fbpx

পুরুষের তুলনায় অর্ধেকেরও কম সুবিধা পাচ্ছেন বাংলাদেশের নারীরা 

Pinterest LinkedIn Tumblr +
Advertisement

পুরুষের তুলনায় অর্থনৈতিক নানা কর্মকান্ডে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশের নারীরা সবচেয়ে বেশি পিছিয়ে আছে বলে বিশ্বব্যাংকের এক গবেষণায় উঠে এসেছে। সম্প্রতি প্রকাশিত বিশ্বব্যাংকের ‘উইমেন, বিজনেস অ্যান্ড দ্য ল ২০২১ ইনডেক্স’ শীর্ষক প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

বিশ্বব্যাংকের করা এই গবেষণাটি ১৯০ টি দেশের আটটি সূচকের আলোকে ৩৫ টি প্রশ্নের ভিত্তিতে করা হয়। যেখানে মোট স্কোর ধরা হয় ১০০।

গবেষণায় দেখা গেছে, এই ১০০ নম্বরের মধ্যে বাংলাদেশ পেয়েছে ৪৯ দশমিক ৪। অর্থাৎ পুরুষের তুলনায় নারীরা গড়ে অর্ধেকেরও কম সুবিধা পাচ্ছেন।

তবে দক্ষিণ এশিয়ায় সবচেয়ে ভালো অবস্থানে আছে নেপাল। ১০০ নম্বরের মধ্যে নেপাল ৮০ দশমিক ৬ নম্বর পেয়ে প্রথম অবস্থানে আছে। তালিকার দ্বিতীয় স্থানে আছে ভারত। তৃতীয় স্থানে ৭৩ দশমিক ৮ পয়েন্ট নিয়ে আছে মালদ্বীপ। এছাড়া, দক্ষিণ এশিয়ার অন্যান্য দেশগুলোর মধ্যে ভুটান ৭১ দশমিক ৯, শ্রীলঙ্কা ৬৫ দশমিক ৬ আর পাকিস্তান রয়েছে ৫৫ দশমিক ৬ পয়েন্টে। এই অঞ্চলে সবচেয়ে কম স্কোর ৩৮.৫ নিয়ে আছে আফগানিস্তান।

যে আট সূচকের ওপর ভিত্তি করে এই গবেষণা করা হয়েছে তা হলো, চলাচলের স্বাধীনতা, কর্মক্ষেত্রের সমতা, মজুরি, বিবাহ, পিতৃত্ব-মাতৃত্ব, উদ্যোগ, সম্পদ ও পেনশন। প্রতিটি সূচকের সর্বোচ্চ নম্বর ১০০ ধরে পরে তা গড় করা হয়েছে।

প্রতিবেদন বলছে, নারী-পুরুষ সমতার ক্ষেত্রে সূচকে শতভাগ পয়েন্ট অর্জন করেছে ১০টি দেশ। এই দেশগুলোতে অর্থনীতিতে নারীর অংশগ্রহণে কোনো বাধা নেই। দেশগুলো হলো বেলজিয়াম, কানাডা, ডেনমার্ক, আয়ারল্যান্ড, আইসল্যান্ড, লাটভিয়া, লুক্সেমবার্গ, ফ্রান্স, পর্তুগাল ও সুইডেন। আটটি সূচকেই ১০০ পয়েন্ট করে পেয়েছে দেশগুলো।

চলাচলের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের নারীরা শতভাগ স্বাধীন বলে দাবি করছে এই গবেষণা। তবে অন্যান্য খাত যেমন- মজুরি, কর্মকালীন মাতৃত্ব সুবিধা ও পেনশনে আমাদের দেশের নারীরা সবচেয়ে পিছিয়ে। আর কর্মকালীন মাতৃত্ব সুবিধার ক্ষেত্রে ১০০–তে বাংলাদেশের পয়েন্ট মাত্র ২০। মজুরি ও পেনশনের ক্ষেত্রে পয়েন্ট ২৫ করে। এছাড়া বিবাহে ৬০, উদ্যোগে ৭৫, সম্পদে আমাদের স্কোর মাত্র ৪০ পয়েন্ট।

বিশ্বব্যাপী করোনার প্রভাবে নারী-পুরুষ ব্যবধান বেড়ে যেতে পারে বলে শঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে। এছাড়া অর্থনৈতিক সম্ভাবনা কাজে লাগাতে নারীরা এখনও আইন ও নীতির বাধায় রয়েছেন। বৈশ্বিক পরিসরে নারীদের অর্থনীতিতে অংশগ্রহণের আইনি অধিকার চার ভাগের তিন ভাগ, অর্থাৎ ৭৫ শতাংশ।

এদিকে নাজুক অবস্থা মুসলিম দেশের নারীদের। সেখানে ৭৫ শতাংশই গড় পয়েন্ট অর্জন করতে পারেনি। ফলে মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশগুলোকে নারী-পুরুষের সমান সুযোগ অর্জনে যে দীর্ঘ পথ পাড়ি দিতে হবে, প্রতিবেদন সেটিই তুলে ধরেছে। তালিকার সবচেয়ে কম পয়েন্ট পেয়েছে ঘানা, ইয়েমেন, কুয়েত, সুদান, কাতার, ইরাক, ওমান, সিরিয়া ও আফগানিস্তান।

২০১৯ সালের সেপ্টেম্বর থেকে গত বছরের অক্টোবর পর্যন্ত সময়ের ভিত্তিতে ২০২১ সালের এই প্রতিবেদন করা হয়েছে। ১৯০টি দেশের মধ্যে ৫৬টি দেশই গড় পয়েন্ট পায়নি। করোনার এই সময়ে নারীর প্রতি সহিংসতা বেড়েছে। তবে করোনার পরেও ২৭টি দেশ নারী-পুরুষ সমতায় নানা সংস্কার কর্মসূচি হাতে নিয়েছে।

Advertisement
Share.

Leave A Reply