পটুয়াখালীর লেবুখালীতে পায়রা নদীর ওপর নির্মিত পায়রা সেতু উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। রবিবার (২৪ অক্টোবর) সকাল ১১টায় বঙ্গভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সেতুটি উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী। আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধনের পর যান চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে সেতুটি।
দীর্ঘ নয় বছরের অপেক্ষার পালা শেষ করে সাধারণ জনগনের জন্য উন্মুক্ত হতে যাওয়া চার লেনের সেতুটির মাধ্যমে দক্ষিণাঞ্চলের সাথে সারাদেশের সড়ক যোগাযোগের নতুন মাত্রা যোগ হবে। বরিশাল থেকে কুয়াকাটা যাওয়া যাবে সড়ক পথে। পদ্মাসেতু উদ্বোধন হবার পর ঢাকা থেকে কুয়াকাটা যাবার সরাসরি সড়ক পথটিও হবে ফেরিবিহীন, ঝামেলামুক্ত। সেতুটি চালু হলে বরিশাল শহরসহ ওই অঞ্চলের যানবাহন পটুয়াখালী, কুয়াকাটা ও বরগুনায় যাওয়া যাবে ফেরি পারাপার ছাড়াই।
পদ্মা সেতু চালু হলে ঢাকা থেকে কুয়াকাটা যেতে সময় লাগবে ছয় থেকে সাত ঘণ্টা। এখন যেখানে ফেরি পার হয়ে যেতে সময় লাগে ১০ থেকে ১৫ ঘণ্টার মতো। চারলেনের সেতুটি খুলে দেওয়া হলে ফেরি পারাপারের ভোগান্তি যেমন কাটবে, বাঁচবে সময় ও অর্থ।
বরিশাল থেকে পটুয়াখালী যেতে পায়রা নদীর ওপর নির্মিত এই সেতু শুধু পর্যটন সম্ভাবনা নয়, ওই এলাকায় শিল্পায়নের পরিকল্পনা বাড়ানোর কথাও জানিয়েছে সরকার।
সেতুর উভয় পাড়ে সাত কিলোমিটারজুড়ে নির্মাণ করা হয়েছে সংযোগ সড়ক। সেতুটির মাঝখানে মাত্র একটি খুঁটি ব্যবহার করা হয়েছে, যাতে করে নদীর প্রবাহ ক্ষতিগ্রস্ত না হয়।
এ বিষয়ে পায়রা সেতুর প্রকল্প পরিচালক আবদুল হালিম গণমাধ্যমে জানান, ‘সেতুটি যান চলাচলের জন্য উন্মুক্ত হলে আর ভোগান্তি থাকবে না। তবে পায়রা সেতু চালুর পরও ঢাকা থেকে সরাসরি সড়কপথে কুয়াকাটা যেতে কিংবা পটুয়াখালী ও বরগুনার মানুষকে রাজধানী আসতে আরও একটু অপেক্ষা করতে হবে। তারা এখন তাকিয়ে থাকবেন পদ্মা সেতুর দিকে।‘
পদ্মা সেতু আগামী জুনের মধ্যে যান চলাচলের জন্য খুলে দেওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে আগেই জানিয়েছে সরকার।
উল্লেখ্য, ২০১২ সালের মে মাসে পায়রা সেতু নির্মাণ প্রকল্পের অনুমোদন দেয় সরকার। ২০১৩ সালের ১৯ মার্চ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পায়রা সেতুর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। নির্মাণে অর্থায়ন করেছে কুয়েত ফান্ড ফর আরব ইকোনমিক ডেভেলপমেন্ট ও ওপেক ফান্ড ফর ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট। নির্মাণকাজ করেছে চীনের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান লংজিয়ান রোড অ্যান্ড ব্রিজ কনস্ট্রাকশন।