fbpx

‘বই এবং ব্যাঙের মধ্যে একটা চমৎকার মিল আছে’

Pinterest LinkedIn Tumblr +
Advertisement

১৯৪৫ সালের ২১শে জুন (৭ই আষাঢ় ১৩৫২ বঙ্গাব্দ) নেত্রকোনার বারহাট্টায় জন্মগ্রহণ করেন কবি নির্মলেন্দু গুণ। কবিতার পাশাপাশি চিত্রশিল্প, গদ্য এবং ভ্রমণকাহিনীতেও তিনি স্বকীয় অবদান রেখেছেন। ১৯৭০ সালে প্রথম কাব্যগ্রন্থ “প্রেমাংশুর রক্ত চাই” প্রকাশিত হবার পর থেকেই তিনি জনপ্রিয়তা অর্জন করেন। তাঁর কবিতায় প্রেম ও নারীর পাশাপাশি স্বৈরাচার বিরোধিতা ও শ্রেণীসংগ্রামের বার্তা ওঠে এসেছে বার বার। তাঁর বহুল আবৃত্ত কবিতা সমূহের মধ্যে হুলিয়া, মানুষ, আফ্রিকার প্রেমের কবিতা, একটি অসমাপ্ত কবিতা। এই কবি তার প্রকাশিত বই নিয়ে একটি লেখা প্রকাশ করেছেন। লেখাটি বিবিএসবাংলার পাঠকদের জন্য।

‘আমার ১১০ টার মতো বই আছে বলে আমার প্রকাশকদের কাছে শুনেছি। এর খুব সামান্যই আমার সংগ্রহে আছে।
বই এবং ব্যাঙের মধ্যে একটা চমৎকার মিল আছে।

কোনোটাকেই পাল্লায় তুলে পরিমাপ করা যায় না। না ওজনে, না সংখ্যায়। একটা পাল্লায় তুললে আরেকটা পাল্লা থেকে লাফিয়ে পড়ে।

উদ্যোগ নিয়েও আমি আমার সবগুলো বই একত্রিত করে দেখতে পারিনি।

আরবের শেখরা তাঁদের সন্তান শতককে কীভাবে একসঙ্গে দেখেন, আদৌ দেখতে পান কি-না, জানি না। আমি আদার ব্যাপারী জাহাজের খবর নিয়ে লাভ কী?

শেষে বিকল্প পথে আশা পূরণের জন্য রচনাবলি প্রকাশের পথ ধরি। দশ খন্ড ( প্রতি খন্ড ৫৬০ পৃ.) প্রকাশের পরও বেশকিছু অগ্রন্থিত লেখা এবং গ্রন্থ রচনাবলির বাইরে পাওয়া যেতে থাকলো। আমি বিরক্ত বোধ করলাম।

একবার শুরু যখন করেছি, শেষ করতেই হবে। আমার ভাগ্য ভালো যে আমার প্রকাশকও এই নীতিতে বিশ্বাসী, মানে আস্তিক। আমার বই নিয়ে তাঁর আলাদা অনুভূতি। আমার বই বিক্রি না হলেও তার কোনোই আপত্তি নেই।

আজ না হোক কাল হবে, কাল না হোক পরশু হবে, পরশু না হোক তরশু হবে।

তরুশর পর কী? তা আমিও জানি না। আমার প্রকাশকও জানেন না। “নিশিদিন ভরসা রাখিস, ওরে মন হবেই হবে।” রবীন্দ্রনাথের এই গানটাই তার জাতীয় সঙ্গীত।

নিজের বলেই শতাধিক বইয়ের নাম স্মরণে রাখাটা কোনো ভদ্রলোকের কাজ বলে মনে করি না।

এবারের বই মেলায় আমার রচনাবলির আরও দুটি খন্ড প্রকাশের পথে রয়েছে। রচনাবলি– আহ কী চমৎকার একটা ব্যবস্থা আমার পূর্বজ কবি সাহিত্যিকরা সব করে রেখে গেছেন। এখন আমাহেন সামান্যরাও রচনাবলি প্রকাশের সেই সুযোগ গ্রহণ করতে পারছে। নিজের রচনাকে একত্রে দেখতে পাওয়ার এ-এক চমৎকার ব্যবস্থা। এর চেয়ে ভালো ব্যবস্থা আর হতেই পারে না। ধন্যবাদ রচনাবলি। তুমি বেঁচে থাকো। তুমি বিক্রি না হও।
এবার কাজের কথায় আসি। তোমার পাঠাগারে আমার নামে একটি কর্ণার যদি করতেই চাও, আমি তো খুশিই হবো।

কিন্তু তুমি কৈয়ের তেল দিয়ে কৈ ভাজতে চাও যদি– তবে তা হবার নয়। হওয়া উচিতই নয়।

একটা মধ্যপন্থা অবলম্বন করা যেতে পারে, যাতে তোমার এবং আমার — উভয়েরই সম্মান বাঁচে। তুমি আমার রচনাবলির ৫ খন্ড কিনো, আমি ৫ খন্ড তোমাকে উপহার দিই। ব্যাস, কবি নির্মলেন্দু গুণ কর্নার কমপ্লিট। রাজী থাকলে যোগাযোগ করো, না থাকলে সময় নষ্ট করো না। সময় তো কিনতে পাওয়া যায় না। না আগরতলায়, না ঢাকায়।’

Advertisement
Share.

Leave A Reply