখানে ম্রো সম্প্রদায়ের কোনো ক্ষতি হোক এমন কোনো প্রকল্প। এ বিষয়টি পুরোপরি সেনাবাহিনী ও জেলা প্রশাসকের সিদ্ধান্তের ওপর নির্ভর করছে।’
বান্দরবানের জেলা প্রশাসক ইয়াছমিন পারভীন তিবরীজি বলেন, ‘আমি এখানে নতুন দায়িত্ব নিয়েছি। পর্যটন প্রকল্পের বিষয়টি আমার জানা নেই। এ বিষয়ে আর কোনো মন্তব্য করতে চাই না।’