করোনা মহামারির কারণে প্রায় এক বছরের বেশি সময় ধরে বিশ্বের ১৬ কোটি ৮০ লাখের বেশি স্কুল বন্ধ আছে। একইসঙ্গে বিশ্বের প্রায় ২১ কোটি ৪০ লাখ বা প্রতি ৭ জনের মধ্যে ১ জন ব্যক্তিগত শিক্ষা গ্রহণের সুযোগ হারিয়েছে। জাতিসংঘের শিশু তহবিল (ইউনিসেফ) স্কুল বন্ধসংক্রান্ত প্রতিবেদন এমনটি দাবি করছে। জাতিসংঘের এই সংস্থাটি ৩ মার্চ নতুন এ তথ্য প্রকাশ করে।
তাই বিভিন্ন দেশের সরকারকে স্কুল খোলার তাগিদ দিয়ে নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সদর দপ্তরে ‘প্যান্ডেমিক ক্লাসরুম’ উদ্বোধন করেছে ইউনিসেফ।
ইউনিসেফের নতুন এ প্রতিবেদনে দেখা গেছে, গত বছরের মার্চ থেকে এ বছরের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বিশ্বের ১৪টি দেশের বেশির ভাগ স্কুল বন্ধ রয়েছে। যার দুই-তৃতীয়াংশ দক্ষিণ আমেরিকা ও ক্যারিবীয় অঞ্চলের। এসব দেশের প্রায় ৯ কোটি ৮০ লাখ স্কুলগামী শিশুর ওপর এর প্রভাব পড়েছে।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, স্কুল বন্ধের এই তালিকার প্রথম স্থানে আছে, পানামা। সেখানে সবচেয়ে বেশি দিন স্কুল বন্ধ রাখা হয়েছে। এরপর আছে এল সালভাদোর, বাংলাদেশ ও বলিভিয়া। তবে মার্চের ৩০ তারিখে বাংলাদেশের স্কুল–কলেজ খোলার কথা রয়েছে।
ইউনিসেফের নির্বাহী পরিচালক হেনরিয়েটা ফোর বলেছেন, ‘আমরা যখন কোভিড-১৯ মহামারির এক বছর পূর্তির দিকে এগোচ্ছি, তখন বিশ্বব্যাপী শিক্ষাক্ষেত্রে লকডাউন যে ভয়াবহ জরুরি অবস্থার সৃষ্টি করেছে, তা আমাদের আবারও মনে করিয়ে দেয়। যতই দিন যাচ্ছে, শিশুরা স্কুলে যাওয়ার সুযোগ না পেয়ে ততই পিছিয়ে পড়ছে। যেখানে সবচেয়ে প্রান্তিক অবস্থানে থাকা শিশুদের সবচেয়ে চড়া মূল্য দিতে হচ্ছে।’
ইউনিসেফ বাংলাদেশের প্রতিনিধি টোমো হোযুমি বলেছেন, ‘আমরা ৩০ মার্চ স্কুল পুনরায় চালু করার জন্য বাংলাদেশ সরকারের সাম্প্রতিক সিদ্ধান্তকে আন্তরিকভাবে স্বাগত জানাই। অন্যান্য উন্নয়ন অংশীদারদের সঙ্গে একত্রে ইউনিসেফ বিদ্যালয়গুলো নিরাপদে পুনরায় চালু করতে সহায়তা দিতে সরকারের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ ও নিবিড়ভাবে কাজ করে চলেছে।’
ইউনিসেফ মনে করছে, শিশুর পড়াশোনা ও মানসিক সুস্থতার ক্ষেত্রে স্কুল বন্ধ রাখার পরিণতি শিশুদের ভয়ংকর দিকে ঠেলে দিচ্ছে। যেসব শিশু ঝুঁকির মুখে আছে এবং যারা অনলাইনে ক্লাস করার সুযোগ পাচ্ছে না,তারা হতাশায় ভুগছে। এমনকি তারা আর কখনও ক্লাসরুমে ফিরতে না পারা এবং বাল্য বিবাহ বা শিশুশ্রমে সম্পৃক্ত হওয়ার ক্রমবর্ধমান ঝুঁকিতে রয়েছে।
ইউনেসকোর সর্বশেষ তথ্য অনুসারে, পুরোপুরি ও আংশিকভাবে স্কুল বন্ধ থাকার কারণে বিশ্বব্যাপী ৮৮ কোটি ৮০ লাখের বেশি শিশুর পড়াশোনা ধারাবাহিকভাবে বাধার মুখে পড়ছে।