পিকে হালদারসহ সব পলাতক ও সাজাপ্রাপ্ত আসামির বক্তব্য ও সাক্ষাৎকার প্রচার ও পুন:প্রচারে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছেন হাইকোর্ট। ৩০ ডিসেম্বর হাইকোর্টের বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি আহমেদ সোহেলের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এই আদেশ দেন।
টাকা পাচারের অভিযোগ নিয়ে বিদেশে পলাতক প্রশান্ত কুমার (পিকে হালদারের) গণমাধ্যমে সাক্ষাৎকার, সংবাদ প্রচার ও পুন:প্রচার বন্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশনা চেয়ে দুর্নীতি দমন কমিশন দুদক-এর করা আবেদন শুনানি নিয়ে এই আদেশ দেন আদালত ।
এর আগে ২৯ ডিসেম্বর মঙ্গলবার দুদকের আইনজীবী বিষয়টি আদালতের নজরে আনেন। আদালত এ বিষয়ে লিখিত আবেদন দিতে বলেন। সে অনুসারে ৩০ ডিসেম্বর লিখিতভাবে এ আবেদন করা হয়।
মঙ্গলবার শুনানিতে সিনিয়র আইনজীবী মো. খুরশীদ আলম খান জানান, ‘২৮ ডিসেম্বর রাতে একটি বেসরকারী টেলিভিশনে একজন পলাতক আসামির সাক্ষাৎকার প্রচার করা হয়। এছাড়া টেলিভিশনটির রাতের টকশোতেও ওই আসামিকে লাইভে আনা হয় , সাথে সংযুক্ত করা হয়েছিল খুরশীদ আলম খানকেও। আসামির কথা শুনে লাইভ থেকে বেরিয়ে যান খুরশীদ আলম খান । কারণ হিসেবে তিনি বলেন, পলাতক আসামির সঙ্গে টকশো করবেন না তিনি, প্রথমত পিকে হালদার পলাতক, আর দ্বিতীয় বিষয় হলো তার নামে আদালতে একটা সুয়োমোটো মামলা বিচারাধীন ।
বুধবার দুদকের করা আবেদনের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন সিনিয়র আইনজীবী মো. খুরশীদ আলম খান। অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ডেপুর্টি অ্যাটর্নি জেনারেল একেএম আমিন উদ্দিন মানিক ।
এ অবস্থায় তার প্রচারিত সাক্ষাৎকারে কী আছে তা খতিয়ে দেখা প্রয়োজন জানিয়ে, আদালত সেই ভিডিও সাক্ষাৎকার তলব করে করেন, দেখার পর প্রয়োজনীয় আদেশ দিতে পারেন আদালত । এর আগে বুধবার (৩০ ডিসেম্বর) সকালে পলাতক পিকে হালদার গণমাধ্যমে সাক্ষাৎকার, সংবাদ প্রচার ও পুনঃপ্রচার বন্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশনা চেয়ে সংশ্লিষ্ট আদালতে আবেদন করে দুদক ।
আবেদনে তথ্য মন্ত্রণালয় এবং বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) প্রতি এমন নির্দেশনা দেয়ার আর্জি জানানো হয়েছে। একইসঙ্গে, একটি বেসরকারি টিভি চ্যানেলে ২৮ ডিসেম্বর পিকে হালদারের প্রচারিত সাক্ষাৎকার এবং প্রচারিত টকশোর ভিডিও ক্লিপ আদালতে তলব চেয়ে আবেদন করা হয়েছে ।
পিকে হালদারের গ্রেফতারি পরোয়ানা ইন্টারপোলের কাছে পাঠানো এবং তার বিরুদ্ধে করা মামলার তদন্তের অগ্রগতি সম্পর্কে জানতে চেয়ে আগামী ৩ জানুয়ারি পরবর্তী আদেশের জন্য দিন ধার্য করেছেন হাইকোর্ট। এর মধ্যে গত ২০ ডিসেম্বর দুদক আইনজীবী জানিয়েছেন, গ্রেফতারি পরোয়ানা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে ইন্টারপোলের কাছে পাঠানো হয়েছে।
প্রশান্ত কুমার হালদার বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠানের দায়িত্বে থেকে অন্তত সাড়ে ৩ হাজার কোটি টাকা লোপাট করেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। পরে দুই বিনিয়োগকারীর করা আবেদনের শুনানি নিয়ে গত ১৯ জানুয়ারি এক আদেশে প্রশান্ত কুমার হালদারসহ সংশ্লিষ্ট ২০ জনের ব্যাংক হিসাব ও পাসপোর্ট জব্দের নির্দেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্ট।
