fbpx

ফাঁস হলো ট্রাম্পের ফোনালাপ, নির্বাচনের ফলাফল বদলানোর চেষ্টা

Pinterest LinkedIn Tumblr +
Advertisement

যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাবশালী পত্রিকা ওয়াশিংটন পোস্টের এক প্রতিবেদনে ট্রাম্পের ফোন কলের একটি অডিও ফাঁস হয়েছে। যেখানে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প নির্বাচনের ফলাফল পাল্টে দেওয়ার জন্য জর্জিয়া অঙ্গরাজ্যের নির্বাচন কর্মকর্তাকে সরাসরি নির্দেশ দিয়েছেন। নির্দেশ না মানলে অনেক ঝুঁকির মধ্যে পড়বেন বলেও সেই কর্মকর্তাকে ফোনালাপে হুঁশিয়ারি দেন ট্রাম্প।

২ জানুয়ারির তাঁদের এই দীর্ঘ ফোনালাপের অডিও ‘দ্য ওয়াশিংটন পোস্ট’ রবিবার (৩ জানুয়ারি) প্রথম প্রকাশ করলে যুক্তরাষ্ট্র জুড়ে শুরু হয় তোলপাড়।

ট্রাম্পের ফোনালাপ থেকে জানা যায়, তিনি ব্র্যাড রাফেনসপারজারকে ১১ হাজারের বেশি ভোট কোনোভাবে খুঁজে বের করার জন্য বারবার বলছেন। আমেরিকার এবং জর্জিয়ার জনগণ যে ক্ষুব্ধ তা উল্লেখ করে ট্রাম্প বলেন, আবার গণনা করে ‘ভোট পাওয়া গেছে’ বলার মধ্যে কোনো ‘ভুল নেই’।

তিনি ফোনে বলছিলেন, ‘দেখ, আমি চাইছি যে কোনভাবে ১১ হাজার ৭৮০ ভোট খুঁজে বের করা হোক।’ এর ফলে, জো বাইডেনের চেয়ে এক ভোট বেশি হয়ে যাবে এবং জর্জিয়ার নির্বাচনে তিনি যে জয়লাভ করেছেন, তা প্রমাণিত হবে। এমনিতেই নির্বাচনে তিনি জয়লাভ করেছেন বলে ফোনালাপে উল্লেখ করেন।

সেক্রেটারি অব স্টেটকে ট্রাম্পের কথার প্রেক্ষিতে এসময় বলতে শোনা যায়, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ভুল তথ্যের ওপর ভিত্তি করে কথা বলছেন। রাজ্যের ভোট ঠিকই একাধিকবার গণনা করা হয়েছে। এখন ডোনাল্ড ট্রাম্পের কথায় নতুন ভোট খুঁজে পাওয়ার কাজ যে তিনি করবেন না, এমন কথা বিনয়ের সাথে বলেন ব্র্যাড রাফেনসপারজার।

ফাঁস হলো ট্রাম্পের ফোনালাপ, নির্বাচনের ফলাফল বদলানোর চেষ্টা

সেক্রেটারি অব স্টেট ব্র্যাড রাফেনসপারজার, ছবি: সংগৃহীত

ব্র্যাড রাফেনসপারজারের ওপর রিপাবলিকান পার্টির লোকজন অসন্তুষ্ট বলে ট্রাম্প উল্লেখ করেন তাঁর ফোনালাপে। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সাথে এমন ব্যবহার রিপাবলিকানরা নাকি মেনে নিতে পারছেন না। ট্রাম্প এসময় আরো ক্ষুব্ধ হয়ে বলেন, ৫ জানুয়ারি জর্জিয়ায় দুই সিনেট নির্বাচনেও এর প্রভাব পড়বে। এখন তাঁর কথামতো ব্র্যাড রাফেনসপারজার যদি সব ঠিক করে দেয় তাহলে রিপাবলিকান পার্টির নেতারা সেক্রেটারি অব স্টেটকে ‘খুবই শ্রদ্ধা’ করবেন বলে ট্রাম্প বলেন।

ফোনকলের এক পর্যায়ে ট্রাম্প রাফেনসপারজারকে একটি ‘শিশু’ এবং ‘অসৎ অথবা অযোগ্য’ বলে উল্লেখ করেন। একপর্যায়ে তিনি এও বলেন, ব্র্যাড রাফেনসপারজার খুব বড় ঝুঁকি নিচ্ছেন।

প্রেসিডেন্টের সরাসরি চাপ সত্ত্বেও রাজ্যের দুই রিপাবলিকান গভর্নর এবং সেক্রেটারি অব স্টেট নিজেদের নৈতিক অবস্থান থেকে সরে দাঁড়াননি। একই কাজ করেছেন পেনসিলভানিয়া, অ্যারিজোনাসহ বেশ কিছু রাজ্যের কর্মকর্তারা। রাজ্যপর্যায়ের এসব কর্মকর্তারা প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের চাপ, হুমকি ও প্রলোভনের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছেন।

সিএননসহ একাধিক সংবাদমাধ্যম ফোনালাপের বিষয়ে মন্তব্য চেয়ে হোয়াইট হাউসে যোগাযোগ করার চেষ্টা করে। এ সংক্রান্ত কোনো ই–মেইলের জবাবও দেয়া হয়নি হোয়াইট হাউস থেকে।

এদিকে, মার্কিন আইন বিশেষজ্ঞরা ফোনালাপে ভোটের ফল পাল্টে দিতে এভাবে চাপ দেওয়ার বিষয়কে অনৈতিক শুধু নয়, আইনবিরুদ্ধ বলেও মনে করেন।

সিনেটর ক্রুজসহ অন্যরা দাবি জানিয়েছেন, একটি কমিশন গঠন করে তদন্ত করা হোক যে, নির্বাচনে কোন জালিয়াতি হয়েছে কি না। সে পর্যন্ত ইলেক্টোরাল ভোটের ফলাফল স্থগিত থাকবে। যদি ভোটে অনিয়ম পাওয়া যায়, তাহলে রাজ্য আইনপ্রণেতাদের ইলেক্টোরাল ভোট নিয়ে সিদ্ধান্ত দেওয়ার দায়িত্ব প্রদান করার দাবি জানিয়েছেন তাঁরা।

এর প্রেক্ষিতে, রবিবার বিকেলে সিনেটে ডেমোক্র্যাট পার্টির নেতা চার্লস শুমার বলেছেন, সিনেটর টেড ক্রুজ এখন ভোট কারচুপি নিয়ে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের ব্যাপারে তদন্ত করতে ইচ্ছুক।

Advertisement
Share.

Leave A Reply