যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন তাঁর দেশ রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের বেপরোয়া হুমকির পরোয়া করে না। ইউক্রেনের চার অঞ্চল রুশ ফেডারেশনে যুক্ত হওয়ার পর এমন হুঁশিয়ারি দিলেন বাইডেন। ব্রিটিশ মংবাদমাধ্যম বিবিসি দিয়েছে এ খবর।
আজ শনিবার বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, নতুন যুক্ত অঞ্চলগুলো রক্ষায় পরমাণু অস্ত্র ব্যবহার করবেন বলে প্রচ্ছন্ন হুমকি দেন পুতিন। তিনি ঘোষণা দিয়ে বলেন, এসব অঞ্চল চিরদিন রাশিয়ার অংশ থাকবে।
ন্যাটো মহাসচিব জেনারেল জেনস স্টোলেনবার্গ নতুন অঞ্চল যুক্ত হওয়াকে অধিগ্রহণ উল্লেখ করে এটিকে যুদ্ধ শুরুর পরে সবচেয়ে গুরুতর ধাপ বলে মন্তব্য করেছেন।
রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন তাঁর বক্তব্যে বলেন, লুহানস্ক, দোনেৎস্ক, খেরসন ও জাপোরিঝঝিয়া তাঁদের জনগণ ও মাতৃভূমির সঙ্গে থাকার পক্ষে ভোট দিয়েছে। এ প্রসঙ্গে তিনি সম্প্রতি এসব এলাকায় অনুষ্ঠিত গণভোটের কথা উল্লেখ করেন। তবে ইউক্রেন ও পশ্চিমা বিশ্ব এই গণভোটকে ভাঁওতাবাজি বলেছে।
পুতিনের বক্তব্যের বেশিরভাগ জুড়েই ছিল পশ্চিমা বিশ্বকে লক্ষ্য করে। তিনি বলেন, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে জাপানের বিরুদ্ধে পরমাণু অস্ত্র ব্যবহার করে যুক্তরাষ্ট্র একটি নজির তৈরি করেছে।
এর আগে গত সপ্তাহে পুতিন বলেছেন রাশিয়ার বেশ কিছু ধ্বংসাত্মক অস্ত্র রয়েছে। এসব অস্ত্র রাশিয়া ব্যবহার করবে। তিনি আরও বলেন, ‘আমি ধাপ্পা দিচ্ছি না।’
এসব বক্তব্যের মধ্যে দিয়ে ক্রেমলিন স্পষ্ট করেছে যে নতুন যুক্ত অঞ্চলগুলোতে যেকোনো হামলা রাশিয়ার মাটিতে হামলা হিসেবে বিবেচনা করা হবে। পুতিনের এমন বক্তব্যে যুদ্ধ আরও উত্তেজনাকর হয়ে ওঠার ইঙ্গিত পাওয়া গেছে।
পুতিনের বক্তব্যকে বাইডেন বেপরোয়া ও হুমকি বলে চিহ্নিত করেছেন। বাইডেন আরো বলেন, ‘পুতিন আমাদের ভয় দেখাবেন না।’
হোয়াইট হাউসে বাইডেন বলেন, যুক্তরাষ্ট্র ও মিত্রদেশগুলো এসব হুমকির পরোয়া করছে না। এরপর বাইডেন ক্যামেরার সামনেই পুতিনের দিকে আঙুল তুলে বলেন, ন্যাটোর অন্তর্ভুক্ত প্রতি ইঞ্চি অঞ্চল রক্ষায় মিত্রদেশগুলোর সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র পুরোপুরি প্রস্তুত। এ প্রসঙ্গে বাইডেন পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞার বিষয়টি উল্লেখ করেন। পুতিনকে উদ্দেশ করে বাইডেন বলেন ‘আমি যা বলছি তা ভুল বুঝবেন না। বলছি প্রতি ইঞ্চি।’
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেছেন তাঁর দেশ দীর্ঘদিন ধরে ন্যাটো নিরাপত্তা জোটের ডি ফ্যাক্টো সদস্য ছিল। তিনি মস্কোর বিরুদ্ধে হত্যা, প্রতারণা, মিথ্যা ও দুর্ব্যবহারের মাধ্যমে সীমানা পুনর্নির্ধারণের অভিযোগ তোলেন।
ইউরোপীয় ইউনিয়ন কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ভন ডার লেন বলেছেন, পুতিনের অবৈধ অধিগ্রহণে কোনো কিছু বদলাবে না। রাশিয়ার দখলকৃত সব অঞ্চলকে তিনি ইউক্রেনের নিজস্ব ভূমি বলে উল্লেখ করেন।
এদিকে দক্ষিণ কোরিয়া রাশিয়ার এই অধিগ্রহণকে স্বীকৃতি দেবে না বলে জানিয়েছে। চার অঞ্চলকে রাশিয়ার ফেডারেশনে সংযুক্ত করায় জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে আনা নিন্দা প্রস্তাবে ভেটো দিয়েছে রাশিয়া। মস্কোর রাষ্ট্রদূত ভাসিলি নেবেনজিয়া অভিযোগ করে বলেছেন, জাতিসংঘের স্থায়ী সদস্যের বিরুদ্ধে নিন্দা প্রস্তাব আনা অপ্রত্যাশিত। ভোটদানে বিরত ছিল ভারত ও চীন।
