নানা জল্পনা কল্পনা শেষে অবশেষে প্রতিষ্ঠানের নাম বদলেই ফেললো ফেসবুক। এখন থেকে এই সোশ্যাল মিডিয়ার মূল কোম্পানি ‘মেটা’ নামে পরিচিত হবে। আর এই মেটার অধীনেই পরিচালিত হবে ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম ও হোয়াটসঅ্যাপ। এদের নাম একই থাকবে বলে জানিয়েছে ফেসবুকের প্রতিষ্ঠাতা মার্ক জাকারবার্গ।
বৃহস্পতিবার এক অনুষ্ঠানে এই ঘোষণা দেন তিনি। জাকারবার্গ বলেন, ‘আমি আমাদের নতুন অধ্যায়ের পরিচিতি নিয়ে অনেক চিন্তাভাবনা করেছি। আমরা এখন এই প্রতিষ্ঠানকে বিশাল ভার্চুয়াল প্রতিষ্ঠান হিসেবে দেখছি।’
২০০৪ সালে জাকারবার্গ ‘ফেসবুক ইনকরপোরেশন’ প্রতিষ্ঠা করেন। এই কোম্পানিই এখন ‘মেটা ইনকরপোরেশন’ নামে পরিচিতি পাবে। ২০১২ সালে ফেসবুক ইনস্টাগ্রাম অ্যাপ কিনে নেয়। পরে ২০১৪ সালে তারা হোয়াটসঅ্যাপ কিনে নেয়।
ব্যবহারকারীদের নিরাপত্তায় ঘাটতিসহ নানা বিষয়ে সমালোচনার শিকার হয়েছে ফেসবুক। বিশেষত সাবেক কয়েকজন কর্মীর মাধ্যমে অভ্যন্তরীণ নানা তথ্য–উপাত্ত ফাঁস হওয়ায় এ টেক জায়ান্ট সমালোচনার মুখে পড়ে। এজন্যই নতুন করে ব্র্যান্ডিংয়ের জন্য নাম পরিবর্তনের কথা জানিয়েছে ফেসবুক।
অনলাইনে অনুষ্ঠিত প্রতিষ্ঠানটির বার্ষিক সম্মেলনে জাকারবার্গ বলেন, ‘নতুন নামটি তাদের মেটাভার্স তৈরির লক্ষ্যের প্রতিফলন, জনপ্রিয় মূল সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম সেবার নয়। এখন আমাদের ব্র্যান্ড কেবল একটি পণ্যের সঙ্গে এমনভাবে সম্পৃক্ত যে তা হয়তো আমরা এখন যা করছি, তার পুরোটাই উপস্থাপন করতে পারছে না, ভবিষ্যতের কথা বাদই দিলাম।’
মেটাভার্সে ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপ, ইনস্টাগ্রামের সেবা পাওয়া যাবে ভার্চুয়াল জগতে। যেখানে ব্যবহারকারীরা একে অপরের সাথে যুক্ত হয়ে বাস্তব জগতের মতোই একে অপরের সঙ্গে কথা বলতে পারবেন। শুধু তাই নয়, তারা টুকটাক কাজও এই ভার্চুয়াল জগতে সেরে নিতে পারবেন।
মেটাভার্সকে ভার্চুয়াল আর বাস্তব জগতের এক মিশেল বলে অভিহত করা যেতে পারে। যার বাস্তবায়ন সম্ভব হবে অগমেন্টেড ও ভার্চুয়াল রিয়েলিটি প্রযুক্তির সাহায্যেই। এ কাজের জন্য নতুন ১০ হাজার কর্মী নিয়োগের ঘোষণা দিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি, যাদের কাজই হবে মেটাভার্স তৈরি করা।
এর আগে মার্ক জাকারবার্গ ও তাঁর স্ত্রী প্রিসিলা চ্যানের দাতব্য সংস্থা চ্যান জাকারবার্গ ইনিশিয়েটিভের উদ্যোগে ‘মেটা’ নামের একটি প্রতিষ্ঠান আগে থেকেই বিজ্ঞান গবেষণাপত্র নিয়ে কাজ শুরু করে। যার ওয়েবসাইটের নাম ছিল মেটা ডট অর্গ।
এর আগেও মেটা ডটকমে ঢুকলে তা সরাসরি মেটা ডট অর্গে নিয়ে যেতো। আর এখন এই নাম লিখে সার্চ দিলে নতুন একটি ওয়েবপেজ দেখায়। এখন পর্যন্ত মেটা ডট অর্গ ওয়েবসাইটটিও সচল আছে।
ফেসবুক প্রতিষ্ঠাতা জাকারবার্গ বলেছেন, গ্রিক শব্দ ‘মেটা’র ইংরেজি অর্থ ‘বিয়ন্ড’। এই শব্দের সঙ্গে তাঁদের লক্ষ্যেরও মিল রয়েছে। অর্থাৎ সবকিছুর পরও নতুন কিছু তৈরির সুযোগ থাকল তাঁদের। ভবিষ্যতে মেটার অন্যান্য সেবার উল্লেখের সময় আর মানুষকে ‘ফেসবুক’ ব্যবহার করতে হবে না। যেমন ইনস্টাগ্রাম বা হোয়াটসঅ্যাপের মূল প্রতিষ্ঠান এখন ফেসবুক নয়, বরং মেটা।